ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ইতিহাসের শেষ পাতায় সান সিরো: ভাঙা হবে শতবর্ষের স্টেডিয়ামটি

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২০, ১ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ২৩:৩৪, ১ অক্টোবর ২০২৫
ইতিহাসের শেষ পাতায় সান সিরো: ভাঙা হবে শতবর্ষের স্টেডিয়ামটি

ইতালির মিলান শহরের সান সিরো স্টেডিয়াম।

মিলান শহরের আকাশে ভাসছে এক অদ্ভুত সুর- নস্টালজিয়া আর বিদায়ের। ফুটবল রোমান্টিকদের হৃদয়ে যে নামটি এক অমোঘ ভালোবাসার প্রতীকে রূপ নিয়েছে, সেই সান সিরো হয়তো আর থাকছে না ভবিষ্যতের মেলায়। ইতালির ফুটবলের দুই মহারথী- এসি মিলান আর ইন্টার মিলান যৌথভাবে কিনে নিয়েছে স্টেডিয়াম আর এর আশপাশের জমি। দাম প্রায় ১৯৭ মিলিয়ন ইউরো। চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে ভেঙে ফেলা হবে এই ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্টেডিয়ামটি। আর তার জায়গায় উঠবে নতুন ৭১ হাজার আসনের এক আধুনিক স্টেডিয়াম।

শহর পরিষদের দীর্ঘ এক বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত মিলেছে। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে টানটান বিতর্ক শেষে অনুমোদন পায় প্রস্তাবটি। যদি সবকিছু পরিকল্পনামাফিক এগোয়, তবে ২০৩১ সালের মধ্যে নতুন ভেন্যু দাঁড়িয়ে যাবে, যা ইউরো ২০৩২-এর ভেন্যু হিসেবেও ব্যবহার হবে।

আরো পড়ুন:

সান সিরো শুধু ইট-পাথর নয়, আবেগের নাম
সান সিরো মানে শুধু একখণ্ড কংক্রিটের কাঠামো নয়; এটা এক ইতিহাস, এক আবেগ। ১৯২৬ সালে নির্মিত হওয়া এই স্টেডিয়াম প্রথমে ছিল এসি মিলানের ঘর। পরে ১৯৪৭ সালে ইন্টারও সঙ্গী হয় একই ছাদের নিচে। তখন থেকেই লাল-কালো আর নীল-কালোর সহাবস্থান সান সিরোকে বানিয়েছে ফুটবলের এক পবিত্র তীর্থস্থান।

পেলে থেকে মারাডোনা, ভান বাস্তেন থেকে মালদিনি, রোনালদো থেকে মেসি; কত মহারথীর পদচিহ্ন, কত অমর দ্বৈরথ, কত আনন্দের অশ্রু আর হতাশার দীর্ঘশ্বাস জমে আছে এই গ্যালারির সিঁড়িতে। ১৯৯০ বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে অসংখ্য ইউরোপীয় মহারণ; সব কিছুর সাক্ষী এই সান সিরো।

নতুন যুগের ডাক কিন্তু পুরোনো প্রেমের বিদায়
মিলান আর ইন্টার বলছে, “এটি ক্লাব ও শহরের জন্য এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। আমরা বিশ্বমানের এক নতুন স্টেডিয়াম গড়তে চাই, যা হবে মিলানের নতুন স্থাপত্যের প্রতীক, ফুটবল সমর্থকদের আবেগের নতুন আশ্রয়।”

কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায় সান সিরোর ইতিহাস মুছে ফেলা যায় কি? এই ইট-পাথরে যে প্রতিটি ফাটল, প্রতিটি আসনে লুকিয়ে আছে প্রজন্মের আবেগ, তা কি কোনো আধুনিক কাঠামোতে পূরণ করা সম্ভব?

বিদায়ের সুর
মিলানিজরা জানে, এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠবে, আপিল হবে। কেউ সহজে বিদায় মেনে নেবে না। কারণ সান সিরো মানেই এক শহরের হৃদস্পন্দন। হয়তো একদিন কংক্রিটের শরীর ভেঙে পড়বে, কিন্তু ফুটবল রোমান্টিকদের মনে সান সিরো চিরকাল বেঁচে থাকবে।

ইতালিতে সর্বশেষ নতুন স্টেডিয়াম নির্মিত হয়েছিল ২০১১ সালে তুরিনে জুভেন্টাসের আলিয়াঞ্জ স্টেডিয়াম। আর এবার হয়তো নতুন যুগের সূচনা হবে মিলানে। তবে তার আগে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়- সান সিরোর আলো নিভে গেলে, মিলানের রাত কি আর আগের মতো উজ্জ্বল থাকবে?

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়