ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

আদালত থেকে হত্যা মামলার আসামির পলায়ন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৪, ১৯ জুন ২০২৫   আপডেট: ১৭:০২, ১৯ জুন ২০২৫
আদালত থেকে হত্যা মামলার আসামির পলায়ন

ফাইল ফটো

এজলাস থেকে আদালতেরর হাজতখানায় নেওয়ার পথে  পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়েছেন শরিফুল ইসলাম নামে অপহরণের পর হত্যা মামলার এক আসামি।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি পালিয়ে যান। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার অফিসার ইনচার্জ এসআই মো. রিপন মোল্লা এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্কুলছাত্র জিসান হোসেনকে অপহরণের পর হত্যা মামলাটি ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলামের আদালতে বিচারাধীন। এদিন মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। দুই আসামি শরীফুল ইসলাম এবং শাহিন মন্ডলকে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাদের এজলাসে তোলা হয়।

সাক্ষী দিতে আদালতে হাজির হন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জাকির হোসেন টিপু। তিনি এদিন সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য শেষে আসামিদের আদালত (দ্বিতীয় তলা) থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার পথে নিচ তলা থেকে পালিয়ে যান শরিফুল ইসলাম।

আদালতের সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা গেছে, দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য চার আসামিকে সঙ্গে নিয়ে আদালতের হাজত খানার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় পালিয়ে যাওয়া আসামি শরিফুল ইসলাম সবার সামনে ছিলেন। তাদের পেছন থেকে দড়ি ধরে হাঁটছিলেন ওই কনস্টেবল। এভাবে আদালত ভবনের নিচে সিঁড়ির কাছে পৌঁছালে ওই আসামি কৌশলে হাতকড়া খুলে দৌড় দেন। পরে তিনি পাশের একটা আদালতে যান। সেখানে গিয়ে পরিহিত সাদা শার্ট খুলে হাতে নেন।  পরে লাল টি-শার্ট পড়া অবস্থায় আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তিনি দৌড়ে পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে হাজতখানার অফিসার ইনচার্জ রিপন মোল্লা বলেন, “আসামিকে আদালত থেকে হাজতখানায়  নিয়ে আসার পথে কনস্টেবল শহিদুল্লাহকে আঘাত করে আসামি পালিয়ে যায়।”

২০১৮ সালের ১৯ জানুয়ারি দুপুরে খিলগাঁও থানাধীন সিপাহীবাগস্থ আত্মীয়ের বাড়িতে দাওয়াতে যান জিসান হোসেন। এরপর আর বাসায় ফেরেননি। পরিবার খোঁজাখুঁজি করেও তাকে খুঁজে পায়নি। পরদিন ভোর রাত ৪টার দিকে জিসানের মোবাইল থেকে তার বাবা মোফাজ্জল হোসেনের মোবাইলে তার ছেলেকে কিডন্যাপ করা হয়েছে জানিয়ে ম্যাসেজ আসে। ৩০ মিনিট পর ফোন করে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে জিসানকে মুক্ত করতে। এ ঘটনায় মোফাজ্জল হোসেন খিলগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

২৩ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে খবর পান, জিসানের বয়সী একটা ছেলের লাশ ঢাকা মেডিকেলে পড়ে আছে। সেখানে গিয়ে তিনি ছেলের লাশ সনাক্ত করেন। জানতে পারেন, বাড্ডা থানা পুলিশ আফতাব নগরস্থ আলমগীরের মাছের খামারের মধ্যে জিসানের দেহ চারটি ইট, মাফলার দিয়ে কোমরের সঙ্গে বাধা অবস্থায় পায়। পরে র‌্যাব জিসান হত্যায় জড়িত সন্দেহে শাহিন মিয়া ও শরিফুল ইসলামকে আটক করে।

জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবের কাছে তারা জানায়, ১৯ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মুক্তিপণের উদ্দেশ্য জিসানকে ভুল বুঝিয়ে খিলগাঁও থানাধীন মেরাদিয়া সিপাহীবাগের একটি রিকশা গ্যারেজ থেকে অপহরণ করে। সেখান থেকে বাড্ডা থানাধীন আফতাব নগরস্থ আলমগীরের মাছের খামারে নিয়ে জিসানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। লাশ গুম করতে জিসানের কোমরের সঙ্গে মাফলার দিয়ে চারটি ইট বেঁধে পানিতে ফেলে দেয়।

এ ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি মোফাজ্জল হোসেন খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি খিলগাঁও থানার ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ রাহাৎ খান দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। এখন পর্যন্ত মামলাটিতে ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

ঢাকা/এম/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়