ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সিনিয়রদের কাছ থেকে সাড়া পাইনি : অন্তু করিম

আমিনুল ই শান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪২, ১ জানুয়ারি ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সিনিয়রদের কাছ থেকে সাড়া পাইনি : অন্তু করিম

মডেল ও অভিনেতা অন্তু করিম

এক জীবনে এতো প্রেম পাব কোথায়?- গানটি শোনার পর চোখের সামনে ভেসে ওঠে মায়াবী চেহারার একটি ছেলে। যে ছেলেটার নাম অন্তু করিম। ভারতের পুনেতে স্নাতক পড়ার সময় প্রথম মডেল হওয়ার সুযোগ মেলে তার। ২০০২ সাল। বাংলাদেশে ফিরে র‌্যাম্পে কাজ শুরু করেন তিনি। এভাবেই আস্তে আস্তে মডেলিং শুরু করে বর্তমানে দেশের অন্যতম মডেলশিল্পী তিনি। এ কথার সাক্ষ্য মেলে যখন আমরা তাকে একের পর এক বাংলালিংক, ক্লোজআপ কাছে আসার গল্প, রবি ইত্যাদি টিভিসির বিজ্ঞাপনে কাজ করতে দেখি। পাশাপাশি তিনি নাটক ও চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন।


নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও অন্তুর দরদের জায়গা মিউজিক ভিডিও। সম্প্রতি রাইজিংবিডির সহ-সম্পাদক আমিনুল ই শান্ত-এর সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে আড্ডা হয় অন্তুর অফিসে। তবে বাংলাদেশের মিউজিক ভিডিও নিয়ে একটু আলাদাভাবেই চিন্তা করছেন এ মডেলশিল্পী ও অভিনেতা। অন্তুর নানান ভাবনার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য।


রাইজিংবিডি : আপনার প্রথম মিউজিক ভিডিও কোনটি?

অন্তু করিম : আমি প্রথম মিউজিক ভিডিওতে কাজ করি ২০০৭ সালে কণ্ঠশিল্পী হাবিবের গাওয়া ‘পরাণ পাখি’ শিরোনামের গানে মডেল হওয়ার মাধ্যমে।    


রাইজিংবিডি : অভিনয়ে আসার পেছনে আপনার অনুপ্রেরণা কে ছিল?

অন্তু করিম : আমার বাবা প্রয়াত মো. গোলাম মোস্তফা। তিনি প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এ অভিনয় করেছেন। বাবাকে নিয়ে আমি গর্ববোধ করি। কারণ তার প্রতিটা কাজ থেকে আমি অনুপ্রেরণা পাই। তাছাড়া আমি ক্লাস সিক্স থেকে ফরিদপুরের শহীদ সুফি নাট্যগোষ্ঠী নামের একটি নাট্যদলে কাজ করতাম। পুরো স্কুল লাইফ নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ফলে এই অঙ্গনের প্রতি একটা দুর্বলতা ছোটবেলা থেকেই ছিল।


রাইজিংবিডি : প্রায় দুই বছর আগে ‘চ্যানেল বিএমভি’ নামে আপনি একটি ওয়েবসাইট চালু করেছিলেন। এই ওয়েবসাইটটির বিষয়ে জানতে চাচ্ছি।

অন্তু করিম : আমি একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরির লক্ষেই ‘চ্যানেল বিএমভি’ নামে ওয়েবসাইট চালু করেছিলাম। এটি মূলত মিউজিক ভিডিওর প্রচার প্রসারের একটা মাধ্যম। প্রবীণ ও নবীন কণ্ঠশিল্পীদের কমন একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরির লক্ষ্যে আমি এই ওয়েবসাইট চালু করার পরিকল্পনা করি। যেখানে সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আসা মিউজিক ভিডিওর আপডেট ভার্সন থাকবে। এর মাধ্যমে নতুনদের প্রমোট করা যাবে, অনেকটা আর্কাইভের মতো। এ জন্য আমি সিনিয়র কণ্ঠশিল্পীদের কাছে গিয়েছি কিন্তু তাদের কাছ থেকে তেমন সাড়া পাইনি।
 

রাইজিংবিডি : এই অনলাইন চ্যানেলটির এখন কী অবস্থা?

