ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

স্বাধীনতার কবি’র ১৮তম প্রয়াণ দিবস আজ

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৪, ১৭ আগস্ট ২০২৩   আপডেট: ১১:১০, ১৭ আগস্ট ২০২৩
স্বাধীনতার কবি’র ১৮তম প্রয়াণ দিবস আজ

স্বাধীনতার কবি শামসুর রাহমানের ১৮তম প্রয়াণ দিবস আজ। বাঙালির অন্যতম এই শ্রেষ্ঠ কবি ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।। 

তিনি ছিলেন জনতার কবি। দেশের ও দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কোন অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে, কোন অনাচার হতে দেখলে নিজেকে একাত্ম করে নিতেন এবং তার জবাব দিতেন কবিতার ভাষায়।

মৃত্যুর ৭ বছর আগে ১৯৯৯ সালের ১৮ জানুয়ারি দুর্বৃত্ত দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন কবি।রাজধানীর শ্যামলীর বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করে একদল দুর্বৃত্ত। অবশ্য গুরুতর জখম হলেও সে যাত্রায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

কবির জন্ম ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরনো ঢাকার মাহুতটুলিতে। তিনি একাধারে কবি, সাংবাদিক, গীতিকার ও কলামিস্ট। দীর্ঘ ছয় দশক ধরে কবি এসব ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাবলীল ধারায় লেখালেখি করে বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদান রাখেন।

তাঁর কবিতায় বাঙালিজাতির স্বাধীনতা প্রাপ্তির চেতনার দীপ্তস্বর উচ্চারিত। তিনি লেখেন যুদ্ধের ধ্বংসলীলায় আক্রান্ত ও বেদনামথিত কবিতা 'স্বাধীনতা তুমি' ও 'তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা'। যা আজো মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত হয়। ধর্মান্ধতাকে কবিতার মধ্যদিয়ে আজীবন প্রচন্ডভাবে ঘৃণা করেছেন। লিখেছেন প্রেম, দ্রোহ ও বিশ্বজনীনতা বিষয়ে অসংখ্য চিরায়ত কবিতা। যা আজও সকল বয়সের মানুষকে উজ্জীবিত করে। সর্বোপরি কবিতা রচনায় স্বাধীনতার কণ্ঠকে ধারণ করেন। এ কারণেই তার সৃষ্টিশীলতার বিশালতার জন্য বাংলা কবিতায় তাকে স্বাধীনতার কবি বলা হয়।

শামসুর রাহমানের প্রথম কবিতার বই ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’ প্রকাশ পায় ১৯৬০ সালে। এর পর ষাট দশকে প্রকাশিত বইগুলো হচ্ছে ‘রুদ্র করোটিতে’, ‘বিধ্বস্ত নীলিমা’, ‘নিরালোকে বসতি’, ‘নিজ বাসভূমে’। দেশ স্বাধীনের পর প্রকাশ পায় ‘বন্দি শিবির থেকে’, ‘মাতাল ঋতিক’সহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবির ৬০টি কবিতার বই। এ ছাড়া শিশুতোষ, গল্পগ্রন্থ, উপন্যাস- ‘অক্টোপাস’ ও ‘অদ্ভুত আঁধার’, নাটক ও কবিতাগ্রসহ অনুবাদগ্রন্থ, নির্বাচিত কলাম, নির্বাচিত কবিতার চারখন্ডসহ কবির বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা শতাধিক।

সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, আদমজী পুরস্কার, একুশের পদক, কলকাতা থেকে আনন্দ পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন।

শামসুর রাহমানের সান্নিধ্য পাওয়া কবি নাসির আহমেদ লেখেন, ‘তিরিশোত্তর আধুনিক বাংলা কবিতার এক অবিস্মরণীয় কণ্ঠস্বর শামসুর রাহমান। বাংলাদেশ এবং বাঙালি জীবনের এমন কোনো প্রান্ত নেই, যা স্পর্শ করেনি তাঁর কবিতা। স্বভাবে লাজুক, অথচ দৃঢ়চেতা উন্নত চরিত্রের প্রগতিশীল এই মহান কবির কাছে  বাংলাদেশ এবং বাংলা কবিতা ঋণী হয়ে আছে।’ 

/টিপু/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়