ঢাকা     সোমবার   ১৪ জুলাই ২০২৫ ||  আষাঢ় ৩০ ১৪৩২

এনসিসি’র জবাবদিহিতার সুনির্দিষ্ট কাঠামো নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ১৮ জুন ২০২৫   আপডেট: ২২:৫১, ১৮ জুন ২০২৫
এনসিসি’র জবাবদিহিতার সুনির্দিষ্ট কাঠামো নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, “জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলকে (এনসিসি) সাংবিধানিকভাবে বিপুল ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হলেও তাদের জবাবদিহিতার সুনির্দিষ্ট কাঠামো নেই, যা গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থি।” 

বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “রাষ্ট্রপতিকে প্রধান করে ৯ সদস্যের জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত কাউন্সিল গঠনে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, উচ্চ ও নিম্নকক্ষের স্পিকার, বিরোধী দলের নেত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং বিরোধী দল মনোনীত ডেপুটি স্পিকারের অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে যদি অথরিটি ও ফাংশন থাকে, কিন্তু জবাবদিহিতা না থাকে, সেই প্রতিষ্ঠান গণতন্ত্রবিরোধী হয়ে ওঠে। এই ফাংশনগুলো আলাদা করে নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরির মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভারসাম্য নষ্ট হবে।”

আরো পড়ুন:

বিএনপির এই নেতার মতে, রাষ্ট্র পরিচালনার ভারসাম্যমূলক কাঠামো গড়ে তুলতে হলে প্রথমে নির্বাহী বিভাগ এবং সংসদকে স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ থেকে বের করে আনতে হবে। এজন্য প্রয়োজন স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ও কার্যকর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার কথা জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকলে অতীতের অনেক নির্বাচনের অনিয়ম রোধ করা যেত। কেয়ারটেকার সরকার ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন থাকলেই নির্বাহী বিভাগ ও সংসদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা সম্ভব।”

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির অবস্থান:
বর্তমান সংসদীয় ব্যবস্থায়, জাতীয় সংসদের সদস্যদের ভোটেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মনে করে বিএনপি। ৭০ হাজার স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিকে ভোটার করে নির্বাচন করার প্রস্তাব তাদের কাছে এখনই গ্রহণযোগ্য নয়।

এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “ভবিষ্যতে যদি সংসদীয় আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সমঝোতা হয়, তখন তা বিবেচনার বিষয় হতে পারে।”

নির্বাচন কমিশন বিষয়ে সালাহউদ্দিন জানান, বর্তমানে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যে আইন রয়েছে, সেটি দুর্বল এবং অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের অনুপযুক্ত। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন এখন কার্যকর হলেও ভবিষ্যতের জন্য শক্তিশালী আইন প্রণয়নের আহ্বান জানান তারা।

তিনি প্রস্তাব করেন, নির্বাচন কমিশনের জবাবদিহিতা আইনের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিশনারদের অপসারণের বিধান থাকলেও আরো কিছু খুঁটিনাটি আইন তৈরি করতে হবে, যেন মিসকন্ডাক্ট বা অপব্যবহারের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়।

মানবাধিকার কমিশন, দুদকসহ অন্যান্য সাংবিধানিক ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জন্যও শক্তিশালী, স্বচ্ছ ও কার্যকর আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন আহমদ।

দুদকের বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, “বর্তমান আইনের দুর্বলতা ও রাজনৈতিক প্রভাবে দুদক দুর্নীতির অংশ হয়ে গেছে। সেজন্য তাদের জন্য পৃথক, শক্তিশালী ও স্বচ্ছ আইন দরকার।”

ঢাকা/রায়হান/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়