ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ২ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বদলা নয়, রোহিতের ভারতের কাছে বর্তমানই সব

ইয়াসিন হাসান, আহমেদাবাদ থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫২, ১৮ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ২২:০৪, ১৮ নভেম্বর ২০২৩
বদলা নয়, রোহিতের ভারতের কাছে বর্তমানই সব

বদলা? ভারতীয় সমর্থকদের মনে বিশ্বকাপের ফাইনালকে ঘিরে উঁকি দিচ্ছে ২০০৩ সাল। যেবার জোহানেসবার্গে অস্ট্রেলিয়ার দোর্দণ্ড প্রতাপে স্রেফ উড়ে গিয়েছিল ভারত। রিকি পন্টিংয়ের অতিমানবীয় ১৪০ রানের ইনিংসটির কথা মনে আছে? না থাকার কারণ নেই। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে ভারতের বোলারদের নাকানিচুবানি খাইয়েছিলেন। তাতে ঢাকা পড়ে যায় ডেমিয়েন মার্টিনের অমরত্বের ৮৮! সঙ্গে গ্রেট শচীন টেন্ডুলকারের ৬৭৩ রান। 

বিরাট কোহলির এবারের ৭১১ রানের আগে টেন্ডুলকারের ওই রানই তো ছিল বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার ৩৫৯ রানের জবাবে ভারত হেরে যায় ১২৫ রানের বিশাল ব্যবধানে। অস্ট্রেলিয়া পেয়ে যায় বিশ্বকাপের তৃতীয় মুকুট। ভারত সুযোগ হারায় আরেকটি। 

২০ বছর পর আবার দুই দল মুখোমুখি বিশ্বকাপ মঞ্চে। জোহানেসবার্গের বদলা কি ভারত নেবে ঘরের মাঠ আহমেদাবাদে? রোববার দুপুরে ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি দুই দল। ভারতের সমর্থকদের হৃদয়ে যেমন বদলার স্রোত বইছে ঠিক উল্টো অবস্থানে তাদের নেতা রোহিত শর্মা। দলনেতা মনে করেন, এসব বদলা কিংবা ২০ বছর আগে ঘটে যাওয়া ম্যাচগুলোর জায়গা বর্তমানে তাদের কাছে একদমই নেই। তারা বর্তমানে বাঁচে। অতীত গিয়ে চিন্তিত নন। ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন নন। 

রোহিতের কাছে ক্রিকেট মানেই, ওয়ান ম্যাট অ্যাট আ টাইম। ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া একদিনের ক্রিকেটে স্বর্ণ সময় কাটিয়েছে। পঞ্চাশ ওভারে তারা ছিল ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বলে কয়ে হারিয়েছে যে কোনো দলকে। এবার ভারতকে দেখে অনেকটা তেমনই মনে হচ্ছে। অপরাজিত থেকে এসেছে বিশ্বকাপের ফাইনালে। ওই সময়ের অস্ট্রেলিয়া ও বর্তমানের ভারতের মধ্যে কোনো মিল খুঁজে পান কিনা রোহিত সেই প্রশ্নও করা হয়েছিল।

তাতে রোহিত যা বলেছেন, ‘দেখুন আমি এসবে একদমই বিশ্বাসী নই। আগেই বলেছি, আপনাকে মাঠে আসতে হবে এবং ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। আমি বিশ্বাস করি না, শেষ দশ ম্যাচে যা করেছি তা পরের ম্যাচে তা এমনিতেই হয়ে যাবে। আমাদেরকে করে দেখাতে হবে। হ্যাঁ আপনি আত্মবিশ্বাসী হতে পারেন শেষ ম্যাচগুলো থেকে। আমরা দশটি ম্যাচ ভালো খেলেছি। কিন্তু আপনি যদি কাল কোনো ভুল করেন, আপনার শেষ দশ ম্যাচ ভালো খেলার কোনো মানে থাকল না। আপনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগটাই হাতছাড়া করলেন। এজন্য ভারসাম্য আনার জন্য নিজেকে শান্ত রাখা জরুরি।’ 

ফাইনালে নামার আগে রোহিত মাথা খোলা রেখেছেন। বললেন, ‘ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে বলছি না। পুরোনো কিছুও ভাবার প্রয়োজন নেই। স্রেফ বর্তমানে থাকা চাই। আমরা যে মন্ত্রটা অনুসরণ করার চেষ্টা করি, পেছনের কোনো ম্যাচের ফল এই ম্যাচে কাজে আসবে না। তাই প্রত্যেককেই নতুন করে শুরু করতে হবে। সামনের ম্যাচে আমাদের প্রতিপক্ষ কে? কিভাবে ক্রিকেট খেলতে পারি, কোথায় আমাদের শক্তি, কোথায় প্রতিপক্ষের দুর্বলতা, নিজেদের শক্তি বাড়ানো সেসব নিয়ে কাজ করতে পারি। ২০ বছর আগে কি হয়েছে সেসব নিয়ে আমার চিন্তা নেই। আমি মনে করি বাকিদেরও সেসব নিয়ে চিন্তা থাকার প্রয়োজন নেই। আমরা কেবল বর্তমান নিয়েই ভাবতে পারি। কেননা বর্তমান রাঙানোর সুযোগ আমাদের রয়েছে।’ 

টুর্নামেন্টে ভারত যেভাবে দাপট দেখিয়েছে, অস্ট্রেলিয়া তেমনটা পারেনি। শুরুর দুই ম্যাচে হারের পর তৃতীয় ম্যাচে জয়ের মুখ দেখে। এরপর শুরু হয় তাদের ফাইনালের লড়াই। সেখান থেকে টানা সাত ম্যাচ জিতে এখন শিরোপার থেকে এক পা দূরে। তবে তাদের পারফরম্যান্সেই নেই তেমন ধার। কখনো ভালো করে তো কখনো খারাপ। ব্যাটসম্যানরা ধারাবাহিক নন, বোলারদের বোলিংও অধারাবাহিক। তাদেরকে সহজ প্রতিপক্ষ মনে হচ্ছে কিনা রোহিতের এমন প্রশ্নও করা হয়েছিল। উত্তরে ভারতের অধিনায়ক বলেছেন,‘না কোনোভাবেই নয়। তারা আগ্রাসন দেখাতে পারেনি এটা মনে হয়নি। তারা আটটি ম্যাচ জিতে এখন ফাইনালে এসেছে। খুব ভালো খেলেই এসেছে। ভালো যে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে যাচ্ছি। দুটি দলই ফাইনালে খেলার দাবিদার এবং আমরা বিশ্বাস করি অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে কি করতে পারে। 

প্যাট কামিন্সের দলকে সমীহ করে রোহিত আরো যোগ করেন, ‘তারা পূর্ণ দল। আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দল হিসেব ঐক্যবদ্ধ থাকা যেটা আমি সব সময় বলে এসেছি। প্রতিপক্ষ নিয়ে আমরা ভাবছি সঙ্গে আমরা নিজেদের ক্রিকেট নিয়ে বেশি মনোযোগী। নিজেদের দল, নিজেদের খেলোয়াড়ের জন্য কোনটা করা ভালো হবে সেদিকেই আমাদের মনোযোগ। আমরা সেখানেই স্থির থাকতে চাই।’ 

/রিয়াদ/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়