ঢাকা     শুক্রবার   ১৭ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

যেভাবে হামলা হয়েছিল আনোয়ার চৌধুরীর ওপর

রফিকুল ইসলাম কামাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যেভাবে হামলা হয়েছিল আনোয়ার চৌধুরীর ওপর

আনোয়ার চৌধুরী

রফিকুল ইসলাম কামাল, সিলেট : বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আনোয়ার চৌধুরীর ওপর সিলেটে গ্রেনেড হামলা হয়েছিল।

 

এ ঘটনায় বিচারিক আদালতের দেওয়া তিন জনের মৃত্যুদন্ড এবং দুজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় হাইকোর্টেও বহাল রয়েছে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখার সিদ্ধান্ত দেন।

 

আনোয়ার চৌধুরী বর্তমানে পেরুতে কর্মরত। সিলেটে হযরত শাহজালালের (রহ.) মাজারে আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলা হয়েছিল প্রায় এক যুগ আগে ২০০৪ সালের ২১ মে। ওই হামলায় তিনজন নিহত এবং আনোয়ার চৌধুরীসহ প্রায় ৭০ জন আহত হয়েছিলেন।

 

যেভাবে হামলা হয়েছিল : ২০০৪ সালের ২১ মে। দিনটি ছিল শুক্রবার। ওইদিন দুপুর প্রায় ১টার দিকে সিলেট সফরে থাকা তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী হযরত শাহজালালের (রহ.) মাজার জিয়ারত করতে আসেন। তার আগমন ঘিরে মাজার এলাকায় ছিল কড়া নিরাপত্তা। সিলেটের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল হোসেন মাজারের প্রধান ফটকে আনোয়ার চৌধুরীকে স্বাগত জানান। আনোয়ার চৌধুরী মাজার জিয়ারত শেষে দরগাহ প্রাঙ্গনস্থ মসজিদেই জুমার নামাজ আদায় করেন।

 

নামাজ শেষে মানুষের ভীড়ের মধ্যে বের হন ব্রিটিশ হাইকমিশনার। অনেকের সঙ্গে করমর্দনও করেন তিনি। মানুষের ভিড় ঠেলে সামনে এগুতে থাকেন আনোয়ার চৌধুরী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সিলেট জেলা প্রশাসক, সিলেট জেলা বারের প্রাক্তন সভাপতিসহ অন্যরা। হঠাৎ শক্তিশালী গ্রেনেডের প্রচন্ড বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো গোটা মাজার প্রাঙ্গন। কালো ধোঁয়ায় ঢাকা পড়লো চারদিক। আতঙ্কিত মানুষের দিগবিদিগ দৌড়াদৌড়ি আর চিৎকার-চেচামেচি।

 

সেদিন আনোয়ার চৌধুরীই ছিলেন হামলার মূল টার্গেট। সরাসরি তার বুকের ওপর গ্রেনেড ছুঁড়ে মারা হয়েছিল। অলৌকিকভাবে সেই গ্রেনেড তার বুকে বিস্ফোরিত না হয়ে গড়িয়ে গিয়ে পায়ের একটু দূরে বিস্ফোরিত হয়েছিল। আর তাতেই ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান আনোয়ার চৌধুরী। তবে তার পায়ে স্পিøন্টারের আঘাত লেগেছিল। সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে।

 

ওই গ্রেনেড হামলায় যারা নিহত হয়েছিলেন, তারা হচ্ছেন- পুলিশ পরিদর্শক কামাল উদ্দিন, কলেজছাত্র রুবেল আহমদ এবং দিনমজুর হাবিল মিয়া। এছাড়া সিলেটের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল হোসেন, সিলেট জেলা বারের প্রাক্তন সভাপতি আবদুল হাই খান, সাংবাদিক মুহিবুর রহমানসহ প্রায় ৭০ জন আহত হয়েছিলেন।

 

দীর্ঘ এক যুগ পর চাঞ্চল্যকর সেই হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা নিষ্পত্তির দিকে এগুচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহমান এবং আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান এবং হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ এবং মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদানের রায় বহাল রেখেছেন।




 

রাইজিংবিডি/১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়