ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

এসি ছাড়াই ঘর ঠান্ডা রাখার উপায়

লাইফস্টাইল ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১২, ৭ জুন ২০২৩   আপডেট: ১৯:১৭, ৭ জুন ২০২৩
এসি ছাড়াই ঘর ঠান্ডা রাখার উপায়

জ্যৈষ্ঠের খরতাপে পুড়ছে দেশ। রাতেও দিনের মতো তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। এই জ্বালাময় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে অনেকেরই সঙ্গী হয়ে উঠেছে এসি অথবা এয়ার কুলার। কিন্তু, অনেকের কাছে আবার এসি এখনো এক বিলাসিতার নাম। অথচ তাপদাহে কেবল ফ্যানের বাতাসে স্বস্তি পাওয়া মুশকিল হয়ে উঠছে।

এ প্রতিবেদনে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি তুলে ধরা হলো, যা আপনার ঘরের পরিবেশকে একদম ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করবে।

ভারী সুতি পর্দা ব্যবহার করুন: কথায় আছে, প্রতিকার করার থেকে প্রতিরোধ করা ভালো। ঘরের জানালা দিয়েই যেহেতু বেশিরভাগ তাপ প্রবেশ করে, তাই আপনার প্রয়োজন সেই তাপপ্রবাহ আটকে রাখা। এজন্য জানালায় ভারী সুতি পর্দা ব্যবহার করুন। এ ধরনের পর্দা ঘরে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এতে ঘর থাকবে ঠান্ডা। ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা ভালো থাকলে, দিনের বেলা জানালা বন্ধ রাখতে পারেন। 

সূর্যাস্তের পর জানালা খোলা রাখুন: যেহেতু দিনের বেলা এখন বাতাস গরম থাকছে, তাই চেষ্টা করবেন দুপুরের সূর্যের প্রখর তাপ ঘরে না আসতে দিতে। তবে সূর্যাস্তের পরে যখন তাপমাত্রা কিছুটা কমে যায় এবং ঠান্ডা বাতাস দেওয়া শুরু করে তখন জানালা-দরজা খুলে দিন, যাতে বাতাস ঘরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে। ঠান্ডা বাতাসে ঘরের গুমোট হাওয়া তাড়ান। 

সাদা রঙের চাদর ব্যবহার করুন: গ্রীষ্মে আপনার ঘর শীতল রাখতে চাইলে এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। সাদা বা হালকা রঙয়ের সুতির কাপড় বিছানার চাদর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। বিছানার চাদর মোটা হলে ঘাম বেশি হয়। সাদা ও হালকা রঙের উপাদান তাপ শোষণ করে না, বরং প্রতিফলিত করে। এতে করে বিছানাপত্র তাপ ধরে রাখবে না। ঘরও থাকবে তুলনামূলক ঠান্ডা।

ঘরের চারপাশে গাছপালা লাগান: বাড়ি ঠান্ডা রাখার জন্য ঘরের চারপাশে গাছপালা লাগাতে পারেন। ছায়া দিতে পারে এমন গাছ পূর্ব-পশ্চিম অনুযায়ী লাগান, আপনার বাড়িতে সরাসরি সূর্যের তাপ ঢুকতে বাধা পাবে। ঘরের চারপাশে ঘাসজাতীয় গাছ থাকলে ঘর ঠান্ডা থাকে।

ঘরে রাখুন ছোট গাছ: ঘরের ভেতর ছোট্ট একটি গাছ, যেমন ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি তাপমাত্রা কমাতেও সাহায্য করে। গাছ ঘরের ভেতর জমা হওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নেয়, ফলে ঘরের তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকে। মানিপ্ল্যান্ট, অ্যালোভেরা, অ্যারিকা পাম-জাতীয় গাছ ঘরের সৌন্দর্যবর্ধন ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, উভয় কাজেই বেশ উপকারী।

দেয়ালে হালকা রঙের ব্যবহার: বলা হয়, সাদা রঙ সূর্যালোক অনেক বেশি প্রতিফলিত করে ফিরিয়ে দিতে পারে। যে কারণে গ্রীষ্মকালে সাদা রঙের পোশাক বেশি করে ব্যবহার করতে বলা হয়।। এই একই ফর্মুলা ব্যবহার করে ঘরের ছাদ সাদা রঙ করাতে পারেন। সূর্যালোক ছাদ থেকে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে গেলে, ঘর কম গরম হবে। রুমে ঠান্ডা অনুভূতি পাবেন। এছাড়া ঘরের ভেতর যতটা সম্ভব হালকা রঙ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এতে করে দিনের বেলা ঘর তাপ ধরে রাখবে না। ফলে আলো চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘর ঠান্ডা হতে শুরু করবে।

ভেজা ভেজা করে ঘর মুছুন: ঘরের তাপমাত্রা কম রাখতে একটু ভেজা ভেজা করে ঘর মুছুন। প্রয়োজন হলে একবারের পরিবর্তে ঘর মুছতে পারেন বেশ কয়েকবার। মেঝের পাশাপাশি জানালার কাচও পানি দিয়ে মুছুন। এতে বেশ কিছু সময় ঘর ঠান্ডা থাকবে।

ঘর রাখুন অন্ধকার: ঘরে আলোর পরিমাণ যত কম থাকে, ঘর তত বেশি ঠান্ডা থাকে। রাতে কাজ করলে চেষ্টা করবেন ঘর যতটা সম্ভব কম আলোকিত রাখতে। টিউবলাইটের পরিবর্তে এলইডি লাইট ব্যবহার করা গেলে ভালো। এতে করে ঘর তুলনামূলক ঠান্ডা থাকবে। 

চুলা বন্ধ রাখুন: চুলার গরম ঘরকে আরও উষ্ণ করে তোলে। তাই কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত চুলা বন্ধ করে দেওয়া ভালো। এতে ঘর বাড়তি গরম হবে না।

অপ্রয়োজনে বৈদ্যুতিক যন্ত্র বন্ধ রাখুন: যেকোনো সক্রিয় ডিভাইস চালু থাকলে তা নির্দিষ্ট কাজের পাশাপাশি কিছু শক্তি তাপ উৎপাদনে ব্যয় করে। এতে ঘর গরম হয়। তাই অব্যবহৃত যে কোনো কিছু বন্ধ করা উচিত। কম্পিউটার, টেলিভিশন, ওভেন, কিংবা এমন ডিভাইসগুলো ব্যবহার শেষে বন্ধ করে রাখা উচিত।

এক্সস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন: এক্সস্ট ফ্যান ঘরের গরম বাতাস বের করে দেয়। বাথরুম বা রান্না ঘরে এটা ব্যবহারে গরম ভাব কমায়। রাতে জানালা খোলা রাখার পাশাপাশি এক্সস্ট ফ্যান চালিয়ে রাখা ঘর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে।

বরফ পদ্ধতি: এটি ঘর ঠাণ্ডা রাখার জনপ্রিয় এবং প্রচলিত পদ্ধতি। টেবিল ফ্যানের সামনে বা সিলিং ফ্যানের নিচে একটি বাটিতে আইস কিউব বা বরফ রাখুন। এরপর ফ্যান চালান। কিছুক্ষণ পর যখন বরফগুলো গলতে শুরু করবে, তখন বাতাস ওই ঠান্ডা পানি শোষণ করবে এবং চারিদিকে ছড়িয়ে দেবে। ফলে, বরফের জন্য ফ্যানের হাওয়া ঠান্ডা হবে এবং সারা ঘরে ঠান্ডা বাতাস ছড়াবে।

তথ্যসূত্র: ফেমিনা ইন্ডিয়া, বোল্ড স্কাই

/ফিরোজ/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়