ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বিদেশি চলচ্চিত্র আমদানি আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ

রফিক মুয়াজ্জিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫১, ২৮ জানুয়ারি ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিদেশি চলচ্চিত্র আমদানি আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ

একটি বাংলা ছায়াছবির ব্যানার

রফিক মুয়াজ্জিন : দেশে অস্থিরতা। রাজনৈতিক সংকট ঘনিভূত হচ্ছে দিনে দিনে। এই রাজনীতির ডামাডোলে আরেকটা বিষয় যেন চাপা পড়ে যাচ্ছে। সেদিকে নজর নেই অনেকেরই। অথচ রাজনীতির চেয়ে কোনো অংশেই কম গুরুত্বপূর্ণ নয় এ বিষয়টি।

 

বলছি সংস্কৃতির কথা, আমাদের চলচ্চিত্রের কথা।

 

গত ২৩ জানুয়ারি রাজধানীসহ সারা দেশে ৪৭টি প্রেক্ষাগৃহে ঘটা করে মুক্তি দেওয়া হয় আমদানি করা হিন্দি চলচ্চিত্র ‘ওয়ান্টেড’। ‘তারে জমিন পার’ ‘থ্রি ইডিয়টস’ ও ‘ধুম থ্রি’ নামের আরো তিনটি চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে ছাড়পত্রের অপেক্ষায় আছে। এসব চলচ্চিত্র আমদানি করেছে ইনউইন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। 

 

এদিকে বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র, বিশেষ করে হিন্দি চলচ্চিত্র আমদানি ও তা প্রদর্শনের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন চলচ্চিত্রের কলাকুশলী ও চলচ্চিত্রপ্রেমীরা। রাস্তায় নেমে এসেছেন পরিচালক, প্রযোজক, অভিনয়শিল্পীসহ এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।

 

প্রদর্শনীর প্রথম দিনেই বিক্ষোভের মুখে রাজধানীর শ্যামলী সিনেমা হলে ওয়ান্টেড প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে আরো ১০-১২টি প্রেক্ষাগৃহে বন্ধ থাকে ওয়ান্টেডের প্রদর্শনী।

 

তার আগে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি কর্মবিরতিসহ নানারকম কর্মসূচি পালন করে। ‘যতদিন এর কোনো বিহিত না হয়, ততদিন কর্মবিরতি পালন করবেন’ বলে ঘোষণা দেন তারা। ২০ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে চলচ্চিত্র ঐক্যজোট। পরের দিন কাফনের কাপড় পড়ে রাস্তায় নামেন বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের কলাকুশলীরা।

 

রাজধানীর বাইরেও বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ জানান চলচ্চিত্রপ্রেমীগণ। সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অনেকে প্রতিবাদ জানান।

 

অন্যদিকে, বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র আমদানিকারকরাও তাদের কার্যক্রমের পক্ষে প্রচার চালাতে থাকেন। অব্যাহত রাখেন প্রদর্শনীও। এ পক্ষও সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের যুক্তি তুলে ধরেন।

 

ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানির বিরুদ্ধে ও সমর্থনে আলোচনা জমে ওঠে। পক্ষ ও বিপক্ষের লোকদের নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে চলচ্চিত্রবিষয়ক পাঁচটি সংগঠন। ‘ভারতীয় চলচ্চিত্র বাংলাদেশে অবাধ ও বাণিজ্যিক প্রদর্শন : বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পে এবং দেশীয় সংস্কৃতিতে এর প্রভাব’ শিরোনামে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, জাহাঙ্গীরনগর স্টুডেন্টস ফিল্ম সোসাইটি, জগন্নাথ ফিল্ম সোসাইটি, ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি ও রণেশ দাশগুপ্ত ফিল্ম সোসাইটি ।

 

গত ২৪ জানুয়ারি এ গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, লেখক ড. সলিমুল্লাহ খান, চলচ্চিত্র গবেষক ড. ফাহমিদুল হক, চলচ্চিত্রকার মানজারে হাসিন মুরাদ, দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, মতিন রহমান, মুশফিকুর রহমান গুলজার, শাহ আলম কিরণ, সোহানুর রহমান সোহান, এফ আই মানিক, জাহিদুর রহিম অঞ্জন, ওয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ড, মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী, টোকন ঠাকুর, নোমান রবিন, স্থপতি লায়লুন নাহার স্বেমি, চলচ্চিত্র সংসদকর্মী বিপ্লব মোস্তাফিজ প্রমুখ।

 

আন্দোলন এখনও চলছে। অন্যদিকে চলছে ওয়ান্টেড প্রদর্শনীও।

 

এ তো গেল ঘটনা পরম্পরা। এবার আসি যুক্তির বিচারে।

 

হিন্দি সিনেমা আমাদের দেশের সিনেমা হলগুলোতে চালানো হলে দর্শক এসবই বেশি দেখবেন, বাংলা ছবি দেখবেন না- এটা সবাই জানেন এবং মানেন। তাই বলে হিন্দি সিনেমা আমদানি ও প্রদর্শনী বন্ধ করতে হবে? এটাই কি একমাত্র সমাধান কিংবা সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত কি এটাই?

