ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সনদ পাবেন কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৬, ১৭ জুন ২০২১  
ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সনদ পাবেন কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা

কওমী মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালনার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড। এ লক্ষ্যে এক্সামিনেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নামে একটি শক্তিশালী অটোমেশন সফটওয়্যার তৈরি প্রক্রিয়াধীন আছে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় যাচ্ছে কওমী মাদ্রাসার সনদ দেওয়াসহ অন্যান্য কার্যক্রম।

জানা গেছে, অটোমেশন সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার ফরম পূরণ, প্রবেশপত্র ও ফলাফল সংগ্রহ এবং সনদপত্র সংক্রান্ত সকল কাজ অনলাইনেই করতে পারবে। পরীক্ষার ফলাফলও অনলাইনে প্রকাশ করা হবে। ফলাফল প্রকাশের পরপরই পরীক্ষার্থীরা তাদের সাময়িক সনদ, মার্ক সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট অনলাইনে সংগ্রহ করতে পারবে।

এ সফটওয়্যারে প্রত্যেক পরীক্ষার্থী, মাদরাসা ও বোর্ডের জন্য আলাদা আলাদা প্রোফাইল থাকবে। প্রয়োজনবোধে বিভিন্ন তথ্য হালনাগাদ করা যাবে। অটো রোলশিট জেনারেটের মাধ্যমে পরীক্ষার ফলাফল ও পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় পরিসংখ্যান প্রস্তুতসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজেই করা যাবে।

গত বুধবার সফটওয়্যার ও সনদ বিষয়ক সাব-কমিটির সভা হয়েছে। এতে ২০২২ সাল থেকে মূল সনদ ও নম্বরপত্রের জন্য কোন ফি গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয় কওমী মাদ্রাসার শিক্ষাবোর্ড আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। তবে সাময়িক সনদের ফি ২০০ টাকা, নম্বরপত্রের ফি হবে ১০০ টাকা। সাময়িক সনদ বা নম্বরপত্র হারিয়ে গেলে ডুপ্লিকেট সাময়িক সনদ ও নম্বরপত্রের ফিও অনুরূপ হবে। মূল সনদ বা নম্বরপত্র হারিয়ে গেলে পুনঃ সনদের ফি হবে ২০০ টাকা, প্রতি ভাষার নম্বরপত্রের ফি হবে ১০০ টাকা।

আল হাইআতুল উলইয়ার কর্মকর্তারা বলছেন,  ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দাওরায়ে হাদীস (তাকমীল) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের মূল সনদ ও নম্বরপত্র বোর্ডে প্রেরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। প্রত্যেক ছাত্রের নাম, পিতার নাম, মায়ের নাম এবং সকল মাদরাসার নাম বাংলা, আরবি ও ইংরেজি শুদ্ধ বানানে সংগ্রহ করা দুরূহ হয়। যদি সংগ্রহ করা যায়, তবু এ বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদের তথ্য কম্পিউটারে তোলা বা হাতে লেখার জন্য অনেক জনবল লাগবে এবং প্রচুর পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় হবে।

এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের মূল সনদ পরীক্ষার্থীগণ স্বয়ং উপস্থিত হয়ে নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরণপূর্বক আল-হাইআতুল উলইয়ার কার্যালয় থেকে সনদ ও নম্বরপত্র সংগ্রহ করতে হবে।  অথবা প্রতি সনদপ্রার্থীর জন্য নির্ধারিত আবেদন ফরম পৃথক পৃথকভাবে পূরণ করে মাদরাসার প্যাডে কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর ও সত্যায়নসহ আল-হাইআতুল উলইয়ার কার্যালয়ে জমা দিলে, সেখান থেকে সনদ ও নম্বরপত্র প্রস্তুত করে মাদরাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। অথবা পরীক্ষার্থীগণ নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরণ করে আল-হাইআতুল উলইয়ার ই-মেইলে প্রেরণ করবে। আল-হাইআতুল উলইয়া সনদ ও নম্বরপত্র প্রস্তুত করে আবেদনকারীকে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে সনদ ও নম্বরপত্র সংগ্রহ করার কথা জানাবে।

শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত আবেদন ফরম তৈরি করতে হবে এবং অনলাইন থেকে ডাউনলোড করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। আবেদন ফরমে জন্মনিবন্ধন নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরের ঘর থাকবে। এবং প্রস্তুতকৃত মূল সনদ ও নম্বরপত্রে এই নম্বর উল্লিখিত হবে।

প্রেসে ছাপানো কাগজে মূল সনদ ও নম্বরপত্র প্রিন্ট করার পরিবর্তে আল-হাইআতুল উলইয়ার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উন্নত ছাপার মেশিনে ডিজাইনসহ সনদ ও নম্বরপত্র ছাপানো যায় কিনা, এবং এর জন্য কি ধরনের মেশিন, কতটুকু স্থান, কি পরিমাণ জনবল এবং অর্থ লাগতে পারে, কাগজের নমুনা ও ডিজাইনসহ আগামী ৫ জুলাইয়ের মধ্যে অফিস সম্পাদককে একটি প্রস্তাবনা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের যোগাযোগ কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, সনদ ডিজিটালাইজড করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এগুলোর জন্য কিছু করণীয় আছে। সেগুলো দ্রুতই শেষ করে শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম অনলাইন প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা হবে।

বোর্ডের সদস্য মুফতি নুরুল আমিন বলেন, এটা কাজের অগ্রগতির অংশ।  সংশ্লিষ্টদের সব নির্দেশনা দেওয়া আছে। সে অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

ঢাকা/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়