ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মুক্তিপণ চাওয়ার আগেই হত‌্যা করা হয় সানমুনকে

সাইফুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৯, ২০ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৭:৫৪, ২০ ডিসেম্বর ২০২০
মুক্তিপণ চাওয়ার আগেই হত‌্যা করা হয় সানমুনকে

প্রতীকী ছবি

অপহরণের চার দিন পর শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী মার্কেটের ছাদ থেকে সানমুন (১১) নামে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ চাওয়ার আগেই তাকে হত‌্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সানমুনের মা রোকসানা পারভীন রুপা বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার প্রধান আসামি মাহফুজুর রহমান রনি (৩৮) পলাতক আছেন। অন্য চার আসামি—নূর আলম প্রলয় (২০), প্রলয়ের বন্ধু ইউসুফ নেওয়াজ (২২) ও খায়রুল ইসলাম (২০) এবং ইয়াসিন আফাত কবিরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও সানমুনের স্বজনরা জানিয়েছেন, ১৫ ডিসেম্বর সানমুন নিখোঁজ হয়। পরে সানমুনের সৎ চাচা রনি ও ফুপাতো ভাই প্রলয় অপহরণের নাটক সাজান। তারা ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। বিকাশে কিছু টাকাও নিয়েছেন তারা। পুলিশ তদন্তে নেমে অপহরণের সঙ্গে রনি ও প্রলয়ের সম্পৃক্ততা পায়।

প্রলয় পুলিশকে জানিয়েছেন, ১৫ ডিসেম্বর হাসপাতালে চাচার নবজাতক সন্তানকে দেখতে যায় সানমুন। সেখান থেকেই তাকে অপহরণ করা হয়। পরে শাহ আলী মার্কেটে নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।

সানমুনের বাবা প্রদীপ বলেন, ‘আমার ছেলের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার খুনিদেরও সেভাবেই ফাঁসি চাই। খুনিরা আমার ভাই হোক, ভাগনে হোক আর যে-ই হোক, আমি তাদের ফাঁসি চাই।’

মিরপুর মডেল থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমান রাইজিংবিডিকে জানান, সানমুন তার মা ও তার সৎ বাবা ইউনুস আলীর সঙ্গে মিরপুর-৬ এলাকায় থাকত। ১৫ ডিসেম্বর নিখোঁজ হওয়ায় পরিবারের লোকজন থানায় জিডি করেছিলেন। ওই জিডির পরিপ্রেক্ষিতে থানা ও ডিবি পুলিশ একসঙ্গে তদন্তে নামে। গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাহ আলী প্লাজার ছাদ থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। অপহরণকারীরা তাকে অপহরণের পরপরই হত্যা করে। পরে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে।

আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু বলেছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘তারা প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তাদের আজ আদালতে হাজির করা হবে। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা এখনই স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। পারিবারিক বিরোধ এবং অর্থ লেনদেনসহ কয়েকটি কারণকে সামনে রেখে তদন্ত চলছে।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তামিম রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার করা আসামিদের এখনও বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারিনি। আজ আদালতে হাজির করে তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে। রিমান্ডে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসবে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।’

ঢাকা/সাইফুল/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়