ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সিলেটে সাড়া পড়েছে অনলাইন হাটে, ভিড় পশুর হাটেও

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৭, ১৭ জুলাই ২০২১  
সিলেটে সাড়া পড়েছে অনলাইন হাটে, ভিড় পশুর হাটেও

অনলাইন পশুর হাট, জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর, সিলেট

ঈদের আর মাত্র তিন দিন বাকি। এসময় সিলেটে অনলাইনে পশুর হাটে ব্যাপক সাড়া মিলছে। করোনা সংক্রমণ ঝুঁকির কারণে হাটের ঝামেলা এড়াতে অনলাইনে পশু দেখার পর খামারির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, তারপর সরাসরি খামারে গিয়ে পছন্দ করে পশু কিনে নিচ্ছেন।

অনলাইন হাটের পাশাপাশি পশুর স্থায়ী এবং অস্থায়ী হাটগুলোতেও বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। অবশ্য, ভিড়ের কারণে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি, এতে করোনার সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। যদিও হাটের ইজারাদারদের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে বার বার মাইকে সতর্ক বার্তা দেওয়া হচ্ছে, তবুও এ বিষয়ে উদাসীন সাধারণ মানুষ।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সিলেট জেলা কার্যালয়ের তথ্য মতে, সিলেটে অনলাইন ও ডিজিটাল পশুর হাটে এক সপ্তাহে ১ হাজার ২৩৮টি পশু বিক্রি হয়েছে। আর্থিক হিসেবে এ সময়ে ৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়। এখনো তিন দিন সময় হাতে আছে, সেক্ষেত্রে বিক্রি আরও বাড়বে বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের।

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ভাই ভাই এগ্রোর স্বত্বাধিকারী শাহজাহান আহমদ জানান, প্রাণিসম্পদ অফিসের অনলাইন হাটের পাশাপাশি তারাও নিজেদের ফেসবুক পেজে কোরবানিযোগ্য গরুর ছবি এবং বিস্তারিত তথ্য প্রদর্শন করেছেন। সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ক্রেতারা গরু দেখতে খামারে আসেন। এ পর্যন্ত ১২টি গরু বিক্রি করেছেন বলেও জানান তিনি।

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার গ্যালারিয়া এগ্রো ফার্মের পরিচালক সাহিদ উদ্দিন বলেন, এবছর খামার থেকে আমি ১৫টি গরু বিক্রি করেছি। ক্রেতারা প্রাণিসম্পদ বিভাগের অনলাইন হাট থেকে ফোন নম্বর নিয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তারা সরাসরি খামারে এসে গরু দেখে তারপরই কিনে নেন।

ইউনাইটেড এগ্রো ফার্মের উদ্যোক্তা রুহুল আমিন জানান, তার খামারে এবার ১২টি গরু কোরবানির যোগ্য ছিল। সবকটি গরু বিক্রির জন্য তিনি অনলাইন হাটে ছবি ও তথ্য পোস্ট করেছিলেন। এর মধ্যে ১০টি গরুই বিক্রি হয়ে গেছে। এতে তিনি লাভবানও হয়েছেন।

বিশ্বনাথ উপজেলার খামারি রেজা উদ্দিন জানান, তার ৬৮০ কেজি ওজনের শাহিওয়াল জাতের একটি গরু অনলাইন হাটের মাধ্যমে ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। হাটে নিতে গেলে যে খরচ পড়ত, সেই খরচও তার হয়নি। ঘরে বসেই গরুটি বিক্রি করতে পেরেছেন। এতে তিনি খুশি। 

সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুস্তম আলী বলেন, ক্রেতারা অনলাইন হাট থেকে কোরবানির পশুর আকার, রঙ এবং শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নিচ্ছেন। পরে খামারির সাথে ফোনে কথা বলে সরাসরি খামারে বা বাড়িতে গিয়ে পশু পছন্দ করে ক্রয় করছেন। এতে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই উপকৃত হচ্ছেন।

সিলেট নগরের সাপ্লাই রোডের বাসিন্দা নাজমুল কবির জানান, হাটের ঝামেলা এড়াতে তিনি অনলাইন হাটে গরুর ছবি দেখে খামারির সাথে যোগাযোগ করেন। পরে সরাসরি খামারির বাড়িতে গিয়ে গরু দেখে পছন্দ করে একটি কিনে নিয়েছেন। এতে তার সময়ও কম লেগেছে, আর দামও সহনীয় ছিল।

এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫২টি অস্থায়ী হাট বসানোর অনুমোদন দেওয়া হয়। এরমধ্যে সিলেট নগর এলাকায় তিনটি হাট বসানো হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে সিলেট নগরীর মাছিমপুর কয়েদির মাঠ, শাহী ঈদগাহ কালাপাথর মাঠ এবং দক্ষিণ সুরমার ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন মাঠ। এসব হাটে আসতে শুরু করেছে পশু, ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদেরও। সিলেটের প্রধান হাট কাজিরবাজারেও ভিড় বাড়ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীর। তবে এখনো বিক্রি জমে উঠেনি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

সিলেট বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, সিলেটে চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশু বেশি রয়েছে। এবছর বিভাগে কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৪ লাখ ৫৫ হাজার। এর বিপরীতে কোরবানির যোগ্য পশু রয়েছে প্রায় ৫ লাখ ৭৪ হাজার।

সিলেট/নোমান/মাহি 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