ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

যেভাবে হয়েছিল ওমর সানী-মৌসুমীর প্রেম

জ্যেষ্ঠ বিনোদন প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২৩, ১৪ জুন ২০২২   আপডেট: ১৮:৩৭, ১৪ জুন ২০২২
যেভাবে হয়েছিল ওমর সানী-মৌসুমীর প্রেম

ওমর সানী-মৌসুমী-জায়েদ খানকে ঘিরে সম্প্রতি নানান বিতর্কিত কাণ্ডে প্রশ্ন উঠেছে- তবে কি সানী-মৌসুমীর সুখের ঘরে দুখের আগুন লেগেছে? এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো সময়ই বলে দেবে। তবে এ কথা সত্য বর্তমানে এই তারকা দম্পতির সম্পর্ক তেমন ভালো যাচ্ছে না। যদিও ওমর সানী বিষয়টিকে ‘স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্য’ বলছেন। অর্থাৎ এ ধরনের ঘটনা প্রতিটি সংসারেই কম-বেশি ঘটে। কিন্তু ভক্তদের কৌতূহলের শেষ নেই। তারা জানতে চান- হঠাৎ কী হলো যে কারণে ঘটনার এতো ঘনঘটা?

ওমর সানী মৌসুমী ভালোবেসে ঘর বেঁধেছেন। এই সুখের ঘর প্রায় ২৭ বছরের পুরনো। রিল লাইফে এই জুটি যেমন প্রশংসিত, তেমনি প্রশংসিত রিয়েল লাইফেও। তারা দুজন বিভিন্ন সময় তাদের প্রেমকাহিনির বর্ণনা দিয়েছেন সংবাদমাধ্যমে।   

ঢাকাই চলচ্চিত্রে মৌসুমীর আগে অভিষেক ওমর সানীর। মৌসুমীর প্রথম সিনেমা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’-এর মহরতে সানী-মৌসুমীর প্রথম দেখা। যদিও সেদিন দুজনের কথা হয়নি। নতুন একটি সিনেমায় ওমর সানীর বিপরীতে মৌসুমীকে নিতে চেয়েছিলেন পরিচালক শেখ নজরুল ইসলাম। এ বিষয়ে কথা বলতে সানীকে নিয়ে মৌসুমীর বাসায় হাজির হন পরিচালক। ড্রয়িংরুমে অপেক্ষার ২০ মিনিট পর মৌসুমীর দেখা মিললেও সেদিন কিন্তু সানীর সঙ্গে সিনেমার অফার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মৌসুমী। কারণ ব্যস্ত শিডিউল। এ দিনই প্রথম কথা হয় দুজনের। 

১৯৯৩ সালে ওমর সানী ও মৌসুমীকে নিয়ে একটি সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা হয়। কারণ দুজনই তখন উঠতি তারকা। কিন্তু সেই সিনেমার নাম ‘দোলা’ শুনেই ওমর সানী শুরুতে প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দেন। কারণ নারীপ্রধান সিনেমা তিনি করতে চাইছিলেন না। কিন্তু গল্পটা ভালো লাগায় অবশেষে রাজি হয়ে যান। এই সিনেমা দিয়েই জুটি গড়েন মৌসুমী-সানী। 

‘দোলা’র শুটিং চলাকালে সিলেটে আউটডোরে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। ‘এরপর কেন জানি মেয়েটার জন্য মায়া লাগল। যে বিষয়টি আমাকে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা দিয়েছিল সেটা ওর (মৌসুমীর) ব্যক্তিত্ব। ওই সময় অন্য যারা কাজ করতেন তাদের থেকে ও আলাদা। তার বাবাও ছিলেন খুব স্মার্ট ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। পুরো পরিবারের প্রতি আলাদা একটা শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হলো। ভেতরে-ভেতরে হয়তো ভালোবাসাও জন্ম নিলো।’ বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে বলেছেন ওমর সানী। 

এরপর ‘আত্ম অহংকার’-এর শুটিং করতে জৈন্তাপুর যান মৌসুমী ও সানী। তত দিনে দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া বেড়েছে। এই শুটিংয়ের সময়ও তাদের মধ্যে মান-অভিমান যেমন হয়েছে, তেমনি অনেক মজাও হয়েছে বলে জানান নির্মাতা রায়হান মুজিব। এই নির্মাতা জানান, ৩ নভেম্বর মৌসুমীর জন্মদিন। বিশেষ এই দিনে দাওয়াত করেন মৌসুমী। দাওয়াত পেয়ে চিন্তায় পড়ে যান সানী। কী উপহার দেওয়া যায় ভেবে পাচ্ছিলেন না। গলায় তখন সাড়ে তিন-চার ভরি ওজনের একটা স্বর্ণের চেইন ছিল। সানী মৌসুমীকে সেই চেইন উপহার দিয়েছিলেন সেদিন। যদিও সেই চেইন ছিল মায়ের কাছ থেকে পাওয়া সানীর বিশেষ উপহার।  

একদিন সকালে ওমর সানীর তেজতুরী বাজারের বাড়ির সামনে এসে থামে একটি মাইক্রোবাস। ঘোমটা পরা একটি মেয়ে সানীর মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। সেই মেয়েটি ছিল মৌসুমী। তাকে দেখে ওমর সানীও অবাক! ওমর সানীর ভাষ্য অনুযায়ী ‘মৌসুমী এসেই আমাকে বললো, ‘সানী ভাই, আপনাকে নিয়ে আমি একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছি। তাই ভাবলাম, এফডিসিতে ঢোকার আগে আপনার সঙ্গে দেখা করে যাই।’

সেদিনই সানী প্রথম বুঝেছিলেন কিছু একটা হতে যাচ্ছে। এরপর ‘আত্ম অহংকার’ মুক্তির পর একটি ম্যাগাজিনে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ওমর সানী মুখ ফসকে বলে ফেলেন, ‘আমি ওকে (মৌসুমী) ভালোবাসি। ও আমাকে ভালোবাসে কিনা জানি না।’ সেই সাক্ষাৎকার পড়ে মৌসুমী অবাক হয়েছিলেন। প্রশ্নও করেছিলেন ‘এভাবে বলা কি আপনার ঠিক হলো?’ সানীর তখন সহজ উত্তর, ‘বলেছি তো বলেছিই। ঠিক হইছে কিনা জানিটানি না।’

তত দিনে ওমর সানীর মা মৌসুমীকে ভীষণ পছন্দ করে ফেলেছেন। মৌসুমীর নানিরও সানীকে বেশ পছন্দ। এবার দুজন উদ্যোগী হলেন। একদিন সানীর বাসায় মৌসুমীকে নিয়ে হাজির তার নানি। তিনি সোজা সানীর মাকে বললেন, ‘এক্ষুণি কাজী ডাকেন, আজই ওদের বিয়ে দেব।’ কাজি ডেকে সেদিনই বিয়ে হলো। দিনটা ছিল ১৯৯৫ সালে ৪ মার্চ। এই বিয়ের খবর কেউ জানতে পারেনি সেদিন। বিষয়টি জানাজানি হয় মৌসুমী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর। এই দম্পতির প্রথম সন্তান ফারদীন গর্ভে আসার চার মাস পর বিয়ের অনুষ্ঠান করেন তারা। রাওয়া ক্লাবে হয় ঘটা করে বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান। দিনটি ছিল ১৯৯৫ সালের ৩ আগস্ট।   

রাহাত/তারা

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়