ঢাকা     মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

হজ পরবর্তী করণীয় ও বর্জনীয়

প্রকাশিত: ১৩:৫৪, ৩০ জুন ২০২৩  
হজ পরবর্তী করণীয় ও বর্জনীয়

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, এক উমরা আদায়ের পর পরবর্তী উমরা পালন করা মধ্যবর্তী গুনাহসমূহের জন্য কাফ্ফারাস্বরূপ। আর হজে মাবরুরের প্রতিদান হলো নিশ্চিত জান্নাত। (বুখারী: ১৭৭৩)

হযরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, কোনো হাজী সাহেবের সাথে তোমাদের সাক্ষাত হলে তাঁকে সালাম করবে, তাঁর সাথে মুসাফাহ্ করবে এবং তিনি নিজ গৃহে প্রবেশের পূর্বে তার নিকট দুআ কামনা করবে। কারণ তিনি নিষ্পাপ হয়ে ফিরে এসেছেন। (ইবনে মাযাহ: ৩০০৪)

প্রিয়নবী (সা.) আরো ইরশাদ করেন, হজ ও উমরাকারীগণ হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার মেহমান, তারা যদি আল্লাহর নিকট দুআ করে, তবে তিনি তা কবুল করেন। আর যদি তারা ক্ষমাপ্রার্থনা করে, তাহলে তিনি তাদের ক্ষমা করে দেন। (ইব্নে মাযাহ্: ২৮৯২)

মুসলিম জীবনে হজের সফর নিঃসন্দেহে তাৎপর্যময়। বাইতুল্লাহর মেহমান হতে পারা সত্যিই পরম সৌভাগ্যের। হাজীগণ যদি বরকতময় এ সফরের মাধ্যমে চিরস্থায়ী কল্যাণ অর্জন করতে চান, তাহলে প্রত্যেক হাজীকে হজ থেকে ফিরে এসে হজের প্রকৃত শিক্ষাকে দৈনন্দিন জীবনে অনুশীলন করতে হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে নিজেকে বদলানোর; যাতে নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসা পুণ্যময় দেহ ও আত্মায় গুনাহের কালিমা আর না লাগে।

বাইতুল্লাহ জিয়ারতের মাধ্যমে শপথ নিতে হবে, ধৈর্য্য, উদারতা ও হালাল রুজির। আরাফার বিশাল ময়দানে খোলা আকাশের নিচে অবস্থানের মাধ্যমে ওয়াদা করতে হবে, বিদায় হজে রাসূলে আরাবী (সা.) এর দেওয়া ভাষণের মর্মবাণীগুলো বাস্তবায়ন করার। অন্তর থেকে মুছে ফেলতে হবে অহঙ্কারের কালিমা। কঙ্কর নিক্ষেপের মাধ্যমে দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করতে হবে, বিতারিত শয়তানের সকল প্রকার ধোঁকা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার। কোরবানির মাধ্যমে শিক্ষা নিতে হবে নিজের পশুত্বকে বিসর্জন দেওয়ার। 

সর্বোপরি মদিনা মুনাওয়ারা গিয়ে প্রিয়নবী (সা.) এর রওজা শরীফ জিয়ারতের মাধ্যমে ব্যক্তি, সমাজ, অর্থনীতি, রাষ্ট্র তথা জীবনের সব স্তরে রাসুল (সা.) এর আদর্শ বাস্তবায়নের ইস্পাত কঠিন দৃঢ় অঙ্গীকার করতে হবে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, হজ থেকে ফিরে এসে অনেক হাজী সেই শপথ, সংকল্প  ওয়াদা ও অঙ্গীকারের কথা বেমালুম ভুলে যান। শয়তানের ধোঁকায় এবং পর্থিব দুনিয়ার মোহে হাজারও গুনাহের জালে জড়িয়ে পড়েন। 

হজ পালনকারী মহান আল্লাহ তা’আলার বিশেষ মেহমান এবং বিপুল সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। সুতরাং এই সম্মান ও মর্যাদার দিকে লক্ষ্য রেখে পরবর্তী জীবন তাকে আল্লাহর পথে পরিচালিত করতে হবে।

পরিশেষে, দয়াময় আল্লাহ তা’আলার নিকট এই ফরিয়াদ, হে পরোয়ারদিগার! প্রত্যেক বাইতুল্লাহর মেহমানকে হজের মৌলিক শিক্ষা দৈনন্দিন জীবনে অনুশীলন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।            

তারা//

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়