ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

২৩ মে পর্যন্ত বাড়লো লকডাউন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:২৬, ১৬ মে ২০২১   আপডেট: ১২:০৮, ১৬ মে ২০২১
২৩ মে পর্যন্ত বাড়লো লকডাউন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চলমান লকডাউন আরও এক সপ্তাহের জন‌্য বাড়‌ানো হয়েছে। ১৭ ম‌ে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত বিধিনিষেধ বাড়ানো সংক্রান্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব ইতিমধ্যে অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (১৫ মে) রাতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ঈদে বাড়ি যাওয়া জনস্রোত এর  ঢাকা ফেরা নিয়ে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে আরেকদফা লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত ফাইলে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। রোববার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। এতে আগের শর্তগুলোই বহাল থাকবে।

জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঈদ পরবর্তী সময়ে মানুষ যাতে ঘরবাড়ি থেকে বের না হয়, যে যেখানে আছে যেন সেখানেই থাকে। মূলত ঈদ পরবর্তী মানুষের অবাধ চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি সাধনে চলমান লকডাউন আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। 

সূত্র আরও জানায়, এবারের লকডাউনে আগের বিধিনিষেধসহ নতুন করে মাস্কপরাসহ শতভাগ স্বাস্থ‌্যবিধি নিশ্চিত করতে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ দিতে পারে। বিশেষ করে এ ক্ষেত্রে পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া হতে পারে।

এর আগে বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছিলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে ১৬ মে’র পর থেকে আরেক দফা লকডাউন বাড়ছে। এসময় মাস্ক পরা শতভাগ নিশ্চিত করতে পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হতে পারে।

জনপ্রশাস মন্ত্রণালয়ের থেকে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারি ছুটিতে কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়। শহর ও জেলার ভেতরে ছাড়া গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েও তেমন লাভ হয়নি। এতকিছুর মধ্যেও ঈদুল ফিতরে মানুষ বাড়িঘরে গেছেন। ঈদের পর ওইভাবে যদি আবার ফিরে আসে তাহলে সংক্রমণ বাড়তে পারে।

তাছাড়া ঈদে অবাধ বেড়ানোসহ নানা কারণে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এসব চিন্তা ভাবনা করে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন‌্য আরও এক সপ্তাহ চলমান লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

জানা গেছে, ঈদে যেসব মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে গেছে, তারা কীভাবে ফিরবে, বিধিনিষেধে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে। তাছাড়া শর্ত সাপেক্ষ সীমিত সময়ের জন‌্য গণপরিবহন চলবে কিনা, নাকি আগের মতই বন্ধ থাকবে। এ বিষয়েও সিদ্ধান্ত আসতে পারে সরকারের পক্ষ থেকে।

এদিকে লকডাউন বাড়ানো হলেও গণপরিবহন চালু করার জন‌্য মালিক সমিতি ও শ্রমিকরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। তারা দাবি আদায়ে মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করছে। গণপরিবহন চালু করা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকিও দিয়েছে শ্রমিকরা। বর্তমান লকডাউন তথা বিধিনিষেধে একই জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলতে পারছে। তবে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় গণপরিবহন বন্ধ আছে। এ ছাড়া যাত্রীবাহি নৌযান ও ট্রেনও আগের মতো বন্ধ আছে। তবে গত ২৫ এপ্রিল থেকে দোকান ও শপিং মল খুলে দেওয়া হয়েছে। খোলা আছে ব্যাংকও। এ ছাড়া জরুরি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত অফিসগুলোও খোলা রাখা হয়েছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের চলমান বিধিনিষেধ রোববার (১৬) মে শেষ হচ্ছে। চলতি বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও দুদিন বাড়ানো হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। সেটি পরে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এরপর আবার তা ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়, যা আবার বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এখন রোববার থেকে আরেকদফা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

নঈমুদ্দীন/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়