ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

আবারও বিব্রতকর ব্যাটিং, আবারও কি লিটন-মুশফিক মহাকাব্য!

সাইফুল ইসলাম রিয়াদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৩৩, ২৬ মে ২০২২   আপডেট: ১৯:০১, ২৬ মে ২০২২
আবারও বিব্রতকর ব্যাটিং, আবারও কি লিটন-মুশফিক মহাকাব্য!

জয়কে আউট করে আসিথার উল্লাস (ছবি: বিসিবি)

‘কন্ডিশন বা সব কিছুর কথা চিন্তা করলে এটা একটা ভালো সুযোগ। সর্বোচ্চ সুযোগ না, তবে এটাও একটা সুযোগ। সুযোগ সবসময় থাকে, এটাও আমাদের জন্য সিরিজ জেতার আরেকটা সুযোগ।’-ঢাকা টেস্ট শুরুর আগে সিরিজ জয় নিয়ে এভাবেই বলেছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। 

চতুর্থ দিন (বৃহস্পতিবার) শেষ বিকালের পরিস্থিতি দেখে মুমিনুল হয়তো তার নিজের কথা ফিরিয়ে নেবেন। ১৪১ রানের লিড সামনে রেখে দ্বিতীয় ইনিংস ব্যাটিং করতে নেমে স্বাগতিক ব্যাটিং লাইনআপে যে ধস নেমেছে। ২৩ রানেই যে নেই প্রথম ৪ ব্যাটসম্যান। 

দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৪ রান। মুশফিকুর রহিম ১৪ ও লিটন দাস ১ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে ১০৭ রানে। 

তামিম শূন্য রানে আউট হলেন। (ছবি: বিসিবি)

তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হক আউট হলেন শূন্য রানে। নাজমুল হোসেন শান্ত রান নিতে গিয়ে আউট, নামের পাশে রান মাত্র ২! প্রথম চার ব্যাটসম্যানের মাঝে দুই অঙ্কের ঘর পার হওয়ার ভাগ্য জোটে একমাত্র মাহমুদুল হাসান জয়ের। ২৭ বলে ১৫ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। 

আগের দিন শ্রীলঙ্কার স্পিন কোচ নাভিদ নেওয়াজ বলেছিলেন, আজ ও শেষ দিন যদি স্পিন ধরে তাহলে ফল হবে নিশ্চিত। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের যম লঙ্কান দুই পেসার আসিথা ফার্নান্দো ও কাসুন রাজিথা। প্রথম ইনিংসে রাজিথা ৫ ও ফার্নান্দো ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। এবারও যেন তারা সে পথেই হাঁটছেন। ফার্নান্দো নিয়েছেন তামিম-জয়ের উইকেট। আর রাজিথা ফেরান ব্যর্থতার বৃত্তে ঘোরা মুমিনুলকে। 

নাভিদের কথা যেন ভুল প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন তামিম-জয়রা। তা না হলে এই পেসারদের কেন উইকেট দিচ্ছেন? ক্রিজে আছেন মুশফিক-লিটন। প্রথম ইনিংসে ২৭২ রানের জুটি গড়ে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছিলেন দুজেন। মুশফিক ১৭৫ আর লিটন করেন ১৪১। ম্যাচ বাঁচানোর জন্য এ দুজনের প্রতিরোধের বিকল্প এখন নেই স্বাগতিক শিবিরে। 

ম্যাথুজ-চান্দিমাল দাপট দেখান দুই সেশন।

শেষ সেশনে বাংলাদেশেল ব্যাটিং ধস, অথচ প্রথম দুই সেশন কী নান্দনিক ব্যাটিংই না করেছে শ্রীলঙ্কা। আসলে তাদের দুই ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ-দিনেশ চান্দিমাল বাংলাদেশের নির্বিষ বোলিংয়ের সুবিধা আদায় করে নিয়েছেন বলেকয়ে। একটি উইকেটও দেননি দুই সেশনে তারা। অপরাজিত থেকে দিন শুরু করে তুলে নেন শতক। চান্দিমালকে ১২৪ রানে আউট করতে পারলেও ম্যাথুজ অপরাজিত থাকেন ১৪৫ রানে। দুজনের জুটি থেকে আসে ১৯৯ রান। এই জুটির পতনের পর আরে বেশিক্ষণ টেকেনি সফরকারীরা। 

৫ উইকেটে ২৮২ রান নিয়ে দিন শুরু করে শ্রীলঙ্কা। ম্যাথুজ-চান্দিমালের দাপটে আরও যোগ করে ২১৮ রান। তারা অল আউট হয় ৫০৬ রানে। ক্যারিয়ারের ১৯তম বার ইনিংসে ৫ উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। প্রায় ৪ বছর পর দেখা পেলেন ৫ উইকেটের। এ ছাড়া ৪ উইকেট নেন ইবাদত হোসেন। 

একটু আগেও যে পিচে লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন সেখানেই কেন খাবি খাচ্ছেন তামিম-মুমিনুলরা? মুহূর্তেই কি বদলে গেলো পিচের চরিত্র! নাকি ধৈর্য ধরে ক্রিজে টিকে থাকার মানসিকতাই নেই লাল সবুজের প্রতিনিধিদের। সিরিজ শুরুর আগে কোচিং স্টাফ থেকে মতামত দেওয়া হয় টানা দুই টেস্ট খেলার মানসিকতা নেই বাংলাদেশ দলের। সংবাদ সম্মেলনে এ কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন মুমিনুল। কথায় পারছেন, কিন্তু পারফরম্যান্সে কেন নয়? 

সাকিব নিয়েছেন ৫ উইকেট।

শের-ই-বাংলায় এখন পর্যন্ত ২৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়েছে। তাতে প্রতিপক্ষ দল জিতেছে ১৩ বার, বাংলাদেশ জিতেছে ৬ বার, ড্র হয়েছে ৩ বার আর ১টি ম্যাচ বাতিল হয়েছে। সবশেষ ড্র হয়েছে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ। তবে এই মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩টি ম্যাচ খেলে একটিতেও জয় পায়নি বাংলাদেশ।

ঢাকা টেস্টে কি বাংলাদেশের পরাজয়ের পাল্লা ভারী হবে নাকি জয়ের? নাকি ড্র করে সিরিজ বাঁচাবেন সাকিব-মুশফিকরা। কিন্তু শের-ই-বাংলার মিষ্টি রোদের বিকালে স্কোরবোর্ডের দিকে তাকালেই উঁকি দিচ্ছে পরাজয়ের ভয়! মুশফিক-লিটন কী ভাগ্য বদলাতে পারবেন?

ঢাকা/ফাহিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়