 

ধরে নিলাম, সরকার বাধ্য হয়ে হিন্দি চলচ্চিত্র আমদানি বন্ধ করে দিল। দেশের কোনো প্রেক্ষাগৃহেই আর ভিনদেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে না। এতেই কি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের গোষ্ঠি উদ্ধার হবে? আমার দেখার ও শোনার অভিজ্ঞতা বলে- যারা নিয়মিত বা অনিয়মিত সিনেমা দেখেন, তাদের খুব অল্প সংখ্যকই এখন প্রেক্ষাগৃহে যান। অধিকাংশই চলচ্চিত্র উপভোগ করেন কম্পিউটারে, সিডি-ডিভিডি প্লোয়ারে বা টিভিতে। এখন স্মার্ট ফোনগুলোও অনেক স্মার্ট, এতে অনেক সহজে ‘মুভি এনজয়’ করা যায়। প্রেক্ষাগৃহ বা হলে সিনেমা না দেখালে দর্শকরা এভাবেই সিনেমা দেখবেন। এদের অধিকাংশই দেখবেন হিন্দি, ইংলিশ, তামিল প্রভৃতি ভাষার চলচ্চিত্র। দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য, বাংলাদেশি চলচ্চিত্রগুলো দিনে দিনে তার আবেদন হারিয়ে এমন এক অবস্থায় এসে পৌঁছেছে যে, তা আর দর্শককে টানতে পারে না, বিনোদন দিতে পারে না। ঢাকাই চলচ্চিত্র এখনও যারা দেখেন, তাদের অধিকাংশেরই কম্পিউটার বা ডিভিডি প্লেয়ার কেনার ক্ষমতা নেই বলে প্রেক্ষাগৃহে যান।

 

একটু অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে- অশিক্ষিত, অল্পশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিতরা এখন ঢাকাই চলচ্চিত্রের দর্শক। বিশেষ করে পোশাকশ্রমিক এবং রিকশাচালকদের মতো অল্প আয়ের মানুষজন বিএফডিসি উৎপাদিত চলচ্চিত্র-পণ্যের মূল ক্রেতা (আমি এসব শ্রমজীবী মানুষ এবং বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের কলাকুশলীদের খাটো করার জন্য বলছি না-এটাই সত্য)। তবে এসব শ্রমজীবী মানুষও এখন ধীরে ধীরে হলবিমুখ হচ্ছেন। চার-পাঁচ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোনেই তারা ছবি (চলচ্চিত্র) দেখতে পাচ্ছেন। তারাও বাংলা চলচ্চিত্র থেকে হিন্দির দিকেই ঝুঁকছেন। ‘গলির মোড়ে সিডির দোকান’-এ গেলে ১০ টাকায় পাঁচ-সাতটা সিনেমা ভরে দেওয়া হয় মোবাইল ফোন সেটে। আর তারা এই মোবাইল ফোন সেটেই দেখে নিচ্ছেন সিনেমা।   

 

যতদিন না আমাদের নিজেদের চলচ্চিত্রের উন্নতি করতে পারি ততদিন বিদেশি চলচ্চিত্রের জন্য দেশের প্রেক্ষাগৃহের দরজা বন্ধ রেখে লাভ নেই। জানালা আর ঘুলঘুলি দিয়ে ঠিকই ভিনদেশি অতিথি উঁকি মারবে। হল বন্ধ করলেন বটে, ইউটিউব তো খোলা, সার্চ দিলেই ওয়ানটেড নিয়ে হাজির হবেন সালমান খান, থ্রি ইডিয়টস নিয়ে আমির খান। আমাদের খানরা (শাকিব, আমিন, জায়েদ) শক্তিশালী না হলে ভারতীয় খানরা (আমির, শাহরুখ, সালমান) আমাদের দর্শকদের হৃদয় খানখান করবেনই। বড় পর্দায় হাজির না হোন, ছোট পর্দা (টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন) কাঁপাবেন তারাই।

 

