ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

অসম চুক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৪, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৭:৩৩, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
অসম চুক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বুধবার সচিবালয়ে সীমান্ত সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শে‌ষে সাংবা‌দিক‌দের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত সীমান্ত-সংক্রান্ত সব ধরনের অসম চুক্তি নিয়ে আসন্ন সীমান্ত সম্মেলনে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বিজিবি-বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের এ সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শে‌ষে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবা‌দিক‌দের প্রশ্নের জবা‌বে তি‌নি এ কথা জানিয়েছেন। ভারতের নয়াদিল্লিতে আগামী ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৫তম সম্মেলন হবে।

উপদেষ্টা বলেছেন, “২০১১ সালে ভারতের সাথে বাংলাদেশের তিন বিঘা ও দহগ্রাম করিডোর নিয়ে একটি অসম চুক্তি হয়েছে। মহিষাশন (ভারত)-কুলাউড়া (বাংলাদেশ) আন্তঃদেশীয় রেলপথের কুলাউড়া রেল স্টেশন সীমান্ত থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার ভিতরে অবস্থিত। আমরা তাদেরকে আমাদের বর্ডারের তিন কিলোমিটার ভিতরে আসতে দেব না। সেখানে সীমান্তের সন্নিকটে কাস্টমসসহ একটা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হবে।”

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “সীমান্তে ১৫০ গজের মধ্যে কোনো কাজ করতে হলে দুই পক্ষের অনুমতি নিতে হয়৷ এগুলো একপক্ষে করার নিয়ম নেই৷ একটা মসজিদ বা মন্দির করতে হলে দুই দেশের সম্মতি নেওয়া প্রয়োজন৷ আগামীতে কিছু করতে হলে যেন তারা সম্মতি নেয়, এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে৷”

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে আস্থা বাড়াতে বাংলাদেশ কোনো ছাড় দেবে কি না, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “শুধু ছাড় দিয়ে কিন্তু আস্থা বাড়ানো যায় না। আলোচনার মাধ্যমেও আস্থা বাড়ানো যায়।”

তিনি বলেন, “সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয়রা অনেক সময় ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন মাদক তৈরি করে আমাদের দেশে ঢুকিয়ে দেয় ৷ যদিও তারা বলে, ফেন্সিডিলগুলো ওষুধ হিসেবে তৈরি করছে। আসলে এটা মাদক হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে।”

“বৈঠকে ভারতীয় গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা সংবাদ প্রচার বন্ধের বিষয়েও আলোচনা করা হবে। এ বিষয়ে আমাদের গণমাধ্যম ও দেশের জনগণ খুবই সোচ্চার।”

ভারতে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে সীমান্ত সংক্রান্ত ‌১২টি ইস্যু নি‌য়ে আলোচনা হবে। সেগুলো হলো-
১। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক/ভারতীয় দুষ্কৃতকারী কর্তৃক সীমান্ত হত্যা/সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো বন্ধ করা।

২। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের ধরে নিয়ে যাওয়া/আটক বন্ধ করা।

৩। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক সীমানা লংঘন/অবৈধ পারাপার/অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।

৪। ভারত থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা ও ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক দ্রব্য চোরাচালান প্রতিরোধ।

৫। সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে ভারত কর্তৃক অনুমোদনহীন উন্নয়নমূলক অবকাঠামো নির্মাণকাজ এবং বিএসএফের বাধায় বন্ধ থাকা বাংলাদেশ পার্শ্বের উন্নয়নমূলক কাজ নিষ্পত্তি করা।

৬। আগরতলা থেকে আখাউড়ার দিকে বর্জ্য পানি প্রবাহিত হয়, এরকম চারটি খালে পানি শোধনাগার স্থাপন।

৭। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী নদীগুলোর পানির সুষম বণ্টন, নদী থেকে পানি উত্তোলন, পানি চুক্তি বাস্তবায়ন এবং রহিমপুর খালের মুখ পুনঃউন্মুক্তকরণ।

৮। বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক/ভারতীয় দুষ্কৃতকারী/অপরাধী কর্তৃক আন্তর্জাতিক সীমানা লংঘন করে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ রোধ করা।

৯। বিতর্কিত মুহুরীর চর এলাকায় বর্ডার পিলার স্থাপনের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করা।

১০। বাংলাদেশের বর্তমান বিরজমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো বন্ধ করা।

১১। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য ‘কার্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা।

১২। পারস্পারিক আস্থা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়