‘ঘুমাতে গেলে মনে হয়, মেয়ে এসে ডাকছে’
পলাশ হাওলাদার এবং মোসা. ফাহিমা দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিল ফারিয়া আক্তার দোলা। গত বছর ফারিয়াকে প্লে গ্রুপে ভর্তি করা হয়েছিল। আশা ছিল, মেয়ে মানুষের মতো মানুষ হবে।
গত বছরের ৭ জানুয়ারি প্রথম স্কুলে যায় ফারিয়া। স্কুল থেকে ফিরে আরেক শিশু নুসরাত জাহানের সঙ্গে খেলতে বের হয় সে। সেদিন প্রতিবেশী গোলাম মোস্তফা ও তার চাচাতো ভাই আজিজুল বাওয়ানী দুই শিশুকে লিপস্টিক দিয়ে সাজানোর প্রলোভন দেখিয়ে ঘরে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টার পর হত্যা করে।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার। দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
দুই শিশু হত্যার রায় জানতে মঙ্গলবার সকালে আদালত চত্বরে হাজির হন তাদের পরিবারের সদস্যরা। রায়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ফারিয়া মা ফাহিমা বলেন, মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করেছিলাম। আশা ছিল, মানুষের মতো মানুষ হবে। যেদিন আমার সন্তানকে হত্যা করা হয়, সেদিন ছিল তার স্কুলের প্রথম দিন। কী অন্যায় ছিল ওদের?
তিনি বলেন, একমাত্র সন্তানকে হারিয়েছি। সন্তান ছাড়া নিঃস্ব লাগে। খেতে পারি না, ঘুমাতে পারি না। সব সময় মেয়ের কথা মনে পড়ে। ঘুমাতে গেলে মনে হয়, মেয়ে এসে মা মা বলে ডাকছে। আমার মেয়েটা ইসলামী মনোভাবাপন্ন ছিল। সব সময় হিজাব পড়ে থাকত। আসামিরা আমার মেয়েকে নিষ্ঠুরভাবে খুন করেছে। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। এতে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করছি, উচ্চ আদালতে এ সাজা বহাল থাকবে এবং আসামিদের ফাঁসি দ্রুত কার্যকর হবে। ফারিয়ার বাবাও এ আশা ব্যক্ত করেছেন।
নুসরাত জাহানের মা পারভীন আক্তার বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা তো আর আমাদের মেয়েদের ফিরে পাব না। এ রায় যেন উচ্চ আদালতে বহাল থাকে এবং দ্রুত ফাঁসি কার্যকর হয়। এ রায় দেখে যেন আর কোনো মানুষ বাচ্চাদের ওপর নির্যাতন করে মেরে ফেলার কথা কল্পনাও করতে না পারে।
ঢাকা/মামুন খান/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন