ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

দাপুটে জয়ে সিলেটকে বিদায় করলো বরিশাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৩, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১৭:২৪, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
দাপুটে জয়ে সিলেটকে বিদায় করলো বরিশাল

বিপিএলের শুরুটা ভালো হয়েছিল ফরচুন বরিশালের। মাঝে ছন্দপতন হওয়ায় কয়েকটি ম্যাচ হেরেছিল। তবে প্লে’অফ যত ঘনিয়ে আসছে ততই চেনা রূপে তামিম ইকবালের দল।

আজ শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে বরিশাল যেভাবে হারালো তাতে অন্য দলগুলোকে কড়া বার্তাও দিয়ে রাখলো। শিরোপার দাবিদবার যে তারাও। টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে বরিশাল ৬ উইকেটে ১৮৩ রান করে। জবাবে সিলেট স্ট্রাইকার্সের ইনিংস থেমে যায় ৮ উইকেটে ১৬৫ রানে। ১৮ রানের জয়ে প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ জয় পেল তারা। ১০ ম্যাচে চারটি তারা হেরেছে।

আরো পড়ুন:

বরিশালের জয়ের নায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস অলরাউন্ডার কাইল মায়ার্স। ব্যাট-বলে সমানতালে অবদান রেখে দলকে জিতিয়েছেন।

মায়ার্সের সঙ্গে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সম্পর্কটা অন্যরকম রোমাঞ্চের। ২০২১ সালে সাগরপাড়ের স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের দেওয়া ৩৯৫ রানের লক্ষ্যে অপরাজিত ২১০ রানের মহাকাব্য রচনা করে নিজ দলকে জিতিয়েছিলেন মায়ার্স।

অভিষেক টেস্টে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে চতুর্থ ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো, এশিয়ার মাটিতে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়; বার্বাডোজের বরপুত্রের ২১০ রানের ইনিংস রেকর্ড বই করেছিলেন ওলটপালট। সেই থেকে নিজের জার্সিতে ২১০ সংখ্যাটি ক্যারি করছেন মায়ার্স। আজ সেই জার্সিটাই ফের দেখা গেল চট্টগ্রামে।

প্রথমবার বিপিএল খেলার সুযোগ পেয়ে নিজের ছাপ রাখলেন পেস অলরাউন্ডার। ৩১ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৪৮ রানের পর বল হাতে ১২ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট। এছাড়া রানে ফেরা মুশফিক ৩২ বলে ৫২ রান করেছেন ৩টি করে চার ও ছক্কায়। চতুর্থ উইকেট জুটিতে মুশফিক ও মায়ার্স ৪৮ বলে ৮৪ রানের জুটি গড়েন। তাদের ব্যাটের ধার দেখে মনে হচ্ছিল বরিশালের রান চূঁড়ায় যাবে।

১৬ ওভার শেষে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে বরিশালের রান ছিল ৩ উইকেটে ১৪৯। কিন্তু পরের ১২ বলে মাত্র ৬ রান যোগ হয় তাদের স্কোরবোর্ডে। তবুও মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজ ছিলেন বলে আশায় ছিল বরিশাল। হৃদয় ভাঙেননি তারা। মিরাজ দুই ছক্কা হাঁকান শফিকুল ও তানজিমকে। মাহমুদউল্লাহ মাটি কামড়ে বল ফেলেছেন বাউন্ডারিতে। তাতে শেষ পর্যন্ত বরিশাল ৬ উইকেটে ১৮৩ রানের পুঁজি পায়।

এর আগে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ১৯ রানে বোল্ড হন তানজিমের ইয়র্কারে। আহমেদ শেহজাদ এই বোলারকে এলোপাথাড়ি উড়াতে গিয়ে ক্যাচ দেন ১৭ রানে। সৌম্যর ব্যাট থেকে আসে কেবল ৮ রান। মাহমুদউল্লাহ ১২ রানে অপরাজিত থাকলেও মিরাজ আউট হন ১৫ রানে।

বল হাতে সিলেটের হয়ে ৪৮ রানে ৩ উইকেট নেন তানজিম। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন শফিকুল ও টেক্টর। 

লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই মায়ার্সের পকেটে জোড়া উইকেট। দারুণ ইনসুইং বোলিংয়ে টেক্টরকে বোল্ড করার পর শান্তকে স্লিপে তালুবন্দি করান। একমাত্র স্লিপ ফিল্ডার সৌম্য বামদিকে ঝাঁপিয়ে নেন দারুণ ক্যাচ। শুরুর ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি সিলেট। দশম ওভারে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে রায়ান বার্ল যখন ড্রেসিংরুমে ফেরেন তখন স্কোরবোর্ডের চিত্রটা ছিল এরকম ৪০/৬।

সেখান থেকে আরিফুল ও বেনি হাওয়েল প্রতি আক্রমণে দিয়ে দ্রুত রান তোলেন। ম্যাচ হাতের মুঠোয় চলে আসায় বরিশালের বোলাররা আলগা বোলিং করছিলেন। সেসব দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে চার-ছক্কায় দ্রুত রান তোলেন তারা। তাতে স্কোরবোর্ড কিছুটা প্রাণ পায়। ৫২ বলে তাদের জুটির রান এক’শ ছুঁয়ে ফেলে। যা বিপিএলের ইতিহাসে সপ্তম উইকেটে প্রথম শতরানের জুটি। আরিফুল ২৮ বলে তুলে নেন ফিফটি। হাওয়েল ফিফটি পান ২৯ বলে।

শেষ দিকে ম্যাচে কিছুটা রোমাঞ্চ ছড়িয়েছিল। ১২ বলে প্রয়োজন ছিল ৪৪ রান। ম্যাকওয়ের প্রথম বলে লং অন দিয়ে ছক্কা উড়ান আরিফুল। কিন্তু পরের শর্ট বল ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে ফেরেন ড্রেসিংরুমে। ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৩১ বলে ৫৭ রান আসে আরিফুলের ব্যাট থেকে। নতুন ব্যাটসম্যান তানজিম পরের দুই বলে চার ও ৩ রান নিয়ে রাখেন অবদান। স্ট্রাইকে ফিরে শেষ দুই বলে ৫ রান আদায় করেন হাওয়েল। দুই ওয়াইডসহ ১৯তম ওভারে বাঁহাতি পেসার খরচ করেন ২১ রান।

শেষ ওভারে সিলেটের দরকার ছিল ২৩ রান। হাওয়েল প্রথমটি ডটের পর দ্বিতীয় বলে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দিলে সিলেটের স্বপ্নও ভেঙে যায়। আরিফুল ও হাওয়েলের ৫২ বলে ১০৮ রানের জুটি পরাজয়ের ব্যবধান কমায় মাত্র।

দশম ম্যাচে সপ্তম হারে অফিসিয়ালি টুর্নামেন্ট থেকে বাদ গত আসরের রানার্সআপরা।

ইয়াসিন/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়