ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

প্রত্যাশিত জয়ে বিসিএল শুরু ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনের

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৬:০৮, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১
প্রত্যাশিত জয়ে বিসিএল শুরু ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনের

পেসার রবিউল হকের আরেকটি শর্ট বল। এর আগে প্রায় একই রকম শর্ট বলে ফিরিয়েছিলেন সেঞ্চুরিয়ান মার্শাল আইয়ুবকে। তালগোল পাকিয়ে শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন মার্শাল। ধারালো সেই অস্ত্র এবার একটু নিচু নামল। আমিনুল ইসলাম বিপ্লব পুল করলেন। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড়। 

বল সোজা স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনের অধিনায়ক শুভাগত হোমের হাতে। ২৭৪ রানে অলআউট বিসিবি নর্থ জোন। এই মুহুর্তর জন্যই সকাল থেকে অপেক্ষা করছিল ওয়ালটন। শেষমেষ রবিউলের বলে বিসিবি নর্থের শেষ উইকেট পেয়ে গেল ওয়ালটন। ইনিংস ও ৭০ রানের জয়ে বিসিএলের নবম আসরের প্রথম রাউন্ড জয়ে রাঙাল ওয়ালটন। 

প্রথম ইনিংসে ২১৯ রানে গুটিয়ে যায় নর্থ জোন। জবাবে ওয়ালটন ৩ উইকেটে ৫৬৩ রানের বিশাল পুঁজি পায়। লিড ৩৪৪ রানের। ওয়ালটনকে আরেকবার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে হলে ৩৪৪ রানের বেশি করা লাগত বিসিবি নর্থের। কিন্তু বোলারদের বোলিং ধারাবাহিকতায় ম্যাচটা অতি সহজেই জিতে যায় বিসিএলের দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা। 

হাতে ৫ উইকেট ও ১৭২ রানে পিছিয়ে থেকে বুধবার চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিল বিসিবি নর্থ। মার্শাল আইয়ুব ও মুকিদুল ইসলাম অঙ্কনের ব্যাটে তাকিয়ে ছিল তারা। হতাশ করেননি দুই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। 

শুরুর ত্রিশ মিনিটের চাপ সামলে পরবর্তীতে অনায়েসে ব্যাটিং করে গেছেন। ওয়ালটনের বোলাররা শুরুতে নিয়ন্ত্রিত থাকলেও ঘণ্টখানেক পর পথ ভোলেন। কোনো চাপ তৈরি করতে পারেননি। উল্টো আলগা বলে রান দিয়েছেন। 

মার্শাল সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে রান তুলেছেন। কিন্তু অঙ্কন ছিল স্থির। রান নিতে কোনো আগ্রহ দেখাননি। বরং উইকেটে টিকে থাকতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান। তার ইনিংসটি ছিল হাশিম আমলা ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের মুম্বাই টেস্টের মতো। রান নেব না, সারাদিন কাটিয়ে ম্যাচ বাঁচাবো। 

সেই পরিকল্পনায় প্রথম সেশনে পুরোপুরি সফল তারা। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩০ ওভার কাটিয়ে দেন। দ্বিতীয় সেশনেও একই ব্যাটিংয়ের পুনরাবৃত্তি। কোনো চাপ নেই। উইকেটে রান তোলার আগ্রহ নেই। বল নষ্ট করো, ম্যাচ বাঁচাও –এমন নীতি নিয়েই যেন ব্যাটিং করছিলেন দুজন। 

কিন্তু পানি পানের বিরতির পর সব এলোমেলো হয়ে গেল নর্থের। মাত্র ৪৩ বলে শেষ তাদের ইনিংস। ১৮ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় তারা। শুরুটা হয়েছিল হাসান মুরাদের দারুণ এক ডেলিভারীতে।  
তার লাফিয়ে উঠা বল ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে সিলি পয়েন্টে সালমানের হাতে ক্যাচ দেন। একটু টার্ণের সঙ্গে বল বাউন্স পাওয়ায় ব্যাট সরাতে পারেননি ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ম্যাচ বাঁচাতে দারুণ প্রতিরোধ গড়েছিলেন তিনি। ১৬৩ বলে করেন মাত্র ২৫ রান। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মার্শাল আইয়ুব। ৩৫১ বলে মাত্র ৯০ রান করেছেন তারা। 

এক ওভার পর মার্শাল তুলে নেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ২১তম সেঞ্চুরি। ১০২ বলে ৫০ রান করা মার্শাল সেঞ্চুরিতে পৌঁছান ২৩৭ বলে। কিন্তু ব্যক্তিগত মাইলফলকে পৌছাঁর পর নিয়ন্ত্রণ থাকেনি তার। রবিউলের শর্ট বল ব্যাট তাক করে ক্যাচ দেন ২৪৬ বলে ১০১ রান করা মার্শাল। 

হাসান মুরাদ পরের ওভারে এসে আরিফুলকে আউট করে তুলে নেন নিজের পঞ্চম উইকেট। তার সোজা বলে এলবিডব্লিউ হন আরিফুল। দুই বল পর তার শিকার শফিকুল ইসলাম। স্লিপে মিঠুনের হাতে ক্যাচ দেন লেজের ব্যাটসম্যান।

ওয়ালটনের জয় তখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। রবিউল অপেক্ষা লম্বা করেননি। শর্ট বলে বিপ্লবকে ফিরিয়ে অসাধারণ এক জয়ে রঙিণ করেন বিসিএলের প্রথম রাউন্ড। বল হাতে ৬ উইকেট নিয়ে মুরাদ ওয়ালটনের সেরা বোলার। এছাড়া রবিউল হকের পকেটে গেছে ৩ উইকেট। 

ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনের মিজানুর রহমান ও মোহাম্মদ মিঠুন। মিঠুন ১৭৬ ও মিজানুর ১৬২ রান করেছেন। 

ম্যাচ জেতায় ওয়ালটন ৮ পয়েন্ট পেয়েছে। এছাড়া ইনিংস ব্যবধানে জেতায় ১ বোনাস পয়েন্টও পেয়েছে। ৯ পয়েন্ট নিয়ে ওয়ালটন এখন টেবিলের শীর্ষে। 

ঢাকা/ইয়াসিন 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়