ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

শেখ কামাল: ট্র্যাজেডির নায়ক

ড. তানভীর আহমেদ সিডনী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৩, ৫ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ১৬:৪২, ৫ আগস্ট ২০২১
শেখ কামাল: ট্র্যাজেডির নায়ক

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় সন্তান শেখ কামাল আলোচিত ও সমালোচিত নাম। তাঁকে কেন্দ্র করে সমালোচনার প্রধান কারণ অপ্রাপ্তি ও বেদনা থেকে। মূলত ৭১-এর পরাজিত শক্তি এবং মুক্তিযুদ্ধে যথাযথ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ বামপন্থিদের একাংশ ৭৫ পরবর্তী সময়ে এই সমালোচনার নেতৃত্ব দিয়েছে। তাকে নানা অপবাদ দিয়ে ঋণাত্মক চরিত্রের মানুষ হিসেবে উপস্থাপনের প্রয়াস ছিল। আমরা যারা পঁচাত্তর পরবর্তী প্রজন্ম, তারা অনেক বেশি এই সমালোচনা শুনেছি। শেখ কামাল যেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে ট্রাজেডির নায়ক। মাত্র ২৬ বছরের জীবনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, একটি ক্রীড়া সংগঠন গড়ে তোলা, একইসঙ্গে সংস্কৃতি অঙ্গনে সক্রিয়া থাকার পাশাপাশি রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সক্রিয় থাকা- তাঁর এই অর্জন পরাজিত শক্তি তো বটেই অনেকেই মেনে নিতে পারেননি।

রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন, বাবা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের বিপুল বিস্তারী নক্ষত্র। কিন্তু বাবার ক্ষমতা ব্যবহার না করে আদর্শ বহন করেছেন। নিজেকে রাজনৈতিক নেতার সন্তান ভাবার চেয়ে আদর্শকর্মী হিসেবে বিবেচনা করেছেন। এক বিশেষ সময়ে এদেশের রাজনীতির পথে পা বাড়িয়েছিলেন। কিন্তু পদ কিংবা ক্ষমতাচর্চা তাঁর অভিপ্রায় ছিল না। মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী সময়ে দলের ছাত্র সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করেছেন। উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক ও জননেতা তোফায়েল আহমেদ শেখ কামালকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে এক সাক্ষাৎকারে বলেন: ‘৬৯-এ পাকিস্তানি সামরিক জান্তা সরকার ধর্মীয় উগ্রতার পরিচয় দিয়ে রবীন্দ্রসংগীত নিষিদ্ধ করে। শেখ কামাল তখন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীদের সংগঠিত করেন এবং রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি খ্যাতিমান শিল্পী জাহিদুর রহিমকে দিয়ে বিভিন্ন সভা ও অনুষ্ঠানে গাওয়ানোর উদ্যোগ নেন।”

এই মূল্যায়ন থেকে বলা যায়, রাজনীতিমাত্রই তাঁর কাছে সভা-সমাবেশ ছিল না। মাত্র ২০ বছর বয়সে জাতির জাতীয়তাবোধ তৈরির ক্ষেত্রে তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর কাছে ছিল অহিংস প্রতিবাদের মাধ্যম। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক সংগ্রামে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। যে কারণে দেশের প্রয়োজনে হাতে অস্ত্র তুলে নিতেও পিছপা হননি। মাত্র ২২ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যুদ্ধে যোগ দেন। ভারতের বেলুনিয়া থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম কমিশন পাওয়াদের একজন ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে এমএজি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশ স্বাধীনের পর সেনাবাহিনী ছেড়ে বিদ্যার্জন ও দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। অথচ ট্র্যাজেডি এই যে, মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালকে স্বাধীন দেশে বিপথগামী সেনা সদস্যদের হাতে মৃত্যুবরণ করতে হয়।

রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক কাজেও শেখ কামাল অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৬৬ সালে তিনি গড়ে তোলেন আবাহনী সমাজ কল্যাণ সমিতি। এই সংগঠন করার ক্ষেত্রেও তিনি গণতান্ত্রিক চর্চা করেছেন। ধানমন্ডি এলাকার প্রত্যেক বাড়িতে নাম চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। অনেকের দেওয়া নাম থেকে নির্ধারিত হয়েছিল ‘আবাহনী’ নামটি। তিনি পরিবারের সদস্যদের এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। বড় বোন শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহানাকে দুই টাকা চাঁদা দিয়ে এই সংগঠনের সদস্য করা হয়। সে সময়ে আবাহনী বাঙালির বিভিন্ন দিবস উদযাপন করে। স্বাধীনতার আগেই ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল এই সমাজ কল্যাণ সমিতি। শেখ কামালের মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন ফুটবল টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান। স্বাধীনতার পর ধানমন্ডির এই সমাজ কল্যাণ সমিতিকে আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়া সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। যেহেতু নিজে ফুটবল, হকি, বাস্কেটবল ও ভলিবল খেলা জানতেন তাই একটি ক্রীড়া সংস্থা গড়ে তোলার তাগিদ ছিল ভেতর থেকেই।

শেখ কামাল ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে জাতীয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় খেলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট দলের সহ-অধিনায়ক হিসেবে। আর ভলিবল খেলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন করেন নিজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগকে। বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাডমিন্টনেও তার উজ্জ্বল উপস্থিতি, দ্বৈতে একবার রানার্সআপ হন মুরাদ লতিফের সঙ্গে জুটি বেঁধে। ১৯৭৫ সালে সলিমুল্লাহ হলের বার্ষিক ক্রীড়ায় জেতেন ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। এ থেকে বোঝা যায় খেলা ছিল তাঁর রক্তে।
১৯৭৪ সালে আবাহনী আইরিশ ফুটবল কোচ এনেছিল খেলোয়াড়দের মানোন্নয়নের জন্য। সেটা ছিল উপমহাদেশে কোনো একটি ফুটবল ক্লাবে ইউরোপীয় কোচের আগমন। তিনি এতো কিছু করলেও আবাহনীর কোনো পদে ছিলেন না। ১৯৭৫ সালে সবার অনুরোধে ক্লাবের সভাপতি হয়েছিলেন। সে সময়ে তার স্ত্রী সুলতানা কামালের সহায়তায় আবাহনীর জন্য মেয়েদের উইং করতে চেয়েছেন। তার স্বপ্ন ছিল এই ক্রীড়া সংস্থাকে কেন্দ্র করে ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরি হবে। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ মাত্র তিন বছরে আবাহনীর চেহারাই বদলে দিয়েছেন যার মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন জোয়ার এসেছিল। তিনি এই ক্লাবে প্রচুর সময় দিতেন, এমনকি মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও ক্লাবে এসেছিলেন। আবাহনীর সাথে কতটা অবিচ্ছেদ্য ছিলেন এর একটা উদাহরণ হলো, ১৯৭৫ সালে বড় বোন শেখ হাসিনা জার্মানি গেলেন। স্বাভাবিকভাবেই ছোট ভাইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিলেন সেখান থেকে ভাইয়ের জন্য কী আনবেন। জবাবে শেখ কামাল নিজের জন্য কিছু চাননি। চেয়েছিলেন আবাহনীর খেলোয়াড়দের জন্য এডিডাস বুট। কোনো কালো টাকার মালিকের টাকায় প্রিয় ক্লাব যেন শক্তিশালী না হয় সেজন্য এর নিজস্ব আয় বাড়ানোর নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের জুলাই মাসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সার্কাস শো‘র আয়োজন করেছিলেন যা থেকে আবাহনীর আয় হয়েছিল ৪ হাজার ৪৪ টাকা।

জাতির জনকের তিন পুত্র

রাষ্ট্রপ্রধানের ছেলের ক্লাবে নিশ্চয়ই টাকা পাওয়া কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। মজুতদার, অবৈধ অর্থ উপার্জনকারী এই ক্লাবে টাকা দিয়ে নিজেদের বিপদ মুক্তির চেষ্টা করবে। তিনি সেই চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছেন। আর এদেশেরই এক শ্রেণির লোক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল ব্যাংক ডাকাতির! সুস্থ মস্তিষ্কে ভাবলেই এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। রাষ্ট্রপ্রধানের সন্তানের আয় করার জন্য ব্যাংক ডাকাতি করতে হয় না। ৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা লক্ষ্য করেছি, উন্নয়ন কাজের কমিশন, চাকরিপ্রদানসহ নানা কাজে দপ্তর তৈরি করে রাষ্ট্রপ্রধানের সন্তানের আয়ের খবর। দেশি-বিদেশি আওয়ামী বিরোধী চক্র তাঁর বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার নিরন্তর চালিয়েছে। মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী এ বিষয়ে ‘এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য: স্বাধীনতার প্রথম দশক’ গ্রন্থে আলোকপাত করেছেন। তিনি সেখানে ষ্পষ্ট লিখেছেন এসব প্রচারণায় সত্যের লেশমাত্র ছিল না।

শেখ কামাল বাস্কেটবল ও ক্রিকেট খেলতেন। ঢাকা ওয়ান্ডার্স ক্লাবের বাস্কেটবল দলে খেলেছেন তিনি। ক্রিকেটের পেস বোলার শেখ কামাল ঢাকার বাইরেও খেলতে গিয়েছেন। জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগের জুনিয়র এবং ছাত্রলীগকর্মী ও খেলোয়াড় সুলতানা কামালকে। সুলতানা কামাল মাত্র ১৩ বছর বয়সে লাহোরে ১৯৬৫ সালেই পাকিস্তানের বৈষম্যের প্রতিবাদ করেছিলেন। শেখ কামাল চাইলে কোনো আমলা বা ব্যবসায়ীর কন্যাকে বিয়ে করতে পারতেন। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছিলেন একজন খেলোয়াড়কে।  ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই বিয়ে হয় তাদের। যেহেতু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বিয়ে হয়েছে তাই বিয়েতে পাওয়া সব মূল্যবান উপহার সরকারি তোষাখানায় বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের তদারকিতে জমা দেওয়া হয়। অবশ্য একটি সোনার নৌকা আর একটি মুকুট স্মৃতি হিসেবে রেখে দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত সম্পদকে এভাবেই রাষ্ট্রের সম্পদ করে তোলেন বঙ্গবন্ধু পরিবার। 

সাহিত্যিক আবুল ফজলের স্মৃতিচারণায় আমরা দেখি এক বিনয়ী রাজনৈতিক কর্মীকে যিনি পিতার ক্ষমতা ব্যবহার করে কোনো সুযোগ গ্রহণ করেন না। কিংবা আবাহনীর কাজে ফরিদপুর যাবার পথে ফেরিতে সাধারণ মানুষের বাহন তুলে নেন। নিজেকে সাধারণের একজন ভাবতেন। সেটাই ছিল তাঁর জনপ্রিয়তার শক্তি।

সংস্কৃতি ক্ষেত্রেও শেখ কামাল নিজেকে যুক্ত রেখেছেন, ভালো সেতার বাজাতে পারতেন। শাস্ত্রীয় সংগীতে তিনি ছায়ানটের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে ওস্তাদ ফুল মোহাম্মদের কাছে তালিম নিয়েছেন। বাংলাদেশে সাধারণত খেলোয়াড়রা সংস্কৃতি অঙ্গনে সক্রিয় থাকে না। ব্যতিক্রম ছিলেন শেখ কামাল। আবাহনী ক্লাবে গিয়ে খেলোয়ারদের খাবার ও নাস্তার যেমন তদারকি করতেন, তেমনি থিয়েটারেও সক্রিয় ছিলেন। মঞ্চে তিনি অভিনয় করতেন। বাংলা একাডেমির মঞ্চে তাঁর অভিনয়ের একটি আলোকচিত্র পাওয়া যায়। তিনি নাটকের দলের সঙ্গে কলকাতা সফরে গিয়েছেন। সেখানে কলকাতার মঞ্চে মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকে অভিনয় করেন। মাত্র ২৬ বছরের জীবনে তার এতোসব কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়াই শেখ কামালের প্রতিভার চিহ্ন বহন করে। তাঁর বিনয়ের একটি ঘটনার বিবরণ শুনি এক ঘরোয়া আড্ডায়। তিনি শাহীন স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেছিলেন। স্বাধীনতার পর একদিন তাঁর স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষয়িত্রীকে নিউমার্কেটে দেখে এগিয়ে গিয়ে সালাম দিয়ে কুশলাদি জানতে চান।

এমনি অসংখ্য ঘটনা হয়তো জমে আছে অনেকের মনে। তারপরও তাঁকে প্রাণ দিতে হলো বিয়ের এক মাসের মাথায়। শুধু প্রাণই নয়, মৃত্যুর পরও নানা অপপ্রচারের স্বীকার হতে হয়েছে। এদেশে আধুনিক খেলার পথ প্রশস্ত করা। রবীন্দ্রপ্রেমী এক সংস্কৃতিকর্মীকে শুনতে হয়েছে অমুক্তিযোদ্ধা, ব্যাংক ডাকাত আর অপহরণকারীর অপবাদ। অথচ তাঁর বিয়ের প্রায় সব মূল্যবান উপহার তিনি রাষ্ট্রকে দিয়ে দিয়েছেন। মিউনিখ অলিম্পিকে গিয়ে রাষ্ট্রের টাকায় কোনো কিছু কিনেননি। তাঁর এই ট্র্যাজেডির কারণ তিনি জাতির পিতার সন্তান। তাই তাঁকে হুমকি মনে করেছে দেশবিরোধী শক্তি। তারা জানতো নিজেকে ধীরে ধীরে প্রস্তুত করছেন দেশ ও জনগণের পাশে থাকার জন্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় থাকা, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও দেশ স্বাধীনের পর নিশ্চিত জীবন ছেড়ে দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে সক্রিয় থাকা মানুষটি সত্যিই বদলে দিতে পারতেন দেশকে। ঘাতকেরা তা জানতো, তাই তাঁকে এবং তাঁর নববিবাহিতা স্ত্রীকে মধ্য আগস্টের রাতে হত্যা করেছিল। শেখ কামালের জন্মদিনে গভীর শ্রদ্ধায় তাঁকে স্মরণ করি।

লেখক: নাট্যকার, শিক্ষক, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়

আরো পড়ুন: যে পারিবারিক শিক্ষায় তাদের বেড়ে ওঠা

ঢাকা/তারা

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়