অবরুদ্ধ আসিফ নজরুল ঢাকা মেডিকেল ছেড়েছেন
শুক্রবার মধ্যরাতে গণঅধিকারের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একটি কক্ষে আসিফ নজরুলকে অবরুদ্ধ করার তথ্য দেন। ছবি: রাইজিংবিডি ডটকম
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে দেখতে গিয়ে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সেখান থেকে চলে গেছেন।
শুক্রবার রাত ১২টার কিছু আগে সেখানে উপস্থিত হলে অধ্যাপক নজরুলকে দেখে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন গণঅধিকারের বিভিন্ন পর্যায়ের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। জরুরি বিভাগের ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টার (ওসিসি) থেকে বের হওয়ার সময় বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। তার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের একটি কক্ষে নেওয়া হয়। সেখানেই তিনি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে প্রথমে চিকিৎসা দেওয়া হয় নুরুল হক নুরকে। সেখানে তাকে দেখতে যান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
নুরুল হককে তখন ওসিসিতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
জরুরির বিভাগের একটি সূত্র জানায়, অবরুদ্ধ হয়ে পড়া উপদেষ্টা আসিফ নজরুল পেছন দিকের একটি পথ দিয়ে মেডিকেল থেকে বেরিয়ে গেছেন।
এর আগে গণঅধিকারের নেতাকর্মীরা আসিফ নজরুলকে অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়ে জরুরি বিভাগের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সেখানে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে বলতে শোনা যায়, আইন উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রেসিডেন্ট জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তার এবং দলটিকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত তাকে ছাড়া হবে না।
কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা। গণঅধিকারের দাবি, তাদের মিছিলের পেছন থেকে হামলা করেছে জাতীয় পার্টি। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির পাল্টা অভিযোগ, তাদের প্রধান কার্যালয়ে হামলা হয়েছে ওই মিছিল থেকে।
এ নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ঢিল ছোড়াছুড়ির একপর্যায়ে কাকরাইল-বিজয়নগরে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হন দুই দলের নেতাকর্মীরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিতে মাঠে আসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। উভয় পক্ষকে সরে যেতে নির্দেশ দিলেও গণঅধিকারের সভাপতি নুর সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। এ অবস্থায় তার ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
রক্তাক্ত অবস্থায় নুরুল হক নুরকে কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। নুরুল হকের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।
ঢাকা মেডিকেলে যাওয়ার আগে ফেসবুক পোস্ট দিয়ে তোপের মুখে পড়েন আসিফ নজরুল। সরকারে থেকে কোনো হামলার জন্য নিন্দা জানানো কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। আরো অসংখ্য মানুষ এই উপদেষ্টার সমালোচনা করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলন থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ব্যাপক ভূমিকা রাখা নুরকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর সেখানে আসতে থাকেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ অনেক দলের নেতাদের সেখানে দেখা যায়। তাদের বেশিরভাগ গণমাধ্যমের উদ্দেশে কথা বলেন এবং নুরের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
ঢাকা/রুহানি/রাসেল