বিপিএলকে দশে সাত দিলেন খুশদিল
প্রশ্নটা শুনে খুশদিল শাহ সময় নিলেন। মনে মনে কি ভাবছিলেন বোঝা মুশকিল ছিল না একটুও! পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা বাংলাদেশে এসে উর্দুতে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সেটা নিজেদের মধ্যে হোক বা গণমাধ্যমে।
খুশদিলও সেই পথেই হাঁটলেন। রংপুর রাইডার্সের অলরাউন্ডার প্রশ্ন শুনে সময় নিয়ে শুরুতেই বললেন, ‘‘উর্দুতে বলি…।’’ গণমাধ্যম থেকে সাড়া পাওয়ার পর কথার ঝাঁপি খুলে দিলেন। প্রশ্নোত্তর পর্ব সারলেন উর্দুতে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগকে (বিপিএল) নিজের জন্য লাকি ভাবেন খুশদিল। এই প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের অলরাউন্ডার নিয়মিত মুখ। গত বছর রংপুর রাইডার্সের হয়ে পারফর্ম করে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি।
সেই কথাই বললেন শুরুতে, ‘‘আমি এখানে যখনই এসেছি পারফর্ম করেছি। যেই দলের হয়ে খেলি না কেন পারফর্ম করেছি। এটা (বিপিএল) আমার জন্য লাকি। গত বছরও এখানে এসে খেলে যেভাবে পারফর্ম করেছি তার কারণে পাকিস্তান জাতীয় দলে জায়গা ফিরে পেয়েছিলাম। আমার চেষ্টা থাকবে এই বছরও একই পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা রাখতে এবং দলকে জেতাতে।’’
বাংলাদেশের ফিরতে পেরেও খুশি মারকুটে ব্যাটসম্যান, ‘‘বাংলাদেশে আট-নয় বছর ধরে আসছি। খুব ভালো লাগে। যদি ভালো না লাগত তাহলে হয়তো আসতাম না।’’ বিপিএলে পেমেন্ট ইসু্য নিয়ে ঝামেলা হয়। তবে তাকে এমন কিছুর মুখোমুখি হতে হয়নি, ‘‘বিপিএল খেলেছি চার-পাঁচ বছর। ঢাকা লিগও খেলেছি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, যখনই এসেছি পুরো পেমেন্ট পেয়েছি এবং বোনাসও পেয়েছি।’’
বিপিএলে খুশদিল নিয়মিত ক্রিকেটার। কুমিল্লার হয়ে এক মৌসুম ও রংপুর রাইডার্সের হয়ে আগে দুই মৌসুম খেলেছেন। সব মিলিয়ে ২৭ ম্যাচে তার ব্যাটে রান এসেছে ৬০২। উইকেট নিয়েছেন ২৯টি। এখানকার প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বীতা, উত্তেজনা, উত্তাপ এবং দূর্বলতা, বিশৃঙ্খলা কিংবা সমালোচনা সবটাই তার জানা। বিপিএলকে ফ্রাঞ্চাইজি প্রতিযোগিতা হিসেবে কোথায় দেখেন তিনি? জানতে চাওয়া হয়েছিল। ১০ নম্বরে কত দেবে সেটাও বলেছেন, ‘‘বিপিএলকে দশে সাত দেব।’’
আগের বারের মতো এবারও রংপুর অন্যতম সেরা দল বানিয়েছে। খুশদিলের বিশ্বাস তারা মাঠে ভালো পারফর্ম করতে পারবে, ‘‘প্রতিটি দল ভারসাম্যপূর্ণ দল বানায়। আমাদের দলটাও সেরকম। নিজেদের উপর বিশ্বাস রয়েছে যে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলবো।’’
শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে স্কোরবোর্ড পরিবর্তন করার কাজটা বেশ ভালো পারেন এই ব্যাটসম্যান। কম বলে বেশি রানের চাহিদা থাকে তার ব্যাটে। এজন্য স্ট্রাইকরেটও থাকে চড়া। বিপিএলে তার স্ট্রাইক রেট ১৬৫। এবারও কী একই ছন্দ দেখা যাবে?
সোজা ব্যাটে খেলার মতোই উত্তর দিয়েছেন ৩০ বছর বয়সী খুশদিল, ‘‘আমি স্ট্রাইক রেট কখনো দেখি না। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং করি। উইকেট অনেক সময় কঠিন থাকে তখন ৩০-৩৫ বলে ৪০-৫০ রান করেন তখন ওইটাও দলের কাজে আসে। কখনো আবার ২০০ কিংবা ২২০ রান তাড়া করতে হয়। তখন ওই ফ্লো তেই ব্যাটিং করতে হয়। আমি স্ট্রাইক রেট দেখি না। ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনা করি। আমার এখনও জানা নেই, অামার স্ট্রাইক রেট কত।’’
নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে জানাতে গিয়ে খুশদিল যোগ করেন, ‘‘আমি যেখানেই যাই, যেখানেই খেলি নিজে থেকে লক্ষ্য স্থির করে নেই। আমি যেখানেই ব্যাটিং করি না কেন ওখানে মানিয়ে নেওয়ার দ্রুত চেষ্টা থাকে। এখন আমার পজিশন নিয়ে একটু ঝামেলা হচ্ছে। আশা করছি তা ঠিক হয়ে যাবে। এখন এখানে সেভাবেই নিজেকে এগিয়ে নিতে চাই। ঘরোয়া ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি, দেড়শ, সেঞ্চুরি আছে আমার। খুব ভালো পজিশনে আছি।’’
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল