ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জুলাই-আগস্টে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৭:০৮, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
জুলাই-আগস্টে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন

ফাইল ফটো

গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানকালে বাংলাদেশে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। এ সময়ে ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডগুলো গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংঘটিত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১২ থেকে ১৩ শতাংশই ছিল শিশু। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা আছেন।

গণঅভ্যুত্থানের সময়ে হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে জাতিসংঘ বলছে, তারা বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, যারা সরাসরি বিক্ষোভ পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো জানিয়েছে যে, কীভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য ক্ষেত্রের কর্মকর্তারা একাধিক বৃহৎ আকারের অভিযানের নির্দেশনা দেন ও তদারকি করেন। যেখানে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যা করেছিল বা নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করেছিল। 

নিরাপত্তা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে এবং অবৈধভাবে বিক্ষোভকারীদের হত্যা বা পঙ্গু করার সঙ্গে জড়িত ছিল। এর মধ্যে এমন ঘটনাও ছিল—যেখানে বিক্ষোভকারীদের পয়েন্ট জিরো দূরত্ব থেকে গুলি করা হয়েছিল। 

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, “এই নৃশংস প্রতিক্রিয়া ছিল সাবেক সরকারের একটি পরিকল্পিত এবং সমন্বিত কৌশল। তারা জনতার বিরোধিতার মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চেয়েছিল। বিক্ষোভ দমন করার কৌশলের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে, তাদের সমন্বয় ও নির্দেশনায় শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক এবং নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।”

ভলকার তুর্ক আরো বলেন, ‘আমরা যে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছি, তা ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং লক্ষ্যভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের এক উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে। বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য দায়বদ্ধতা এবং ন্যায়বিচার অপরিহার্য।”

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে একটি দল পাঠায়, যার মধ্যে মানবাধিকার কর্মকর্তা, এক জন ফরেনসিক চিকিৎসক এবং একজন অস্ত্র বিশেষজ্ঞ ছিলেন। 

অন্তর্বর্তী সরকার তদন্তের ব্যাপারে ব্যাপক সহযোগিতা করেছে, প্রবেশাধিকারের অনুমতি দিয়েছে এবং যথেষ্ট নথিপত্র সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকা/হাসান/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়