পাকিস্তান যখন হামলা চালাবে, তখন বিশ্ব জানতে পারবে: খাজা আসিফ
পাকিস্তান যখন হামলা চালাবে, তখন বিশ্ব জানতে পারবে: খাজা আসিফ
বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তান ভারতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, “পাকিস্তান যখন হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেবে, তখন সারা বিশ্ব জানতে পারবে।” তিনি আরো বলেন, “পাকিস্তান কোনো পদক্ষেপ নিলে তা অস্বীকার করবে না।”
মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের মিত্ররা দেশটিকে সংযম প্রদর্শনের পরামর্শ দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, তার দেশ ‘নিজেকে সংযত’ রাখছে। কিন্তু পরিস্থিতি ‘এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে কোনো অগ্রগতি হয়নি’।
আসিফ বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন এবং সম্ভবত সেই কথোপকথন কিছুটা আশা জাগাতে পারে। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, ভারত থেমে নেই এবং পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।
হামলার তথ্য নাকচ পাকিস্তানের
ভারত-শাসিত কাশ্মীরে যেকোনো হামলার জন্য পাকিস্তানের দায় অস্বীকার করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।
তিনি বিবিসিকে বলেন, “আমরা এটা অস্বীকার করছি, আমরা এখন পর্যন্ত কিছু করিনি।”
মন্ত্রীর মতে, যখন পাকিস্তান হামলা চালাবে, তখন সবাই তা জানতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা হামলা চালিয়ে তারপর অস্বীকার করব না।”
ভারত-শাসিত কাশ্মীরে বিস্ফোরণ ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর প্রকাশের কয়েক মুহূর্ত পর তিনি বিবিসির সঙ্গে কথা বলেন।
৩টি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান: ভারতীয় সেনাবাহিনী
ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তান ভারতের তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ভারত-শাসিত কাশ্মীরের জম্মু ও উধমপুরে এবং ভারতের পাঞ্জাব জেলার পাঠানকোটে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ পোস্ট করা বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী বলেছে, “হামলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি এবং হুমকি ‘প্রতিহত’ করা হয়েছে।”
ভারতের জম্মু শহরে বিস্ফোরণ, ব্ল্যাকআউট
ভারতের জম্মু বিমানবন্দরে বিস্ফোরণে শব্দ শোনা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গত এক ঘণ্টা ধরে জম্মু শহর জুড়ে ব্ল্যাকআউট রয়েছে এবং বিমান হামলার সাইরেন বাজছে।
জম্মু বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে জানিয়েছেন, তিনি কাছাকাছি পড়ে থাকা ১৬টি বস্তু দেখেছেন।
একই প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, বাজার বন্ধ রয়েছে এবং তারা লোকজনকে দৌঁড়াতে দেখেছেন।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, জম্মুর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।
ভারতে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, দাবি ভারতীয় মিডিয়ার
ভারতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ভারত-শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। জম্মু বিমানবন্দর, সাম্বা, আরএস পুরা, আরিনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিমান হামলার সাইরেন বাজছে।
সীমান্তের ওপার থেকে একাধিক রকেট উড়ে আসতে দেখা গেছে। সম্পূর্ণ ‘ব্ল্যাকআউট’ করে দেওয়া হয়েছে এলাকায়। ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাকিস্তানের হামলা প্রতিহত করতে সক্রিয় করা হয়েছে। জম্মুর পাশাপাশি পাঞ্জাব, রাজস্থানের বিভিন্ন এলাকাতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
বার্তা সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, পাকিস্তান ‘লটারিং গোলাবারুদ’ দিয়ে জম্মুকে লক্ষ্যবস্তু করছে। পাকিস্তানি ড্রোনগুলো ওয়ারহেড দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে।
সংবাদ সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, ভারতীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও পাল্টা গুলি চালাচ্ছে।
ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার বরাত দিয়ে আনন্দ বাজারের খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তানের মোট আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ভারত ধ্বংস করেছে। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ দিয়ে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আটকানো মোকাবিলা করা হয়েছে। জম্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দুটি পাকিস্তানি ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে।
রাজস্থানের জয়সলমেরে পাকিস্তানের ড্রোন ধ্বংস করার দাবি করেছে ভারত। এখনো বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। আকাশে আগুনের ফুলকি দেখা গেছে। জয়সলমেরেও হামলার চেষ্টা করেছে পাকিস্তান, যা ভারত আটকে দিয়েছে বলে দাবি করেছে।
পুরো জম্মু শহরে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জম্মু বিমানবন্দর, পঠানকোটের বিমানঘাঁটিতে ঘাঁটিতে সাইরেন বাজছে। সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে বারামুলা, কুপওয়ারার মতো এলাকাতেও। এ ছাড়া শহরের নানা প্রান্ত থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
জম্মুর পাশাপশি পাঞ্জাবের বিভিন্ন অংশেও ‘ব্ল্যাকআউট’ করা হয়েছে। পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুরের ডেপুটি কমিশনার আশিকা জৈন জানিয়েছেন, বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শহরে ‘ব্ল্যাকআউট’ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত ‘ব্ল্যাকআউট’ চলবে। অমৃতসরেও ‘ব্ল্যাকআউট’ করা হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