ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘নব্বই দশকে ঢাকায় পূর্বাণী হোটেলে কাজ করেছি’

|| রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ৫ জুলাই ২০১৩   আপডেট: ০৮:৪৫, ১১ আগস্ট ২০২০
‘নব্বই দশকে ঢাকায় পূর্বাণী হোটেলে কাজ করেছি’

শাহ মতিন টিপু
ঢাকা, ৫ জুলাই : ‘ব্যাংককে লেখাপড়ার ফাঁকে সেফের কাজ করেছি। আমি ফিল্ম জগতে পদার্পণের আগে অর্থাৎ নব্বইয়ের দশকের একেবারে শেষ দিকে ঢাকায় পূর্বাণী হোটেলে কাজ করেছি।

৮ মাসের মত ছিলাম সেখানে। তাই বাংলাদেশের প্রতি আমার রয়েছে অনেক ভালবাসা। বাংলাদেশের দর্শকদের আমি পরম মমতায় জানাতে চাই আমার আন্তরিক অভিনন্দন।’

১৭০টিরও অধিক ছবিতে অভিনয়কারী জনপ্রিয় বলিউড হিরো অক্ষয় কুমার নিউইয়র্কে তার জীবনের গল্প বলতে গিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে অভিনন্দন জানান।

‘মা-বাবার আশির্বাদ নিয়ে ঘর থেকে বের হলে সাফল্য আসবেই। আমি সেভাবেই আজকের পর্যায়ে এসেছি এবং এ উপদেশই আমার ভক্তদের দিতে চাই’-বলেন অক্ষয় কুমার।

বলিউডে এ সময়ে অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা অক্ষয় কুমার নিউইয়র্কে বাঙালি প্রযোজক-পরিচালক প্রণব চক্রবর্তীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘তার ‘দিদার’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমেই আমার চিত্রজগতে প্রবেশ। আমি তার প্রতি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।’

মারদাঙ্গা চরিত্রে অভিনয়ে জনপ্রিয়তা অর্জনের পর রোমান্স, কমেডি এবং খলনায়কের চরিত্রেও অসাধারণ নৈপূন্য প্রদর্শণকারী অক্ষয় কুমার অবকাশ যাপনের জন্যে নিউইয়র্কে রয়েছেন সপরিবারে। এ সুযোগে টাচডাউন মিডিয়ার আমন্ত্রণে সাংবাদিকদের মুখোমুখী হন চিত্রনায়ক অক্ষয়।

ম্যানহাটানের সেন্ট্রাল পার্কে প্লাজা হোটেলের বলরুমে ‘ওয়ান্স আপঅন এ টাইম ইন মোম্বাই’ ছবির পরিচালক মিলন লুথরিয়াকে পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ৪৬ বছর বয়সী অক্ষয়।

চমৎকার এ অনুষ্ঠানের আয়োজক টাচডাউন মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা রাহুল ওয়ালিয়ার সঞ্চালনে দক্ষিণ এশিয়ার সবকটি দেশের মিডিয়া এতে অংশ নেয়। বাংলাদেশের ছিল সাপ্তাহিক ঠিকানা।

পাঞ্জাবের অমৃতসরে  রাজিক হ্যারী অঁম ভাটিয়া নামে জন্মগ্রহণকারী অক্ষয় কুমার এ সময় বলেন,‘অভিনয়ের সাথে মিশে গিয়ে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করি-এটি হচ্ছে মূল সত্য। সে সত্যের ওপর ভর করেই বাকিটা জীবন কাটাতে চাই।’

তিনি বলেন,‘স্ত্রী টুইঙ্কেল খান্নার ঘনিষ্ঠ এক বান্ধবী থাকেন এ সিটিতে। প্রতি বছরই একবার আসতে হয় তার আমন্ত্রণে। তিনিও মুম্বাই যান আমাদের সান্নিধ্যে অবকাশ যাপনে।’

অক্ষয় বলেন,‘নিজস্ব গাড়ি রয়েছে, কিন্তু আমি সব সময়ই ট্যাক্সি ব্যবহার করি। কারণ, ঘুরতে এসেছি এবং তা পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করতে চাই।’

বাংলাদেশী, পাকিস্তানী, ভারতীয় ট্যাক্সি ড্রাইভারের  প্রায় সকলেই প্রচন্ড কৌতুহল নিয়ে আমার দিকে তাকায়। তারা বিশ্বাস করতে চান না যে আমি অক্ষয় কুমার। বিষয়টি আমাকে বেশ মজা দেয়। প্রাণ ভরে উপলব্ধি করি।
অক্ষয় বলেন, ‘রাস্তায় অপেক্ষা করছি ট্যাক্সির জন্য।

