‘দেশে সাড়ে ৪ কোটি মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য মতে বাংলাদেশে বছরে বিভিন্ন রোগে মারা যাওয়া ২ দশমিক ৮২ শতাংশের মৃত্যুর কারণ লিভারের বিভিন্ন রোগ। পরিসংখ্যান বলছে, দেশের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত।

সোমবার (৬ মার্চ) রাজধানীর গুলশানের উদয় টাওয়ারে অনুষ্ঠিত কার্নিভাল কেয়ার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, লিভার ক্যানসার চিকিৎসায় রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি অ্যাবলেশন (আরএফএ), ট্রান্সআরটারিয়ালকেমো এমবোলাইজেশন (টেইস), লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় আধুনিক স্টেম সেল থেরাপি, লিভার ডায়ালাইসিস এবং প্লাজমা এক্সচেঞ্জসহ সব লিভার রোগের অত্যাধুনিক চিকিৎসা রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, সহযোগী অধ্যাপক ডা. এম এ রহিম, কার্নিভাল কেয়ারের ডিরেক্টর ওয়ালী উল ইসলাম, কার্নিভাল কেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. ফারশিদ ভূঁইয়া, ডটলাইনস গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহবুবুল মতিন সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।

এ সময় বক্তারা জানান, লিভার সিরোসিস রোগের অন্যতম প্রধান কারণ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়া। তাছাড়াও হেপাটাইটিস বি’তে আক্রান্ত দেশের শতকরা প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন জেলায় রয়েছে হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যানসারের অসংখ্য রোগী। যারা যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, লিভার রোগে আক্রান্ত রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কার্নিভাল কেয়ারের স্পেশালাইজড লিভার সেন্টারে অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের নেতৃতে একদল সুদক্ষ লিভার বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন জটিল লিভার রোগের অত্যাধুনিক এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন চিকিৎসা প্রদান করবেন।

মূলত কার্নিভাল কেয়ারের ওয়েবসাইট ভিজিট করে বা হটলাইনে ফোন করার পর একজন রোগী, অভিজ্ঞ এবং দক্ষ চিকিৎসকের কাছে সব শারীরিক সমস্যার কথা বলবেন। রোগী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ গ্রহণ করার পরে কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হলে কার্নিভালকেয়ারের টেকনোলজিস্ট সেসব নমুনা রোগীর বাসা বা কর্মস্থল থেকে সংগ্রহ করবেন এবং পরবর্তী সময়ে সেসব রিপোর্ট রোগীকে পৌঁছে দেবেন। পরে রোগী সেই রিপোর্ট নিয়ে অনলাইনে লিভার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারবেন।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক (ডা.) মামুন আল-মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, বাস্তবতার কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অনেকেই চিকিৎসা সেবা কিংবা পরামর্শের জন্য আমাদের কাছে পৌঁছাতে পারেন না। এছাড়াও ঢাকার বাইরে থেকে অনেক রোগী আমাদের কাছে আসেন যারা পরে ফলোআপ চিকিৎসা নিতে আসেন না বা নানাবিধ জটিলতায় পারেন না। এ প্ল্যাটফর্মটি সেই সমস্যাগুলোর সমাধান করবে বলে আমি আশা করছি।

দেশে প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসায় ‘নতুন মাত্রা’ যোগ করতে স্বাস্থ্য সেবা খাতে কার্নিভাল কেয়ারের মতো প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছে ডটলাইনস গ্রুপ। ডটলাইনস গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহবুবুল মতিন বলেন, করোনাকালে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবার সক্ষমতা ধরে রেখেছে টেলিমেডিসিনের মতো উদ্ভাবন উদ্যোগ। প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষ স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি রোগ নির্ণয়ের নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রযুক্তি খাতের এই উদ্যোক্তা।

কার্নিভাল কেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. ফারশিদ ভূঁইয়া বলেন, সঠিক পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনার মাধ্যমে যকৃত রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করাই কার্নিভালকেয়ারের মূল উদ্দেশ্য।