অন্তু করিম : আপাতত এ চ্যানেলটিকে নতুনভাবে সাজাবার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। কারণ ওই সময় তেমন সাড়া না পাওয়ায় আমি বেশিদিন চ্যানেলটি চালাতে পারিনি। তবে এখনও হাল ছাড়িনি। আমি এটাকে নতুন করে শুরু করব। কাজটি করা আমার জন্য সহজ হবে যদি বিভিন্ন কণ্ঠশিল্পী, প্রযোজক ও নির্মাতারা আমার পাশে থাকেন। আমি তাদের সহযোগিতা কামনা করছি।


রাইজিংবিডি : বাংলাদেশের মিউজিক ভিডিওর কতটা পরিবর্তন হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

অন্তু করিম : বাংলাদেশের মিউজিক ভিডিওর অনেক বড় একটা পরিবর্তন এসেছে। এখন আমাদের দেশে তিনটি মিউজিক চ্যানেল চব্বিশ ঘণ্টা সম্প্রচারিত হচ্ছে। যা কিছুদিন আগেও কল্পনাতীত ছিল। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নতুন অনেক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। যেখানে ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। আমাদের মিউজিক ভিডিও বাণিজ্যিকভাবে অনেক সম্ভাবনাময়।  


রাইজিংবিডি : কিন্তু এখনও অনেক নিন্মমানের মিউজিক ভিডিও তৈরি হচ্ছে। এর কারণ কী?

অন্তু করিম : এর প্রধান কারণ বাজেট। ধরুন, আপনি ১০ সেকেন্ডের একটা স্পেশাল শট নিবেন। যে শটটি আপনার মিউজিক ভিডিওটিকে ভিন্ন মাত্রায় উপস্থাপন করবে। শটটি ১০ সেকেন্ডের কিন্তু এ জন্য খরচ হবে এক লাখ টাকা। অথচ প্রযোজক প্রতিষ্ঠান পুরো একটা মিউজিক ভিডিও তৈরির জন্য আপনাকে টাকা দিচ্ছে ৫০ হাজার। তখন আপনার কাজটি আর কত ভালো হবে!


রাইজিংবিডি : এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রযোজক প্রতিষ্ঠান কতটা সহযোগিতা করতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

অন্তু করিম : এখানে অনেক গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্বের অন্যান্য দেশ যেখানে সময়ের সঙ্গে বাজেট বাড়ছে, সেখানে আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বাজেট কমাচ্ছে। তাহলে ভালো কিছু নির্মাণ কীভাবে হবে? আমি চাই প্রযোজকেরা এই মনোভাব পরিবর্তন করে বাজেট বাড়াক। ভালো কিছু সৃষ্টিতে সহযোগিতা করুক। কারণ তাদের সহযোগিতা ছাড়া এই শিল্পকে উন্নত করা সম্ভব নয়।


রাইজিংবিডি : পেশাদার পরিচালক হয়েও অনেকে অপেশাদার শিল্পী নিয়ে মিউজিক ভিডিও তৈরি করছেন। এতে মিউজিক ভিডিওর মান কমে যাচ্ছে। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

অন্তু করিম : যারা শিল্পকে লালন করেন তারা এ ধরনের কাজ করবেন না। এ ক্ষেত্রে শিমুল হাওলাদারের কথা বলতে পারি।  আমার চোখের সামনে অনেক মিউজিক ভিডিওর অফার তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন শুধু বাজেট কম বলে। বাজেট কম হলে পেশাদার শিল্পীকে নিয়ে কাজ করা সম্ভব হয় না। এসব নির্মাতারা বাজেট চাহিদা মতো না পেলে কাজও করেন না। চুপচাপ বসে থাকেন। এমন বেশ কিছু পেশাদার পরিচালক আছেন যাদের আমি চিনি তারা মানের সঙ্গে সমঝতা করেন না।


রাইজিংবিডি : ‘পার্ল অ্যান্ড পেন্টাগন ফিল্মস’ নামে আপনার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।  প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে আপনার কী পরিকল্পনা রয়েছে?

অন্তু করিম : আমি কোয়ালিটিসম্পন্ন কাজ করতে চাই। কাজের গুণগত মানে এতোটুকুও ছাড় দিতে রাজি নই। তাতে কাজ কম হোক। এ পর্যন্ত পার্ল অ্যান্ড পেন্টাগনের ব্যানারে একটি বাণিজ্যিক সিনেমা, দুটি মিউজিক ভিডিও আর ত্রিশটি নাটক তৈরি করেছি। আরো বেশ কিছু কাজ নিয়ে দশর্কের কাছে উপস্থিত হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।  



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ জানুয়ারি ২০১৫/শান্ত/তাপস রায়


রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়