ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জুলাই আন্দোলনকে ৭১’র সঙ্গে তুলনা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তোপের মুখে সিভিল সার্জন

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৭, ২৬ মার্চ ২০২৫   আপডেট: ১৪:২৮, ২৬ মার্চ ২০২৫
জুলাই আন্দোলনকে ৭১’র সঙ্গে তুলনা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তোপের মুখে সিভিল সার্জন

বুধবার ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে তুলনা করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তোপের মুখে পড়েছেন ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান।

বুধবার (২৬ মার্চ) ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৫ উদযাপন অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। পরে ক্ষমা চান সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান।

আজ বেলা ১১টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমে অতিথিবৃন্দ আসন গ্রহণ করেন, এরপর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করেন জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ। সমাবেশ ও কুচকাওয়াজের পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বরণ করে নেওয়া হয়। পরে আগত অতিথিরা বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন।

এক পর্যায়ে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান।

তিনি বলেন, “১৯৭১ সালের আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম তার এখনো অপূর্ণতা রয়ে গেছে। যার কারণে ২০২৪ সালে জুলাই আন্দোলন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন সংবর্ধনা দিয়েছি, জুলাই আন্দোলনকারীদেরও সংবর্ধনা দেব।”

জিল্লুর রহমান বলেন, “যে দুই কারণে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধ হয়েছিলো একই কারণে ২০২৪ এ যুদ্ধ হয়েছে। বার বার যুদ্ধ করেছি।” 

এ সময় সামনে বসে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। তারা আসন থেকে উঠে এর প্রতিবাদ করেন। তারা বলেন, “আপনি বলছেন একই কারণে যুদ্ধ হয়েছে। একই কারণে না। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার যুদ্ধের সঙ্গে ২০২৪ এর আন্দোলনে তুলনা হয় না। আপনার কথা উইড্রো করেন। আপনি নেমে যান।” 

পরে ক্ষমা চান সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান। 

সেখানে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ২১। মায়ের একমাত্র ছেলে আমি। যুদ্ধে তখন জোয়ান ছেলে মেয়েদের ধরে নিয়ে মেরে ফেলা হয়। আমার মা তখন বলেছিলেন, তোমারে পাকিস্তানিরা ধরে নিয়ে মেরে ফেলবে। তুমি মুক্তিযুদ্ধে চলে যাও। তুমি যদি শহীদ হও, আমার কোনো কষ্ট থাকবে না। ভারতে গিয়ে গেরিলা ট্রেনিং নিয়ে ১১ নম্বর সেক্টরে নয় মাস যুদ্ধ করি। এসময় জঙ্গলে জঙ্গলে পড়ে রয়েছি। পোকায় খাইছে, গায়ে ঘা হয়ছে। খাবার ঠিক মতো পাই নাই। আমাদের ট্রেনিং ছিলো রাতের বেলা। পাকিস্তানি সেনাদের ভয়ে দিনের বেলা বের হতে পারতাম না। এতো কষ্ট করে দেশ স্বাধীন করছি। আমরা কোনো বিনিময় চাইনি। রাষ্ট্র আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তান উপাধি দিয়েছে। আমাদের সম্মাননা দিয়েছে। আমরা খুশি হয়েছি। কিন্তু এখানে যখন মুক্তিযুদ্ধ ও ২৪ এর জুলাইকে এক বলা হয়, তখন আমাদের কষ্ট লাগে। আমাদের সম্মানে আঘাত লাগে। সেজন্য আমরা প্রতিবাদ করেছি। ৯ মাস আমরা যুদ্ধ করেছি, আর ওনারা আন্দোলন করেছেন। সরকারের ভুলের কারণে ছাত্ররা কোটা আন্দোলন করেছে।”

ঢাকা/মামুন/ইভা 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়