ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে ফরম বাণিজ্যের অভিযোগ

শাহরিয়ার সিফাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৭, ১৩ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে ফরম বাণিজ্যের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পোড়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফরম ফিলাপের নামে বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফরম প্রতি অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরদ্ধে। রেজিস্ট্রেশন ফি, কোচিং ফি, স্কুল উন্নয়ন ফিসহ বিভিন্ন খরচের কথা বলে শিক্ষা বোর্ড নির্ধারিত খরচের চেয়ে তিন গুণ বেশি টাকা আদায় করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে মুখ খুললে স্কুল কর্তৃপক্ষ  শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় নানা জটিলতা তৈরি করবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য বোর্ড ফি নির্ধারণ করেছে। এর বাইরে কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না। এবার বিজ্ঞান বিভাগের জন্য (৪র্থ বিষয়সহ) মোট এক হাজার ৮০০ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে (৪র্থ বিষয়সহ)  এক হাজার ৬৮০ টাকা এবং মানবিক বিভাগের জন্য (৪র্থ বিষয়সহ) এক হাজার ৬৮০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, ২০১৭-১৮ ও ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে সম্পন্ন হবে বিধায় এ দুই বিষয়ে বোর্ড ফি দিতে হবে না। তবে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য এ দুটি বিষয়ের পরীক্ষার ফি দিতে হবে।

এ বছর টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পোড়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় ১৬২ জন শিক্ষার্থী (নিয়মিত-অনিয়মিত) অংশগ্রহণ করবে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৪ হাজার ৭০০ টাকা, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ  থেকে ৪ হাজার ৬০০ টাকা করে আদায় করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন প্রধান শিক্ষিকা শিরিন আক্তার ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল আলম। তাদের সহযোগিতা করছে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ কয়েকজন শিক্ষক ।

এ নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকরা বলেন, ‘ তোমাদের তিন মাস কোচিং করানো হবে। তাই তোমাদের এ টাকা দিতে হবে। না দিলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’

শিক্ষার্থীররা এ বিষয়ে অভিযোগ করলে তাদের পরীক্ষায় জটিলতা সৃষ্টি করবে বলেও হুমকি দিয়েছেন তারা।

এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা শিরিন আক্তার বলেন, ‘ আমাদের ম্যানেজিং কমিটির যারা আছেন তাদের সাথে আলোচনা করেই টাকা নিচ্ছি। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল করার জন্য অতিরিক্ত কোচিং ক্লাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

অভিভাবক আব্দুল মান্নান, দুদু মিয়া ও নবীনুর মিয়া বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য যে টাকা নেওয়ার কথা তা না নিয়ে তিনগুন টাকা নিচ্ছে স্কুলটির কর্তৃপক্ষ। আমরা গরীব মানুষ এতো টাকা কিভাবে দিব?’

পরীক্ষার্থী পারভেজ, লাবনী, মারুফা ও সাগর বলেন, ‘ স্কুল থেকে আমাদের যে টাকার কথা বলেছে তা আমাদের পরিবারের লোকজন দিতে পারবে না।’

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফজলুজ্জামান রশীদ বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত বোর্ড ফি, কেন্দ্র ফি, অনলাইন খরচ, কোচিং ফি, সেশন ও উন্নয়নসহ স্কুলের বিভিন্ন কাজের জন্য এ টাকা নেওয়া হচ্ছে। যদি কেউ বলে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে তা ভুল। আর যে ম্যাডাম আপনাদের সাথে কথা বলেছেন সে এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নয়। তাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে আমরা তাকে অপসারণ করেছি।’

টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম বলেন, ‘ পোড়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাইনি। তারপরও আমি তদন্ত সাপেক্ষে স্কুলটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
















রাইজিংবিডি/টাঙ্গাইল/১৩ নভেম্বর ২০১৮/শাহরিয়ার সিফাত/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়