ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘পদ্মা সেতু নিয়ে যেমন ষড়যন্ত্র হয়েছে, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়েও হচ্ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৩, ২৯ মার্চ ২০২৩   আপডেট: ১৭:৩৪, ২৯ মার্চ ২০২৩
‘পদ্মা সেতু নিয়ে যেমন ষড়যন্ত্র হয়েছে, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়েও হচ্ছে’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, পদ্মা সেতু নিয়ে যেমন ষড়যন্ত্র হয়েছে, তেমনি নতুন শিক্ষাক্রম নিয়েও অনেক বাঁধা তৈরি হচ্ছে। শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ আমাদের বেশ কয়েকজনকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন— চামড়া মোটা করতে হবে, পিঠে কুলা বাঁধতে হবে। কিন্তু আমরা দমে যাবার পাত্র নই।

বুধবার (২৯ মার্চ) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষাক্রম বিস্তরণ ও দেশব্যাপী প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

জাতীয় শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের বিরোধিতার বিষয় উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কারণে আর ধর্মের অপব্যবহারের মাধ্যমে মগজ ধোলাই অব্যাহত রাখতেই নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিরোধিতা করা হচ্ছে। নির্বাচনের বছর, রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে এসব করা হচ্ছে। আর আরেকটি পক্ষ রয়েছে, যারা ধর্মটাকে অপব্যবহার করে সংকীর্ণ রাজনৈতিক ফয়দা হাসিলের জন্য বিরোধিতা করছে।

প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবার জন্য, আর যে স্বপ্ন নিয়ে এত ত্যাগের বিনিময়ে দেশটি তৈরি হয়েছিল; সেই স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছতে যা কিছু এখন করণীয়, তা আমাদের করতেই হবে। এটা আমাদের কর্তব্য, দায়িত্ব। এটা আমাদের পালন করতেই হবে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটি তো নির্বাচনের বছর, রাজনৈতিক বিরোধিতা তো আছেই। সব দেশেই থাকে, আমাদের দেশেও আছে। আমাদের দেশের ধরণটা হয়ত ভিন্ন, টক্সিট। এখানে (বাংলাদেশে) বিরোধিতা করলে একটি পক্ষ আছে যারা আমাদের পক্ষটাকে নিশ্চিহ্নই করে দিতে চায়। গ্রেনেড মেরে, বোমা মেরে গুলি করে, নানান পদ্ধতিতে। নির্বাচন সামনে তারা খুব সক্রিয়।

‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে খুব বেশি ইস্যু-টিস্যু পাওয়া যাচ্ছে না, কাজেই শিক্ষাক্রম ও বইয়ের ওপর বিরোধিতা করার একটা প্রচেষ্টা করা হয়েছে। যদি শিক্ষার্থীরা ভাবতে শিখে যায়, আমাদের শিক্ষার্থীরা ভালো-মন্দ সাদা-কালোর তফাৎ করতে শিখে যায়, শিক্ষার্থীরা যদি সূক্ষ্ম চিন্তা করতে শেখে তাহলে তাদের মগজ ধোলাই আর করা যাবে না। এই চক্রের মূল কাজ হলো মগজ ধোলাই। সেটি করা যাবে না সেজন্য তাদের খুব আপত্তি।’

কোচিং ও নোট-গাইডের কারণে অনেকে বিরোধিতা করছেন উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোচিংয়ের সব কিছু খারাপ তা তো নয়, কোচিং কথাটাও খারাপ নয়, বাণিজ্য কথাটাও খারাপ নয়। কিন্তু যারা শ্রেণিকক্ষে পাঠদান না করে বাধ্য করেন শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ে যেতে, সেখান থেকে রোজগারটা করেন অতিরিক্ত। সেখানে সমস্যা। এই কাজ যারা করেন শিক্ষার্থীদের কোচিং করান তাদের একটি মহা ভয়, ভয়টি অমূলক নয়। কারণ এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হয়ে গেলে কোচিং দরকার হবে না। আরেকটি পক্ষ আছে নোটবই-গাইড বই, তাদেরও ভয় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হয়ে গেলে তো নোটবই-গাইড বই দরকার হবে না। তাদের ভয়টিও অমূলক নয়, এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হলে নোটবই-গাইড বই প্রয়োজন হবে না।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আরেকটি শ্রেণি আছে, সমাজে যাদের অংশ বিশাল বড়। তারা স্ট্যাটাসকো পছন্দ করেন, অর্থাৎ যা আছি তাই, আমি ছা-পোষা মানুষ, এর মধ্যেই থাকি কীসের আবার পরিবর্তন। আমরা পরিবর্তন চাই-টাই না। আবার কিছু আছে আমার ছেলেটা পাস করে যাক তারপর পরিবর্তন হোক। নতুন কিছুর দিকে এক ধরনের সংশয়, সন্দেহ কাজ করে। কিন্তু যতই বিরোধিতা, ষড়যন্ত্রই, প্রতিবন্ধকতাই থাকুক- নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবাল, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলাইমান খান, ইউনিসেফের চিফ অব এডুকেশন দীপা শংকর।

ইয়ামিন/এনএইচ  

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়