ঢাকা     শনিবার   ০৪ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২১ ১৪৩১

আয় বিবেচনায় জোনভিত্তিক গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের প্রস্তাব স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১৭, ২৬ অক্টোবর ২০২২   আপডেট: ২০:১৭, ২৬ অক্টোবর ২০২২
আয় বিবেচনায় জোনভিত্তিক গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের প্রস্তাব স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর

মানুষের আয় বিবেচনায় নিয়ে জোনভিত্তিক পানি, বিদুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রাজধানীতে শ্রেণি ভেদে মানুষের আয়ের তারতম্য রয়েছে। পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণে মানুষের আয়ের বিষয়কে বিবেচনায় রাখতে হবে। এ জন্য জোনভিত্তিক পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের দাম নির্ধারণ করা যৌক্তিক।’  

বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ‘নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসন ও নাগরিক সুবিধাসমূহ: প্রেক্ষিত ঢাকা’ শীর্ষক নগর কথা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ অভিজাত এলাকায় বসবাসরত মানুষ যে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে যাত্রাবাড়ী অথবা পুরান ঢাকার মানুষ তা পায় না।’

তিনি জানান, যে কোনও শহরেই সব শ্রেণির মানুষের প্রয়োজন রয়েছে। একইভাবে রাজধানী ঢাকায়ও সব শ্রেণির মানুষের প্রয়োজন আছে। তাই সব শ্রেণির মানুষের জন্য সুন্দর ও নিরাপদ জীবনযাপনের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা শহরে উন্মুক্ত স্থান ও গাছপালা ধ্বংস করে একের পর এক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। নগরে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা করা হচ্ছে। এগুলো কেন করা হচ্ছে, কার পরামর্শে হচ্ছে? সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। এখন সময় এসেছে নগরে ভবন নির্মাণ করতে গেলে অবশ্যই সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিতে হবে। সবুজ এলাকা ও উন্মুক্ত স্থান ধ্বংস করে কিছু করতে দেওয়া হবে না। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাবতে হবে।’

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘এয়ারপোর্ট সড়কে বনানী চেয়ারম্যান বাড়ীর সামনে সিটি ফরেস্ট ছিল, সেটা ধ্বংস করে কেন সেতু ভবন করা হয়েছে? সেতু ভবনের পাশে আবার বিআরটিএ ভবন করা হয়েছে। কিছুদিন আগে আবারও গাছপালা কেটে ভবন নির্মাণ করতে গেলে আমি বন্ধ করে দেই। ড্যাপের মধ্যে এবং নগর পরিকল্পনায় এই জায়গাগুলোতে যদি সিটি ফরেস্ট থাকে তাহলে ভবন ভাঙতে হবে। নগরের প্রয়োজনে, জনগ‌নের স্বা‌র্থে যে কোনও ভবন ভাঙতে হবে।’

সব বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘যে‌কোনও কা‌জ দে‌শের স্বা‌র্থে ও দ‌শের স্বার্থে হ‌লে আমি আপনা‌দের সঙ্গে যোগ দে‌বো। য‌দি নি‌জের স্বা‌র্থে হ‌য় তাহ‌লে আমি আপনা‌দের সঙ্গে সেই। সুন্দর নগরায়ণ কর‌তে গেলে সবাই‌কে এক স‌ঙ্গে কাজ কর‌তে হ‌বে। অন‌্যা‌য়ের প্রতিবাদ কর‌তে হ‌বে। মিরপুর প্যারিস রোড সংলগ্ন মাঠটি প্লট আকারে কীভাবে বরাদ্দ দেওয়া হলো? ষাটের দশকে মাস্টার প্লানে ও ১৯৮৭ সালের ন্যাশনাল হাউজিং অথরিটির লেআউটেও এটি উন্মুক্ত স্থান হিসেবে দেখানো আছে। ড্যাপের নকশায়ও এটি উন্মুক্ত স্থান হিসেবে রয়েছে। এখানে কিছুতেই প্লট হতে পারে না।’

এসময় তি‌নি বর্তমান জলবায়ুর উদাহরণ টে‌নে ব‌লেন, ‘আমরা প‌রি‌বেশ ধ্বংস ক‌রে‌ছি। এখন প‌রি‌বেশ সেই ধ্বং‌সের প্রতি‌শোধ নি‌চ্ছে।’

খাল উদ্ধার ও নদী বাঁচাতে হ‌বে জা‌নি‌য়ে মেয়র ব‌লেন, ‘ঢাকার নদী বাঁচাতে হ‌বে আর নদী বাঁচা‌তে হ‌লে খাল খনন কর‌তে হ‌বে। ঢাকার খাল‌কে বাঁচাতে হ‌লে সিএস দা‌গের মাধ‌্যমে সীমানা নির্ধারণ করতে হ‌বে। মহানগর জরিপ অনুসরণ করলে শহরকে বাঁচানো যাবে না। কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ড দখল হয়ে গেছে। এগুলো উদ্ধারে আমরা কাজ করছি। খাল উদ্ধা‌রে সীমানা পিলার লাগা‌নো শুরু করেছি।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএনসিসির প্রধান পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম। অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন– সেন্টার অব আরবান স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, জাতিসংঘ উন্নয়ন বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও বিশিষ্টজনরা।

আসাদ/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়