ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পারফেক্ট সিরিজে সব বক্সে টিক তামিমের 

ক্রীড়া প্রতিবেদক, সিলেট থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ২৩ মার্চ ২০২৩   আপডেট: ২১:৫৬, ২৩ মার্চ ২০২৩
পারফেক্ট সিরিজে সব বক্সে টিক তামিমের 

র‌্যাকিংয়ের সাত ও এগার নম্বর দলের লড়াই। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে যোজন যোজন পার্থক‌্য । শক্তি, নামে-ভারে, পরিসংখ্যানে সবকিছুতেই এগিয়ে বাংলাদেশ। শুধু এগিয়েই নয়, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ফেভারিট বাংলাদেশ। তবুও সতর্ক ছিল বাংলাদেশ। 

সেই সতর্কাবস্থানে থেকেই ইতিহাসের পাতায় নিজেদের আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়েছে তামিম অ‌্যান্ড কোং। প্রথম ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রানের পর আজ উইকেটের হিসেবে সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। দলগত প্রাপ্তির সঙ্গে ব‌্যক্তিগত অর্জনের ভান্ডারও টইটুম্বুর। তাইতো এই সিরিজটি অধিনায়ক তামিমের চোখে পারফেক্ট। পারফেক্ট সিরিজে সবকটি বক্সেই টিক পড়েছে। 

সিরিজ শেষে অধিনায়ক এসেছেন সংবাদ সম্মেলনে। তার কথা শুনেছে রাইজিংবিডি, 

এমন একটা সিরিজ যেখানে সব জায়গায় টিক চিহ্ন দেওয়া যায় তেমন, কোনো ঘাটতি নেই এমন কি?

তামিম ইকবাল: হ্যাঁ অবশ্যই। পারফেক্ট সিরিজই বলতে পারি। যদি ঘাটতি জোর করে বের করতে হয়, তাহলে বলব দ্বিতীয় ম্যাচটা ওয়াশ আউট না হলে ভালো হতো। এছাড়া আমাদের নিয়ন্ত্রণে যা যা ছিল, আমরা তার সবই করেছি। আপনারা আজও উইকেটটা দেখেছেন, প্রথমে ব্যাট করা আসলেই সহজ না। বিশেষ করে প্রথম ১৫-২০ ওভার। কিন্তু আমরা প্রথম দুই ম্যাচে সে চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি, বড় রান করেছি। দিনশেষে আমরা খুবই সন্তুষ্ট যে আমরা প্রায় সব বক্সেই টিক দিয়েছি।


ছয় বোলার নিয়ে খেলে কি স্বাচ্ছন্দ‌্যবোধ করেছেন? বিশেষ করে বোলিং পরিবর্তন সহজ হয়েছে?

তামিম ইকবাল: আমাদের এই ভাবনা প্রথম ম্যাচ থেকেই ছিল। মিরাজ চোট না পেলে এই একাদশই প্রথম ম্যাচ থেকে খেলাতাম। কারণ মিরাজের ব্যাটিং সক্ষমতায় আমাদের বিশ্বাসটা ছিল। ও দেখিয়েছে। আমরা যদি এই বিশ্বাসটা করতে পারি, মিরাজ যদি এভাবে ডেলিভার করতে পারে, ছয় বোলার নিয়ে খেললে কাজ করাটা সহজ হয়ে যায়। কারণ কখনো কখনো পাঁচ বোলার খেলালে পার্ট টাইম বোলার নিয়ে কাজটা একটু কঠিন হয়ে যায়। বিশেষ করে যখন উইকেটটা খুবই ভালো হয়। 

সিলেটের উইকেট নিয়ে বাড়তি উন্মাদনার কথা শুরু থেকেই বলা হচ্ছিল? 

তামিম ইকবাল: ইংল্যান্ড সিরিজেই আমি বলেছি আপনারা ভবিষ্যতে দেখবেন আমরা এমন উইকেটে খেলব। একটা ওয়ানডে চট্টগ্রামে যাওয়াটা একটা পদক্ষেপ ছিল। এখানে এসে আমরা উইকেটে ভালো পরিমানে ঘাস রেখে দিয়েছি। সাধারণত ঘাসের উইকেটে আমরা খুব বেশি খেলি না। বিশ্বকাপের কথা ভেবে, সামনের যে সিরিজগুলো আছে, এ কারণেই এমন উইকেটে খেলা। কারণ, আপনি যখনই এই ধরনের উইকেটে খেলবেন, বিশেষ করে ঘরের মাঠে, তখন লড়াইটা সমান হয়ে যায়। কারণ ওদের যে ফাস্ট বোলার আছে, ওরা কিন্তু ওদের দেশে এই ধরনের উইকেটে বল করতেই অভ্যস্ত। আমরা চ্যালেঞ্জটা নিয়েছিলাম, খেলোয়াড়রাও দারুণভাবে সাড়া দিয়েছে। 

মুশফিককে ছয়ে খেলানো। ভবিষ্যৎ ভাবনা কী?

