ঢাকা     বুধবার   ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ২ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জয়সওয়ালের সেঞ্চুরি, সুদর্শনের ব্যাটে প্রথম দিনেই ভারতের দাপট

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:০৫, ১০ অক্টোবর ২০২৫  
জয়সওয়ালের সেঞ্চুরি, সুদর্শনের ব্যাটে প্রথম দিনেই ভারতের দাপট

দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনটা ছিল ভারতের তরুণ ব্যাটারদের দিন। একদিকে যশস্বী জয়সওয়ালের অনবদ্য অপরাজিত ১৭৩ রান, অন্যদিকে  সাই সুদর্শনের প্রায় নিখুঁত ৮৭ রানের ইনিংস। এই দুই তরুণের জুটিতেই ভারত প্রথম দিনে দাপট দেখিয়েছে। দিন শেষে ভারতের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩১৮ রান। জয়সওয়ালের সঙ্গে ২০ রানে অপরাজিত আছেন শুভমান গিল। তারা দুজন আগামীকাল শনিবার দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নামবেন।

প্রথম দিনে নিজের ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরিটি করে জয়সওয়াল প্রমাণ করে দিলেন, তিনিই এখন ভারতের টেস্ট ব্যাটিংয়ের ভবিষ্যৎ স্তম্ভ। ইনিংসের শুরুতে তিনি ছিলেন ধৈর্যশীল, বলের গতি-প্রকৃতি বুঝে এগিয়েছেন ধীরে ধীরে। কিন্তু একটু সুযোগ পেলেই পঞ্জা মেলেছেন দারুণ সব শটে।

আরো পড়ুন:

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররা বারবার একই ভুল করেছেন। কখনো বেশি ফুল লেংথে, কখনো ছোট লেংথে বল দিয়েছেন। আর সেসবই ঠান্ডা মাথায় কাজে লাগিয়েছেন জয়সওয়াল। প্রথম ঘণ্টায় যেখানে তিনি ১০ রান করেছিলেন ৩৫ বলে, সেখান থেকে লাঞ্চের আগেই পৌঁছে যান ৪০-এ। আর শেষ পর্যন্ত থামলেন ২৫৩ বলে ১৭৩ রানে।

এই সেঞ্চুরির মাধ্যমে জয়সওয়াল এখন গ্রায়েম স্মিথের সঙ্গে যৌথভাবে সমান সংখ্যক সেঞ্চুরির মালিক (২৪ বছর বয়সের আগেই একজন ওপেনার হিসেবে)। ভারতের ইতিহাসে ২৪ বছর বয়সের আগেই তার চেয়ে বেশি শতক আছে কেবল শচীন টেন্ডুলকারের। আর আশ্চর্য তথ্য হলো- জয়সওয়ালের সাতটি সেঞ্চুরির মধ্যে পাঁচবারই তিনি পেরিয়েছেন ১৫০ রানের মাইলফলক! এই কৃতিত্বে তার ওপরে আছেন কেবল ডন ব্র্যাডম্যান।

২৩ বছর বয়সী সাই সুদর্শন হয়তো আজ নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন। তুলনামূলকভাবে অভিজ্ঞতার দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও আজ তার ব্যাটিংয়ে ছিল মুগ্ধতা। নামার পর থেকেই তিনি খেলেছেন আত্মবিশ্বাসে ভরপুর শট।

লোকেশ রাহুল দ্রুত আউট হলে শুরুতেই চাপে পড়ে ভারত। কিন্তু সুদর্শন এসে জয়সওয়ালের সঙ্গে ১৯৭ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি গড়ে চাপ সামলে নেন। ৫৮ রানে একবার ক্যাচ মিস হলেও বাকি ইনিংসে প্রায় নিখুঁত ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত জোমেল ওয়ারিকানের এক দারুণ টার্নিং বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন। কিন্তু তার ১৬৫ বলে ৮৭ রানের ইনিংস ছিল ধৈর্য, মেধা ও পরিণতির এক নিদর্শন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা যদিও দিনজুড়ে অতিরিক্ত রান দেননি একটিও। কিন্তু কার্যকারিতার দিক থেকে ছিলেন অনুজ্জ্বল। শুরুতে তিন পেসার ১২ ওভারে মাত্র ২৯ রান দিলেও পরের দুই সেশন পুরোপুরি ছিল ভারতের নিয়ন্ত্রণে। দ্বিতীয় সেশনে তো কোনো উইকেটই তুলতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। বরং ভারত তুলেছে ১২৬ রান।

জোমেল ওয়ারিকান ও খারি পিয়ের কিছুটা টার্ন পেলেও ধারাবাহিকতা ছিল না কারো বোলিংয়ে। রাহুল ৩৮ রানে স্টাম্পড হওয়ার পর থেকেই ভারতের ব্যাটাররা আর পেছনে তাকাননি।

দিনের শেষ দিকে, যখন আলোর মাপকাঠি কমছিল, তখনও জয়সওয়াল ছিলেন ক্ষুধার্ত। শেষ দুই ওভারে তুললেন ১৭ রান। আর দিনের শেষে অপরাজিত থাকলেন ১৭৩ রানে। তার সঙ্গে ছিলেন অধিনায়ক শুভমান গিল।

আগামীকাল মাঠে নামলে ভারতের লক্ষ্য থাকবে স্পষ্ট- জয়সওয়ালকে ডাবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছে দেওয়া। আর লিডটা এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া, যেখান থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আর হারানোর সুযোগ থাকবে না।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়