আরো একটা বিষয় ভাবতে হবে। দর্শকের অভাবে দিনে দিনে বন্ধ হচ্ছে সিনেমা হলগুলো। সেখানে গড়ে উঠছে বহুতল শপিং মল বা অন্যকোনো লাভজনক প্রতিষ্ঠান। বিদেশি চলচ্চিত্র চালিয়ে যদি হলগুলো টিকিয়ে রাখা যায়, তাতে ক্ষতি কী? হল টিকে থাকলে তাতে হিন্দি চলচ্চিত্রের পর বাংলা চলচ্চিত্রও চালানো যায়। হল একবারে বন্ধ হলে কী হবে- এ কূল, ও কূল দুটোই আমরা হারাব। 

 

এতক্ষণে হয়তো ভাবছেন- আমি বিদেশি ছবি আমদানির পক্ষে। মোটেও না। আর দশজন সংস্কৃতিকর্মীর মতো আমিও চাই, বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি যুগ ফিরে আসুক। আবারও পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মজা করে সিনেমা দেখি। আমি হিন্দি বা তামিল ভাষা ভালো জানি না। তাদের আইটেম নাচ দেখি, গানের অর্থ বুঝি না। বুঝি না অনেক সংলাপের সারমর্মও। তাই দেখলেও ঠিকমতো মজা পাই না হিন্দি আর তামিল সিনেমায়।

 

আমি আমার মাতৃভাষাতে মাতৃভূমির চলচ্চিত্র দেখতে চাই। দেখতে চাই ‘মাটির ময়না’র মতো মাটিঘেঁষা সিনেমা, ‘মনপুরা’র মতো মনপোড়ানো প্রেমের চলচ্চিত্র কিংবা ‘গেরিলা’র মতো মুক্তিযুদ্ধের ছবি। আমি ‘দীপু নাম্বার টু’ বইটি পড়ে যত মজা পেয়েছি, তার চেয়ে বেশি মজা পেয়েছি ওই কিশোর উপন্যাসের চলচ্চিত্ররূপে। তাই মনে-প্রাণে চাই নিয়ম করে প্রতি সপ্তাহের ছুটির দিনে গিয়ে সবাই মিলে বাংলা ছবি দেখি। আবারও প্রাণ ফিরে আসুক ঢাকাই চলচ্চিত্রে।

 

এটা একদিনে সম্ভব নয়, এটা জানি। তবে এটাও মানি, এটা অসম্ভবও নয়। শুধু দরকার দক্ষ ও মেধাবী মানুষের অংশগ্রহণ আর সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। কিছু অপ্রগতিশীল মানুষের হাতে জিম্মি হয়ে ঢাকাই চলচ্চিত্র আজ রুগ্ন। সদ্যপ্রয়াত চাষী নজরুল ইসলামের মতো গুণি চলচ্চিত্রকার আগ্রহ থাকা সত্বেও যথেষ্ট সহযোগিতার অভাবে শেষ জীবনে ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারেননি। অথচ তিনি জীবনের শুরুতে বানিয়েছিলেন ওরা ১১ জন, সংগ্রাম, শুভদার মতো চলচ্চিত্র। গিয়াসউদ্দিন সেলিম ‘মনপুরা’র মতো সফল বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র বানানোর পর ‘কাজলরেখা’র স্ক্রিপ্ট লিখে বসে আছেন, ভালো প্রযোজক পাচ্ছেন না। আমজাদ হোসেন চলচ্চিত্র নির্মাণ না করে এখন অভিনয় করছেন। এরকম অনেক গুণী চলচ্চিত্রকার আছেন, যারা অনেক ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষমতা রাখেন। তাদের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা দরকার।  

 

অনেকেই বলেন, হিন্দি ছবির বাজার বড়। তারা বেশি টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন। ফলে তাদের চলচ্চিত্র ভালো হয়। বাংলাভাষী মানুষ কম, তাই বাজার ছোট। বেশি বিনিয়োগ করলে উঠে আসে না।

 

যারা এ অভিযোগ করেন কিংবা অজুহাত দেখান, তাদের জন্য একটা ভালো উদাহরণ তামিল ভাষার চলচ্চিত্র। ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্য আয়তনে বাংলাদেশের চেয়ে ছোট। জনসংখ্যা বাংলাদেশের অর্ধেকেরও কম। অথচ চলচ্চিত্র-বাণিজ্যে তারা আমাদের চেয়ে ঢের এগিয়ে। এমনকি হিন্দিওয়ালারাও তাদের কাছ থেকেই ধার করে। ওয়ান্টেড সিনেমাটিও তামিল ছবির হিন্দি সংস্করণ। এটির পরিচালক প্রভুদেবা তামিল। প্রভুদেবা, এ আর রহমান, রজনীকান্ত- তামিল চলচ্চিত্রেরই ফসল। যারা চলচ্চিত্র জগতের ন্যূনতম খোঁজ-খবর রাখেন তাদের প্রায় প্রত্যেকেই মাগাধিরার মতো তামিল ছবিগুলো দেখেছেন। অনেক জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমা তামিল ছবির নকল। তামিলরা পারলে আমরা পারব না কেন?

