সশস্ত্র বাহিনীকে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তর করেছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ফটো)
আওয়ামী লীগ সরকার সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি অংশকে ত্রিমাত্রিকে রূপান্তর করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিটি বাহিনীকে ত্রিমাত্রিকভাবে তৈরি করেছি, যাতে তারা যেকোনো প্রয়োজনে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে পারে।
রোববার (৭ জুলাই) ঢাকা সেনানিবাসে পিজিআর সদর দপ্তরে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
পিজিআরের সদস্যরা বৃষ্টি, ঝড়, প্রচণ্ড গরম-সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তাদের শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭৫ সালের ৫ জুলাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পিজিআর প্রতিষ্ঠা করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিজিআর এখন স্মার্ট ফোর্স হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান ও জাতির পিতার পরিবারের সদস্যসহ ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা দিতে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে পিজিআর। এছাড়া বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
পিজিআর সদস্যদের উন্নয়নে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি জানি, আমার জীবনটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে যারা দায়িত্ব পালনে আসনে তারাও ঝুঁকি নিয়েই আসেন। তাই তাদের নিরাপদ জীবনের জন্য পরিবার পরিজনের পাশাপাশি আশেপাশে যারা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন তাদের জন্যও দোয়া করেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমি আমাদের প্রিয় গার্ডদের বলবো যে ‘নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাই গার্ডদের লক্ষ্য’ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যাবধি এই রেজিমেন্টের সদস্যরা সাহস, আন্তরিকতা, পেশাগত দক্ষতা, সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা এবং দেশপ্রেমের শপথে বলিয়ান হয়ে সর্বদা দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
‘আপনাদের এই কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার, নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পেশাগত অনুশীলনের মাধ্যমে এই গার্ড রেজিমেন্ট আগামীতে আরও দক্ষতা অর্জন করবে,’ বলেও আশবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাস করে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সব থেকে বেশি অবদান রেখে যাচ্ছে এবং কর্তব্য পালনস্থলের মানুষের হৃদয়ও তারা জয় করে আনেন উল্লেখ করে তিনি জানান, সেটার জন্য তিনি গর্বিত।
প্রধানমন্ত্রী জানান, গাজায় ইসরাইল যে গণহত্যা চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফোরামে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় ফিলিস্তিনিদের পাশে আছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যেভাবে শিশু ও নারীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে এবং মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে তা সত্যিই সহ্য করা যায় না। আমরা সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি এবং ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াই।
বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগকে দীর্ঘমেয়াদে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যার ফলে তার সরকার সফলভাবে দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পেরেছে।
বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।
প্রধানমন্ত্রী দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে কৃচ্ছ্রসাধন ও উৎপাদন বাড়াতে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রেই সবাইকে কিছুটা হলেও কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে। আমরা যদি কৃচ্ছ্রসাধন ও উৎপাদন বাড়িয়ে এগিয়ে যেতে পারি তাহলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারব।
নিরাপত্তা দায়িত্ব পালনকালে নিহত পিজিআরের শহীদ সদস্যদের পরিবারের কাছে অনুদান ও উপহার সামগ্রী হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিজিআর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খালেদ কামাল।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং তিন বাহিনীর প্রধান।
পারভেজ/ইভা