তামিম ইকবাল: শেষ সিরিজে আমি আর কোচ মিলে ঠিক করেছি ওকে আমরা ছয়ে খেলাব। কারণ, তার চারে খেলানোর বিপক্ষে কিছু নেই, সে সেখানে দারুণ খেলেছে, কিন্তু তাকে ছয়ে নামানোর কারণ, আমরা কখনো কখনো ভালোভাবে শেষ করিনি। তার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। তার হাতে অনেক শট আছে। সেটা সে তার দুই ইনিংসে দেখিয়েছেও। সেটাই কারণ ছিল, কারণ সে আমার মনে হয় তার হাতে কম ওভার থাকলে সে আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে যায়। 

ভাগ্য ভালো, বিষয়টা কাজে দিয়েছে। সে অবিশ্বাস্যভাবে ভালো খেলেছে। ও যদি সেটা ক্যারি করতে পারে, তাহলে আমাদের জন্যই সম্ভাব্য সেরা বিষয় হবে সেটা। কারণ, ছয়ে ব্যাট করাটা খুবই ট্রিকিও হতে পারে। সবসময় ভালো শুরু হবে না। ১০০ রানে ৪ উইকেট, এমন পরিস্থিতিতেও তাকে এসে ব্যাট করতে হবে। তো এটা যেই ব্যাট করুক, ছয়ে ব্যাট করাটা যে কারো জন্যেই ট্রিকি। 

পেসাররা আজ ১০ উইকেট পেল, কী বার্তা দিচ্ছে? 

তামিম ইকবাল: হ্যাঁ। আমি যদি শুধু এটা বলি যে তারা দারুণ বল করেছে, এটা বলাটা ভুল হবে। আমার কাছে মনে হয়, মাঠের বাইরে যে কাজটা তারা করেছে, এটা এখন মাঠে কাজে দিচ্ছে। তাদের এই সফলতা ফ্লুক নয়, তারা নেটে কঠোর পরিশ্রম করছে। আপনার হাতে যখন এমন একটা ফাস্ট বোলিং অ্যাটাক থাকবে, তখন কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। আপনি যেখানেই খেলছেন, হোম হোক বা অ্যাওয়ে, যে কোনো জায়গায় আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠবেন। পুরো পেস বোলিং ইউনিটকে নিয়েই গর্ব হয় আমার। শুধু হাসান পাঁচ উইকেট পেয়েছে বলেই নয়, অন্য কেউ তিন-চার উইকেট পেয়েছে বলে নয়, যেভাবে তারা বল করেছে পুরো সিরিজে সেটা বেশ তৃপ্তি দিয়েছে।

আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের ব্র‌্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ মানিয়ে নিতে পেরেছে কিনা?

তামিম ইকবাল: দলের প্রতি আমার বার্তাটা খুবই সিম্পল হয়। যদি খেয়াল করেন, দু’বার টসে জিজ্ঞেস করা হয়েছে কত রান করতে চাইছেন? আমি এমন একজন যে লক্ষ্য সেট করে দেই না। আমি কখনো আমার দলকে যেয়ে বলি না যে, আমাদের ৩৫০ করতে হবে। আমি যা বলি, তা হলো আমাদের প্রসেসটা অনুসরণ করতে হবে। যদি তা করে ২৬০-২৭০ ও করতে পারি, তাও ভালো। ওটা অনুসরণ করে যদি ৩৫০ করি,তাহলেও খুশি। ৩৫০ করব, কেউ এসে বলে দিলেই হবে না। আপনাকে প্রসেসটা ফলো করতে হবে। শেষ ম্যাচের কথাই বলি, আমরা ৩৫০ করেছি, এখন কাউকে বললে বুঝবে না যে শুরুর দশ ওভারে ব্যাট করাটা কত কঠিন ছিল। শুরুর দশ ওভারে কোনো উইকেট খোয়াইনি, এটা ৩৫০ করার বড় একটা অংশ ছিল। তো প্রসেসটা ফলো করতে হবে। সব বক্স টিক করতে পারলে আমরা বড় রান করতে পারব।

সিলেট/ইয়াসিন

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়