কলকাতায় ভারী বৃষ্টিতে ৭ জনের প্রাণহানি
কলকাতা ব্যুরো || রাইজিংবিডি.কম
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম
ভারী বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত কলকাতায় একদিনে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে ঝরে গেল সাতটি প্রাণ। খোলা তারেই নিহত পথচারীরা। মঙ্গলবার ভোররাত থেকে টানা বৃষ্টি যার জেরে প্রধান সড়কগুলোসহ বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতেও তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। কোমর পর্যন্ত পানিতে যেন পাতা ছিল মৃত্যুফাঁদ, কেড়ে নিল একের পর এক প্রাণ।
নেতাজিনগরে নিহত ব্যক্তি একজন ফল বিক্রেতা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টির মধ্য়ে ভোরবেলা সাইকেল নিয়ে নিজের কাজে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়ই রাস্তায় পানির তোড়ে সাইকেলের ভারসাম্য হারান তিনি। নিজেকে সামাল দিতে একটি বিদ্যুৎ খুঁটিতে হাত রাখেন। আর তৎক্ষণাৎ বিদ্যুৎপৃষ্ট মারা যান তিনি।
বেনিয়াপুকুর ও একবালপুরে খোলা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরো দুই জনের। এর মধ্যে বেনিয়াপুকুরে একটি নামী মিষ্টির দোকানের সামনে থেকে উদ্ধার হয় একজনের মরদেহ। এই দুই জায়গার পাশাপাশি বালিগঞ্জে মৃত্যু হয়েছে আরো এক ব্যক্তিরও। ফুটপাথ থেকেই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
হরিদেবপুর কবরডাঙ্গায় মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। সকাল বেলা কাজে গিয়েই মৃত্যু হয় তার। কবরডাঙ্গার স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে কারখানায় গিয়ে শাটার তোলার পর বিদ্যুৎ মিটার চালু করতেই তৎক্ষণাৎই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তার। এছাড়াও বেহালা ও গড়িয়াহাটেও প্রাণ গেছে দুই জনের।
টানা ভারী বৃষ্টিতে বানভাসি কলকাতা শহরে জনজীবন প্রায় স্তব্ধ। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পৌরসভার কন্ট্রোল রুম পরিদর্শন করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “এত বছরে এরকম মেঘ ভাঙা বৃষ্টি আমি দেখিনি। ৫-৬ ঘণ্টায় ৩০০ মিলিমিটারের উপর বৃষ্টি- এটা একটা ভয়াবহ অবস্থা। এর আগে কখনো এমনটা হয়নি। টানা বৃষ্টিতে সমুদ্রও উত্তাল, নদীও ধারণের সর্বোচ্চ সীমায়। ফলে আমাদের নদীর সঙ্গে সংযুক্ত যে ক্যানাল তা পানিতে এমনিতেই ভরে রয়েছে। পৌরসভা থেকে লক গেট খুলে পানি বের করার চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু পানি পুনরায় বাউন্স ব্যাক করছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমি কলকাতাবাসীকে বলব আজকের দিনটা দয়া করে বাড়ি থেকে বেরবেন না। এই জলাবদ্ধ শহরে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর খবর এসেছে। পোর্টেবল পাম্প বসিয়ে পানি বের করার কাজ করছে পৌরসভা।”
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