স্বীকৃতি নিস্তার দিচ্ছে না গাজার বাসিন্দাদের
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মঙ্গলবার গাজা শহরের সবচেয়ে জনবহুল এলাকার আরো গভীরে অগ্রসর হয়েছে। বিষয়টি গাজাবাসীদের জন্য একটি বেদনাদায়ক বিষয়। কারণ পশ্চিমা শক্তিগুলো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরেও ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক এগিয়ে আসছে এবং যুদ্ধের ভয়াবহতা শেষ হচ্ছে না।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে আলিঙ্গন করার জন্য কয়েক ডজন বিশ্ব নেতা সোমবার সমবেত হয়েছেন। প্রায় দুই বছরের যুদ্ধের পর এটি একটি যুগান্তকারী কূটনৈতিক পরিবর্তন, যা ইসরায়েল এবং তার ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরোধের মুখোমুখি।
স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইসরায়েলি গুলিবর্ষণে গাজা উপত্যকাজুড়ে কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ছিটমহলের হাসপাতালগুরোতে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জ্বালানি ফুরিয়ে যাবে, যা জীবনকে বিপন্ন করে তুলবে।
গাজা শহরের দুই সন্তানের মা হুদা একটি চ্যাট অ্যাপের মাধ্যমে রয়টার্সকে বলেন, “আমরা অটল নই, আমরা অসহায়। দক্ষিণে চলে যাওয়ার জন্য আমাদের কাছে টাকা নেই এবং যদি আমরা সেখানে গেলেও ইসরায়েলিরা আমাদের উপর বোমাবর্ষণ করবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই, তাই আমরা থাকছি।”
তিনি বলেন, “বিস্ফোরণের শব্দে শিশুরা সবসময় কাঁপে, আমরাও। তারা হাজার হাজার বছরের পুরনো একটি শহরকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে এবং বিশ্ব এমন একটি রাষ্ট্রের প্রতীকী স্বীকৃতি উদযাপন করছে যা আমাদের হত্যা বন্ধ করবে না।”
গাজা শহরের পশ্চিম দিকে ট্যাঙ্কগুলো যখন অগ্রসর হয়, তখন ইসরায়েলি বাহিনী সাবরা ও তেল আল-হাওয়া শহরতলিতে বিস্ফোরক বোঝাই যানবাহনে বিস্ফোরণ ঘটায়। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে কয়েক ডজন বাড়িঘর এবং রাস্তা ধ্বংস হয়ে যায়।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে সোমবার তিনটি হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরো দুর্বল করে দিয়েছে এবং বাসিন্দাদের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করেছে।
সোমবার সৌদি আরবের সাথে এক বৈঠকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এই বৈঠকে বাস্তবে খুব বেশি পরিবর্তন আসবে বলে মনে হচ্ছে না। ইসরায়েল জানিয়েছে, এই ধরনের পদক্ষেপ সংঘাতের শান্তিপূর্ণ অবসানের সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব থাকবে না।
গাজার বাসিন্দা আবু মুস্তাফা বলেন, “আমরা কি এখন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে নিহত হচ্ছি? এটাই ঘটছে? যারা হঠাৎ করে ফিলিস্তিন দখলের কথা মনে করে ফেলেছিল, তারা ভুলে গেছে যে গাজা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই যুদ্ধ শেষ হোক, আমরা চাই আমাদের হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হোক, এখন আমাদের এটাই প্রয়োজন, ঘোষণা নয়।”
ঢাকা/শাহেদ