ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

রাশিয়া বিশ্বকাপে নজড়কাড়া সেই সুন্দরী প্রেসিডেন্ট এখন কোথায়?

মুজাহিদ বিল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১১, ৬ ডিসেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৪:১৬, ৬ ডিসেম্বর ২০২২
রাশিয়া বিশ্বকাপে নজড়কাড়া সেই সুন্দরী প্রেসিডেন্ট এখন কোথায়?

গ্যালারিতে কখনও দলের জন্য গলা ফাটাচ্ছেন, কখনও ফুটবলারদের সঙ্গে মেতে উঠছেন উদ্দাম সেলিব্রেশনে। প্রোটোকলের কোনো বালাই নেই! অথচ তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট। ভুল হলো বিশেষণে- সুন্দরী প্রেসিডেন্ট! গত বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল স্কিলে যখম সম্মোহিত ক্রীড়া দুনিয়া, তখন সেদেশের সুন্দরী প্রেসিডেন্টের প্রাণোচ্ছলতায় মজে ছিল নেট দুনিয়া।

মনে পড়ছে কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচকে? রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচ মানেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অযুত-নিযুত-লক্ষ চোখ গ্যালারিতে খুঁজতো তাকে। দেশকে অনুপ্রেরণা দিতে তার উপস্থিতি ছিল অনিবার্য। তার উচ্ছ্বল হাসি যেমন জায়গা করে নিয়েছিল কোটি দর্শকের মনে, তেমনি তার সৌন্দর্যের দ্যুতি ছাপ ফেলেছিল কোটি যুবকের হৃদয়ে। ২০১৮ সালে গুগল অনুসন্ধানে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশিবার তাকেই খোঁজা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

২০১৮ সালের বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার সব ম্যাচেই উপস্থিত ছিলেন কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ। ভিআইপি বক্সে বসে নয়, খেলা দেখেছেন সাধারণ দর্শকের সঙ্গে গ্যালারিতে বসে। শুধু কি তাই, কোয়ার্টার ফাইনালে জয় পাওয়ায় লুকা মদরিচদের অভিনন্দন জানাতে কিতারোভিচ চলে গিয়েছিলেন তাদের ড্রেসিংরুমে। অনেকেই মনে করেন ২০১৮ বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার ফাইনালে ওঠার পেছনে এই প্রেসিডেন্টের অবদান কম নয়। 

কিতারোভিচ পরে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, আমি শুধু একজন রাজনীতিবিদ বা প্রেসিডেন্ট হিসেবে খেলা দেখতে যাই না। শৈশবে ফুটবল খেলেছে, এমন কারও মতোই ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলের ভক্ত হিসেবে মাঠে যাই। ভিভিআইপি বক্সে বসে খেলা দেখলে প্রথাগত পোশাক পরতে হয়। দলের হয়ে গলা ফাটাতেও সমস্যা হয়, তাই স্টেডিয়ামে বসে খেলাটা উপভোগ করতে চাই আমি। 

কাতার বিশ্বকাপেও ফুটবল মাঠে বেশ ভালোভাবেই আছেন কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ। যদিও এবার আর তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট নন। মিডিয়ার আলোও নেই তার ওপর। কিন্তু তাতে কি, তিনি গ্যালারি থেকে গলা ফাটিয়ে দলকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে। আর বিশ্ব জানে ইতোমধ্যেই ক্রোয়েশিয়া দ্বিতীয় রাউন্ড পেরিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে।

কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচের জন্ম ১৯৬৮ সালের ২৯ এপ্রিল ক্রোয়েশিয়ার রিজিকা এলাকায়। ওই সময় ক্রোয়েশিয়া যুগোস্লাভিয়ার অধীন ছিল। তার কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৯২ সালে ক্রোয়েশিয়ার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিভাগে যোগদানের মধ্য দিয়ে। ১৯৯৩ সালে তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা হিসাবে বদলি করা হয়। ২০০৩ সালে তিনি তার রাজনৈতিক দল ক্রোয়েশিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার কূটনৈতিক জ্ঞান, নেতৃত্বগুণ এবং রাজনৈতিক ক্যারিশমা দ্রুত তাকে সাফল্যের সিঁড়িতে পৌঁছে দেয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বাড়তি মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হন তিনি। প্রায় দু-দশকের কেরিয়ারে সামলেছেন নানা কূটনৈতিক পদ, কাজের সুবিধার্থে শিখেছেন বহু ভাষা। মোট ৮টি ভাষায় কথা বলতে পারেন তিনি।

২০১১ সালে রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ন্যাটোর সহকারী মহাসচিবের দায়িত্ব নেন কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ। বাড়তে থাকে তার রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা। ২০১৫ সালে ক্রোয়েশিয়ার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। ফোর্বস ম্যাগাজিনের ২০১৭ সালের তালিকা অনুযায়ী তিনি বিশ্বের ৩৯তম সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি ছিলেন। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব ছাড়ার পর ক্রিড়াপ্রেমী এই নারী কাজ করছেন অলিম্পিকের আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য হিসেবে।  
 

তারা//

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়