ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী নুরুল আমিন হাওলাদার গ্রেপ্তার 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫০, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১০:০৬, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী নুরুল আমিন হাওলাদার গ্রেপ্তার 

মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. নুরুল আমিন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) র‍্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র পুলিশ সুপার (এএসপি) শিহাব করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে যুদ্ধাপরাধী মো. নুরুল আমিন হাওলাদারসহ রাজাকার বাহিনীর অন্য সদস্যরা পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার হাতালিয়া এলাকা ও চরখালী এলাকায় অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজ করেন। রাজাকার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে তিনি মানবতাবিরোধী কাজে সরাসরি অভিযুক্ত।

তিনি বলেন, নুরুল আমিন হাওলাদারসহ অন্য রাজাকাররা পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থানার পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের বৌদ্ধ বিহারী পল্লীর চিত্ত রঞ্জন বেপারী, সুধীস চন্দ্র বেপারী, স্বরৎ চন্দ্র মাঝি, রশিদ ঘরামী, ওপেন্দ্র নাথ মিস্ত্রি, গঙ্গাচর, নিরোধ চন্দ্র বালা, অমূল্য, সর্মূল্য ও অনন্ত চাষিকে গুলি করে হত্যা করেন। এ ছাড়া লুট, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধে তিনি জড়িত ছিলেন।

ওই ঘটনায় ২০১৫ সালে নিহত নিরোধ চন্দ্র বালার ছেলে বিজয় চন্দ্র বালা পিরোজপুর আদালতে নুরুল আমিন হাওলাদার ও তার সহযোগী অন্যান্য রাজাকারদের বিরুদ্ধে অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে একটি মামলা করেন। পরে আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল তদন্ত শুরু করে এবং ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর মামলার তদন্ত শেষ করে। তদন্ত শেষে ৩৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যের পরিপ্রেক্ষিতে নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে ভান্ডারিয়া থানার পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের সাতজনকে ধরে নিয়ে হত্যা, চরখালী গ্রামের সুরবালা দাসীকে ধর্ষণ, চরখালী গ্রামের চন্দ্র কান্তি মিস্ত্রি ও মনোরঞ্জন মিস্ত্রিকে ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং পূর্ব পশারিবুনিয়া ও হাতালিয়া গ্রামের ১৮ জনকে হত্যার অভিযোগ ছাড়াও অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট চারটি অভিযোগ আনা হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক একটি মামলা করা হয়। আসামির বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল নুরুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ট্রাইব্যুনাল দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে গত ২০২৩ সালের ২০ জুলাই তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধাপরাধী নুরুল আমিন হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র‍্যাব-২। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা উদ্যান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। 

/মাকসুদ/এসবি/ 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়