এ সময় দেখলাম, একটি ট্যাক্সি আমাকে পাশ কাটিয়ে সামনে গেলেন বেশ কয়েক ব্লক। যাত্রীও ছিলেন ট্যাক্সিতে। আমি কেন জানি না ঐ ট্যাক্সির দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। কিছুক্ষণ পর দেখলাম ট্যাক্সিটি তার এক মহিলা যাত্রীকে অনুরোধ করে নামিয়ে ইউ টার্ন করে আমার কাছে এসে দাঁড়ালো। অপরদিকে, নামিয়ে দেয়া মহিলা যাত্রীটিও দৌড়ে আসতে দেখলাম।

কারণ, ট্যাক্সিতে তার জিনিষ ছিল। মহিলাটি অনেক অনুরোধ করলেন গন্তব্যে পৌঁছে দিতে। কিন্তু বাংলাদেশী সেই ক্যাবী সবকিছু উপেক্ষা করে আমাকেই নিলেন।
কিছুদূর যাবার পরই তিনি যে আমাকে সত্যি সত্যি চিনে ফেলেছেন তা জানালেন।

যদিও আমি তখন পর্যন্ত কোন কথাই বলিনি এ ব্যাপারে। অবশেষে বলতে বাধ্য হয়েছি তার আনন্দ-অনুভূতির কারণে। কী যে খুশী হয়েছিলেন তিনি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। তার একটি প্রশ্ন ছিল, আমি কেন ট্যাক্সিতে চলাফেরা করছি।’

অক্ষয় বলেন,‘আমি এমন পরিস্থিতিতে যতদিন পড়বো ততদিনই ভাববো আমার চাহিদা রয়েছে।’ ‘ভক্তদের সাথে ছবিতে পোজ দেয়া, হায়-হ্যালো বলা, কখনো কখনো জনপ্রিয় দুয়েকটি ডায়লগ উচ্চারণ করে ভক্তদের সন্তুষ্ট করতে পারলে আমি আনন্দ পাই-এ জন্যে সবসময় দর্শকের  মাঝে হাঁটতে চাই’-বলেন অক্ষয়।

২০১০ সালের সুপারহিট মুভি ‘ওয়ান্স আপঅন এ টাইম ইন মুম্বাই’র অনুকরণে নির্মিত হয়েছে ‘ওয়ান্স আপঅন এ টাইম ইন মুম্বাই-দুবারা’ এবং এর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন অক্ষয় কুমার। ভারতের স্বাধীনতা দিবস-১৫ আগস্টে তা একযোগে মুক্তি পাবে সারাবিশ্বে।

এ ছবির প্রেক্ষাপট নিয়েও মতবিনিময় করা হয় এ সময়। শহরের সবচেয়ে বড় গুন্ডা হিসেবে পরিচিত শুয়াইবের অভিনয় ফুটিয়ে তুলতে অক্ষয় কুমার তার সর্বোচ্চ মনোযোগ দেন বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন,‘এ ছবির মাধ্যমে দর্শকরা যাতে আগের ছবির প্রসঙ্গ ভুলে যান সে চেষ্টা করেছি। অর্থাৎ নিজের শ্রেষ্ঠ্যত্ব প্রদর্শনে কোন কার্পণ্য করিনি। বাকিটা দর্শকের ওপর ছেড়ে দিলাম।’

এ ছবিতে নায়িকার অভিনয় করেছেন হিন্দি ফিল্মে উঠতি অভিনেত্রীর মধ্যে শীর্ষে অবস্থানকারী সোনাক্ষী সিনহা।

তার চরিত্রের নাম জেসমীন। জেসমীন একইসাথে দু’জনের প্রেমে পড়েন। আরেকজন হচ্ছেন ইমরান খান, যার চরিত্রের নাম আসলাম। শুয়াইবের কাজকর্মের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। মানুষের দৃষ্টিতে মাস্তানী আর গুন্ডামীতে লিপ্ত মনে হলেও শুয়াইব এবং আসলাম উভয়েই শহরের অসহায় মানুষদের পরম বন্ধু এবং তা অজানা থাকে না জেসমীনের।

তবে জেসমীনের সাথে আসলাম যেভাবে খোলামেলা কথাবার্তা বলেন, শুয়াইবের পক্ষে সেটি সম্ভব হয়নি। আসলামের ওস্তাদ হচ্ছেন শুয়াইব। এক পর্যায়ে আসলামের কাছে জেসমীনের প্রণয়ে আসক্ত শুয়াইব-এ কথা স্পষ্টভাবে জানান শুয়াইব নিজেই।

এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে জেসমীনকে কাছে এনে দেয়ার হুকুম আসলামকে দেন শুয়াইব। কিংকর্তব্যবিমূঢ় আসলাম শুয়াইবকে এতই শ্রদ্ধা ও মান্য করেন যে, তার নির্দেশ অমান্যের কোন সাহস নেই। তাই আসলাম জেসমীনকে ধরে এনে দেয় শুয়াইবের হাতে তুলে দেয়।

এ ছবিতে আরো অভিনয় করেছেন সোনালী বেন্দ্রে। ছবিটি তৈরী করেছে বালাজি মোশন পিকচার এবং কাহিনী লিখেছেন রজত অরোরা।

 

রাইজিংবিডি/এলএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়