বেহাল দশায় জামালপুরের ক্রীড়াঙ্গন
শোয়েব || রাইজিংবিডি.কম
জামালপুরের স্টেডিয়া
জেলা প্রতিবেদক
জামালপুর, ৩ নভেম্বর: জামালপুরের ক্রিড়াঙ্গন এখন পরিনত হয়েছে ময়লা-অবর্জনার ভাগাড়ে। স্টেডিয়াম, আউটার স্টেডিয়াম, ব্যায়ামাগার, শুটিং ক্লাব সর্বত্রই ময়লা-আবর্জনার স্তুপ।
নানা সমস্যা, পৃষ্টপোষকতার অভাব আর ক্রীড়া সংস্থার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দলাদলিতে জামালপুরের ক্রীড়াঙ্গন পড়েছে চরম বেহাল দশায়। যতœ আর সংস্কারের অভাবে অর্ধশতক বছর আগে প্রতিষ্ঠিত জামালপুর স্টেডিয়ামসহ খেলাধূলার সব কিছুতে যেন মরিচা পড়ে গেছে। একই সাথে ঝিমিয়ে পড়তে শুরু করেছে ক্রীড়ার প্রায় সব শাখা।
১৯৬২ সনে নির্মিত হয় জামালপুর স্টেডিয়াম। সম্প্রতি স্টেডিয়ামটির নাম বদলে রাখা হয় বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম স্টেডিয়াম। প্রতিষ্ঠার পর প্রায় অর্ধশতক বছর পেড়িয়ে গেলেও এই স্টেডিয়াম, গ্যালারি এবং প্যাভেলিয়নে কোন ধরণের সংস্কারের ছোঁয়াই পড়েনি। ফলে ষ্টেডিয়ামের অধিকাংশ গ্যালারী ভেঙ্গে গেছে।
খুলে পড়ছে প্যাভেলিয়নের পলেস্তারা। জরাজীর্ণ ভবনের পলেস্তারা খসে গিয়ে বেরিয়ে পড়েছে লাল ইটের গাঁথুনি, বিভিন্ন স্থানে ঢালাই ভেঙ্গে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। স্টেডিয়ামের পাশেই বিশাল আকারের একটি ব্যায়ামাগার থাকলেও নেই ব্যায়ামের কোন সরঞ্জাম।
ব্যায়ামাগারটি এখন ব্যবহার হচ্ছে বিয়ের অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের ভেন্যু হিসেবে। ঝোপ-জঙ্গল আর মরিচার আড়ালে হারিয়ে গেছে একমাত্র বাস্কেট কোর্ট। ক্রিকেট খেলার জন্য নেই আলাদা মাঠ। ফলে ফুটবল এবং ক্রিকেট চলছে একই মাঠে।
স্থানীয় খেলোয়াড়দের বক্তব্য, প্যাভেলিয়ন যে রকম জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়েছে তাতে খেলা চলাকালে যেকোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। খেলোয়াড়দের ড্রেসিং রুমগুলো ব্যবহার হচ্ছে গরুর গোয়াল ঘর হিসেবে।
স্টেডিয়াম, আউটার স্টেডিয়াম, ব্যায়ামাগার, শুটিং ক্লাব এলাকার ফেলা হচ্ছে পৌরসভার সকল আবর্জনা। পৌরসভার আবর্জনায় ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে জামালপুর শুটিং ক্লাবের প্রবেশ পথ। শুধু প্রবেশ পথ নয়, আবর্জনায় শুটিং ক্লাবটিই এখন ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে উঠেছে। আবর্জনায় ভরে গেছে আউটার স্টেডিয়মের একাংশ, ব্যায়মাগারের সামনের ও পিছনের অংশও।
সঙ্কট আর বেহাল দশার মধ্যে জেলা ক্রীড়া সংস্থা গতানুগতিক ধারায় বছরে এক-দুবার জাতীয়, আঞ্চলিক এবং স্থানীয় ফুটবল আর ক্রিকেটের আয়োজন করলেও হকি, এ্যাথলেটিক, বাস্কেট, ভলিবল, কাবাডি, সাইক্লিংসহ অন্য খেলার আয়োজন একবারেই নেই। ফলে তৈরী হচ্ছে না নতুন প্রজন্মের ভালো কোন খেলোয়াড়। আর এসব কারণে হতাশা বিরাজ করছে স্থানীয় ক্রীড়ামোদীদের মাঝে।
রাইজিংবিডি/ শোয়েব / এমএস
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন