ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

প্রতিবন্ধী অধিকার ও সুরক্ষা কমিটি সক্রিয় করার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪০, ২১ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রতিবন্ধী অধিকার ও সুরক্ষা কমিটি সক্রিয় করার দাবি

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষাবিষয়ক কমিটি সক্রিয় করার দাবি জানিয়েছে প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদ (এনসিডিডব্লিউ)।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে সহযোগিতা করে ইএএসএইড, ব্লাস্ট, এনজিডিও, ব্লু ল ইন্টারন্যাশনাল।

লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিক ও সমাজকর্মী নাসরিন শওকত বলেন, দেশে প্রায় পৌনে ২ কোটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রয়েছেন। অথচ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ পাস হওয়া ছয় বছর অতিবাহিত হলেও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থার কোনো দৃশ্যমান উন্নতি ঘটেনি। প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির এই সাদৃশ্য না থাকার কারণ হিসেবে এটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষাবিষয়ক কমিটির কার্যকরহীনতা দায়ী বলে আমরা মনে করি।

সাতটি জেলার প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষাবিষয়ক কমিটির কাজের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ছয় বছরে ঢাকা জেলা কমিটির একটি সভাও হয়নি। তারা সভা আয়োজন করতে আগ্রহীও নয়। কুষ্টিয়া, বরিশাল, পাবনা, রংপুর ও টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সদস্যরা কমপক্ষে একবার ও সর্বোচ্চ তিনবার ত্রৈমাসিক সভা করেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে একাধিক সভা হওয়ায় সেখানে আলোচনার সুযোগ কম ছিল। চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সদস্যরা যথাসময়ে বা নিয়মিতভাবে এক বছর ধরে সভা করছেন। তবে কমিটির সদস্যরা খুব বেশি সচেতন না।

কমিটির নিষ্ক্রিয়তার কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারা ৩১ ও ৩৬ কার্যকর করা হয়েছে আইন প্রণয়নের দুই বছর পর অর্থাৎ ২০১৫ সালে। বিধিমালাও তৈরি হয়েছে একই সময়ে। ফলে পুরো আইন কার্যকর করা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। জাতীয় সমন্বয় কমিটির নির্বাহী কমিটি অনেক দেরিতে গঠিত হয়েছে। কয়েকটি জেলা অধিকাংশ উপজেলা ও শহর কমিটির ২০১৮ সাল পর্যন্ত গঠিত হয়নি। জাতীয় বা স্থানীয় পর্যায়ের কোনো কমিটির সভায় নিয়মিত আয়োজন করা হয় না। এর অন্যতম কারণ কমিটিগুলোর সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদধারী ব্যক্তি। এ কারণে তারা ব্যস্ত থাকেন। নিয়মিত কাজের পাশাপাশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষায় পর্যাপ্ত সময় পান না।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বিশেষ প্রতিবেদক মাহফুজা জেসমিন বলেন, আমরা প্রতিবন্ধীদের কথা ভাবি না। গত কয়েকদিন পেঁয়াজ নিয়ে আমরা যতটা আলোচনা করেছি এর তুলনায় ১ শতাংশও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আলোচনা করিনি। এ কারণে প্রতিবন্ধীরা তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিতে সরকারের বাইরে আমাদের সবার কাজ করতে হবে।

ব্লু ল ইন্টারন্যাশনালের প্রকল্প পরিচালক হেজি স্মিথ বলেন, প্রতিবন্ধীরা তাদের অধিকার আদায়ে সামনে আসতে পারেন না। নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। যেমন: তারা আদালতে মামলা করেন না। কারণ, সেখানে প্রতিবন্ধীদের চলাফেরার জন্য বা এজলাসে যাওয়ার জন্য বিশেষ সুবিধা নেই। বেশিরভাগ আদালতের এজলাস দ্বিতীয় তলায় হয়ে থাকে। সেখানে উঠতে তাদের সমস্যা হয়। বিচারপতির এজলাস নিচতলায়ও নিয়ে আসেন না। এ কারণে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা বিচারের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। অনেকে বলেন আদালতে মামলা করে জীবন নষ্ট করব নাকি?

প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদের সভাপতি নাছিমা আক্তার বলেন, বাংলাদেশের কতজন প্রতিবন্ধী আছেন তার নির্দিষ্ট হিসাব নাই। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৫ লাখ ৫৬ হাজার প্রতিবন্ধী দেশে রয়েছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, দেশে ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী রয়েছে। তাই প্রতিবন্ধীদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করে তাদের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হোক।

 

ঢাকা/নূর/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়