 

ওপার বাংলার ছবিগুলোও তো ব্যবসা করছে। নিয়মিত সিনেমা দেখেন অথচ ঋতুপর্ণ ঘোষ, মৃণাল সেন, সৃজিত মুখার্জি, অপর্ণা সেনের ছবি দেখেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। প্রসেনজিৎ, দেব, জিৎদের ছবিগুলোও তো মুনাফা করছে। ওপারের ফিল্ম এপারেও সমান জনপ্রিয়। তো এপার বাংলার ফিল্ম ওপার বাংলায় চলবে না কেন? দুর্বলতা কি আমাদের নয়?

 

তামিলরা পারছেন, ওপার বাংলার দাদারা পারছেন।  কারণ সেখানে যোগ্য ও দক্ষ লোকেরাই চিত্রনাট্য লেখেন, পরিচালনা করেন, গান তৈরি করেন। 

 

আর আমাদের ঢাকাই চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য যারা লিখেন, তাদের অনেকেরই সাহিত্যজ্ঞান ও সাহিত্যবোধ প্রায় নেই। চারটা গান, পাঁচটা অ্যাকশন দৃশ্য আর ‘চৌধুরী সাহেব…’ টাইপের সংলাপ দিয়েই তারা ফিল্ম তৈরি করেন। বড় লোকের মেয়ে, গরিবের ছেলে- এই কাহিনীর বাইরে যাওয়ার সাহস দেখাতে পারেন না বেশিরভাগই। বেশিরভাগ চলচ্চিত্রের প্রথম দৃশ্য দেখলে বোঝা যায়, শেষ দৃশ্য কী হবে। এ ধরনের টাইপড সিনেমা দেখে দেখে চিত্তের বদহজম হয়েছে, চিত্তবিনোদন হবে কীভাবে? একই স্বাদের সালুন প্রতিদিন খেলে তা একসময় বিস্বাদ ঠেকবেই।  দর্শককে দোষ দিয়ে লাভ কী, বলুন।

 

দুয়েকটা ভালো চলচ্চিত্রও হচ্ছে বাংলাদেশে। তবে এগুলো শুধু বিদেশি উৎসবে পুরস্কার পাওয়ার জন্য বানানো হয়। যেন অ্যাওয়ার্ড পাওয়াই চলচ্চিত্রকর্মের মূল উদ্দেশ্য, দর্শক কোন ছার! 

 

এখন সময় এসেছে নতুন করে ভাবার। যার নাট্যজ্ঞান আছে তাকে দিয়ে চিত্রনাট্য লেখাতে হবে, গান লেখাতে হবে গীতিকবিকে দিয়েই। যিনি চলচ্চিত্র ভালো বোঝেন, তাকেই দিতে হবে পরিচালনার দায়িত্ব। যে যেখানে যোগ্য, তাকে সে জায়গাতে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। আর অভিনয়শিল্পীদের বুঝতে হবে যে, চিৎকার করে সংলাপ দিলেই অভিনয় হয় না।

 

দরকার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করে বসে থাকলেই হবে না। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের অর্থ, অবকাঠামোসহ আনুসঙ্গিক সুবিধা দিতে হবে। বিএফডিসির মহাপরিচালক হবেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই, আমলারা নন। পোশাকশিল্প, চামড়াশিল্প, ওষুধশিল্প যদি সরকারের সহযোগিতা পায়, তাহলে চলচ্চিত্রশিল্প কেন পাবে না? বছরে পাঁচ-সাতটি ছবির জন্য দু-চার কোটি টাকা অনুদান দিলে সরকারের দায়িত্ব শেষ হয় না।

 

দায় রয়েছে আমাদেরও। চলচ্চিত্রটা হলে গিয়ে দেখার অভ্যাস ফিরিয়ে আনতে হবে। আমার আপনার আমাদের সহযোগিতা আর উৎসাহ ছাড়া চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরবে না। ছবি না দেখলে ভালো ছবি আসবে কীভাবে?

 

 

লেখক : সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ জানুয়ারি ২০১৫/রফিক/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়