ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

৭ দফা দাবিতে ২য় দিনের মতো আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৯, ২৮ অক্টোবর ২০২১  
৭ দফা দাবিতে ২য় দিনের মতো আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

আন্দোলনে বশেমুরবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীরা

সেমিস্টার, হল ও পরিবহন ফি কমানো এবং বিভাগ উন্নয়ন ফি বাতিলসহ ৭ দফা দাবিতে ২য় দিনের মত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনিক ও একাডমিক ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল থেকে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে সেখানে অবস্থান করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। দাবি আদায়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলও করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনাসমূহের মধ্যে রয়েছে বেতন ৬০০ টাকা, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতি ফি ২০ টাকা, ছাত্র কল্যাণ ফি ৫০ টাকা, আইডি কার্ড ৫০ টাকা, চিকিৎসা ফি ৫০ টাকা, পরিবহন ফি ৩০০ টাকা, রোভার স্কাউট ২০ টাকা, বিএনসিসি ২০ টাকা, সিলেবাস ৫০ টাকা, হল বিষয়ক সংস্থাপন ফি ৭৫ টাকা, সিট ভাড়া ৭৫ টাকা, পরীক্ষা বিষয়ক ফি প্রতি ক্রেডিট ৫০ টাকা ও প্রবেশপত্র ৫ টাকা করা এবং কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ফি, স্টুডেন্ট গাইড ও কাউন্সিলিং ফি, বিভাগ উন্নয়ন ফি এবং পরীক্ষার কেন্দ্র ফি বাতিল করা।

এদিকে, সম্প্রতি বিভিন্ন ফি সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে যেখানে বেতন ১২০০ টাকা, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতি ফি ২০০ টাকা, ছাত্র কল্যাণ ফি ১৫০ টাকা, আইডি কার্ড ৪০০ টাকা, চিকিৎসা ফি ২০০ টাকা, পরিবহন ফি ৬০০ টাকা, রোভার স্কাউট ৫০ টাকা, বিএনসিসি ৫০ টাকা, সিলেবাস ১৫০ টাকা, পরীক্ষা বিষয়ক ফি প্রতি ক্রেডিট ১০০ টাকা, পরীক্ষার কেন্দ্র ফি ২০০ টাকা, প্রবেশপত্র ২৫ টাকা, হল বিষয়ক সংস্থাপন ফি ১৫০ টাকা, সিট ভাড়া ১৫০ টাকা, এবং কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ফি ২০০ টাকা, স্টুডেন্ট গাইড ও কাউন্সিলিং ফি ২০০ টাকা নির্ধারিত করা হয়েছিলো।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তি গতকাল বুধবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে স্থগিত করেছে। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তি বলা হয় পরীক্ষার কোর্স রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ সংক্রান্ত এবং ভর্তি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিদ্বয়ের কাযর্ক্রম অনিবার্য কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পযর্ন্ত স্থাগিত করা হলো।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল রাজু জানান, অগণিত ফি রয়েছে যা শিক্ষাকে পণ্য বানিয়ে ফেলেছে, সেসব বাতিল করতে হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবিসহ একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের অবজ্ঞা করে কর্তৃপক্ষ তার পরের দিনই বর্ধিত ফিসহ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত, যতদিন শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরি না হবে ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.রাজিউর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার যে কোনো সময় উপাচার্য ড. এ কিউ এম মাহবুব ফি সংক্রান্ত বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কিউ এম মাহবুব জানান, করোনাকালের পরিবহন ফি এবং হল ফি সম্পূর্ণ মওকুফ করা হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু ফি কমানো হয়েছে। এরপরও শিক্ষার্থীদের কোনো দাবি থাকলে আমি সেগুলোও শুনবো। ছাত্ররা ব্যবহার করেনি এমন ফি নেওয়া হবে না। তাদের দাবি থাকলে আমাকে জানাবে এবং আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান করা হবে।

প্রসঙ্গত, সাবেক উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিন পদত্যাগের পূর্বে শিক্ষার্থীদের ১৪ দফা দাবি মেনে নিয়েছিলেন। সেই দাবিগুলোর মধ্যে বর্ধিত ফি কমানোর কথা থাকলেও এখনো কমেনি। করোনা পরবর্তী সময়ে বর্ধিত ফি কমানোর জন্যে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি জমা দিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মঙ্গলবার নতুনভাবে নির্ধারিত ফি সমূহ প্রকাশ করা হয়।

বাদল/বুলাকী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়