হবিগঞ্জে ব্রি-৯২ ধানের বাম্পার ফলন

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার পশ্চিম পুকরা গ্রামের হাওরজুড়ে কৃষকরা আবাদ করেছেন হরেক রকম ধান। কেউ বা ব্রি-২৮, কেউ কেউ ব্রি-২৯। তবে অধিকাংশ কৃষক আবাদ করেছেন হাইব্রিড ধান। এই ফসলের মাঠে ওই গ্রামের কৃষক মাহবুব চৌধুরীর ৪ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন ব্রি-৯২ ধান।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রদর্শনী সাইনবোর্ড থাকায় অন্য কৃষকরা কৌতূহল নিয়ে দেখছে তার জমির ফসলের অবস্থা। যারা ব্রি-২৮ ও ব্রি ২৯ আবাদ করেছিলেন তাদের ফলন ভালো না হওয়ায় মাথায় হাত। যারা হাইব্রিড আবাদ করেছিলেন তাদের ফলন ভালোই হয়েছে। তবে সবাইকে অবাক করে বাম্পার ফলন হয়েছে মাহবুব চৌধুরীর জমিতে লাগানো ব্রি-৯২ ধান। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে মাঠ দিবসে যখন ওই জমির ধান কাটা হয়, তখন তা পরিমাপ করার পর দেখা গেছে বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ২৫ মণ। এই ফলন দেখে উপস্থিত কৃষকরা আগামীতে ব্রি-২৮ ও ২৯ বাদ দিয়ে এই ধানই আবাদ করবেন বলে নিজেদের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহানও আগামীতে যাতে কৃষকরা নতুন এই জাতের বীজ পায়, তার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরে আলমও কৃষকদের বলেন, আর ২৮ ও ২৯ আবাদ না করে ব্রির উৎপাদিত নতুন জাতগুলো আবাদ করার জন্য।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট হবিগঞ্জের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পার্থ সারথীর সভাপতিত্বে ও এসেড হবিগঞ্জের সঞ্জালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব রফিকুল ইসলাম, জাপানি উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ও শেয়ার দ্যা প্ল্যানেটের প্রধান টেটসুয়ো সুটসুই, সিনিয়র সহকারী কমিশনার গিয়াস উদ্দিন ও পুকড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামরুল ইসলাম।

হাওর এলাকার কৃষকদের আগাম বন্যা থেকে ফসল সুরক্ষার জন্য জাপানের অর্থায়নে ৫ বছরের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ব্রি-৯২ ধানের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। জাইকার সহযোগিতায় এই প্রকল্প যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে ব্রি, শেয়ার দ্যা প্ল্যানেট এসোসিয়েশন ও এসেড হবিগঞ্জ।

জাপানি উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ টেটসুয়ো সুটসুই বলেন, হবিগঞ্জে এর আগেও এসেডের সঙ্গে ছোট ছোট প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সফলতা অর্জন হওয়ায় এবার ৫ বছরের প্রকল্পে তারা সহায়তা দিচ্ছেন। ভবিষ্যতে এই এলাকার হাওরবাসীর উন্নয়নে জাপানের সরকারের আরও বেশি সহায়তা আসবে বলে তিনি প্রতিশ্রতি ব্যক্ত করেন।