আগুনমুখো কিস (ভিডিও)
নাবীল অনুসূর্য || রাইজিংবিডি.কম
ব্যান্ডদল কিসের চার সদস্য
নাবীল অনুসূর্য : সত্তরের দশকের আমেরিকান হার্ড রক ব্যান্ড কিস। দ্রুত লয়ের গানের পাশাপাশি তাদের খ্যাতির অন্যতম কারণ তাদের পাগলাটে আর অদ্ভুতুড়ে স্টেজ অ্যাপিয়ারেন্স ও স্টেজ পারফর্মেন্স।
১৯৭৩ সালে আমেরিকার নিউ ইয়র্কে পল স্ট্যানলি এবং জিন সিমন্সের হাত ধরে জন্ম হয় কিস ব্যান্ডটির। তারা দুজন এখনও কিস-এ আছেন। তবে কিস-এর সোনালি সময়ের অন্য দুই সদস্য- এইস ফ্রেহলি এবং পিটার ক্রিস আশির দশকের শুরুতেই ব্যান্ড ছাড়েন। ততদিনে অবশ্য কিস ভীষণ জনপ্রিয়। বিশেষত তাদের মেকআপ-গেটআপ আর স্টেজ পারফর্মেন্স তাদের নজরে আনতে রীতিমতো বাধ্য করে।
কিস ব্যান্ডটির সদস্যরা স্টেজে উঠতেন মুখে সাদাকালো রং মাখিয়ে। একেক জন সাজতেন জনপ্রিয় একেকটা কমিক চরিত্রের অনুকরণে। গায়ে চড়াতেন চরিত্রগুলোর অদ্ভুতুড়ে পোশাক। স্ট্যানলির মধ্যে রোম্যান্টিক ইমেজ ছিল। আর তাই সে সাজত স্টারচাইল্ড। হরর মুভির ভক্ত সিমন্স সাজতেন ডেমন। ফ্রেহলির পছন্দ ছিল সায়েন্স ফিকশন। আর তাই তিনি সাজতেন স্পেসম্যান। ব্রুকলিনে ক্রিসের ছোটবেলাটা ভীষণই কষ্টে কেটেছিল। আর তাই তিনি সাজতেন ক্যাটম্যান, যেন তারও নয়টা প্রাণভোমরা আছে।
তবে তারা আলোচনায় আসেন মূলত স্টেজ পারফর্মেন্সে অদ্ভুতুড়ে সব কাজ করে। তাদের স্টেজ পারফর্মেন্সের নিয়মিত অনুষঙ্গের মধ্যে ছিল- ফায়ারব্রিদিং, ব্লাড স্পিটিং, স্মোকিং গিটার্স, শুটিং রকেটস, লেভিটেটিং ড্রাম কিটস এবং পাইরোটেকনিকস।
এই অদ্ভুত স্টেজ পারফর্মেন্সগুলোর মধ্যে ফায়ারব্রিদিং করতেন জিন সিমন্স। আর তা করতে গিয়ে বেশ কয়েক বারই নিজের চুল পুড়িয়েছেন তিনি। এমনকি চুল পুড়িয়েছিলেন প্রথমবার ফায়ারব্রিদিং করতে গিয়েই।
সেটা ১৯৭৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর। কনসার্টে ভেন্যু নিউ ইয়র্কের একাডেমি অফ মিউজিক। সেটি ছিল নিউ ইয়ার উদযাপনের কনসার্ট। কাজেই বেশ জাঁকজমকপূর্ণ ছিল। রীতিমতো লাস ভেগাস মার্কা লাইটিং করা হয়েছিল।
স্টেজে পারফর্ম করতে করতে জিন সিমন্স হঠাৎ হাতে মশাল তুলে নিলেন। মুখভর্তি কেরোসিন। প্রথম বার ফায়ারব্রিদিং করতেই মাথায় চূড়ো করে বাঁধা চুলে আগুন লেগে গেল।
তখনও সিমন্স টের পাননি। আরও একবার ফায়ারব্রিদিং করলেন। কিন্তু তারপরই টের পেয়ে হাত থেকে মশাল ফেলে দিলেন। নিজেও পড়ে গেলেন।
উপস্থিত লোকজন অবশ্য তখনও বুঝতে পারেনি কী হচ্ছে স্টেজে। পুরো ব্যাপারটাই সবার কাছে একেবারেই নতুন। কাজেই ফায়ারব্রিদিংটুকুই যে পারফর্মেন্স, চুলে আগুন লেগে যাওয়াটা যে দুর্ঘটনা, সেটা বুঝে উঠতে সবারই কিছুটা সময় লাগল। প্রথমে অনেকেই ভাবছিল, চুলে আগুন লাগাটাও বুঝি সাজানো!
সহকারীদের একজন অবশ্য প্রস্তুত ছিলেন, যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে। অবস্থা বুঝে তিনি ভেজা তোয়ালে নিয়ে দৌড়ে আসলেন। আগুন নেভানো হল। কিছু চুল হারালেও, সিমন্স কনসার্ট শেষ করেই ফিরলেন।
চুল পুড়ে ফায়ারব্রিদিংয়ের শুরু হলেও, কিস-এর হয়ে এরপরও সিমন্স নিয়মিতই ফায়ারব্রিদিং করেছেন। বেশ কয়েকবার চুলও পুড়িয়েছেন। ১৯৯৯ সালে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, এ স্ট্যান্ট করতে গিয়ে সর্বমোট ৬-৭ বার চুল পুড়িয়েছেন তিনি।
দেখুন : কিস ব্যান্ডের স্টেজ শো
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ মার্চ ২০১৫/নাবীল/রাশেদ শাওন
রাইজিংবিডি.কম