ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

গণধর্ষণের ছয় দিন পর ৩ আসামি গ্রেপ্তার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৭, ১৩ মে ২০২১  
গণধর্ষণের ছয় দিন পর ৩ আসামি গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি

চাকরির খোঁজে সিরাজগঞ্জে যাওয়ার পথে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এক কিশোরী। ঘটনার ছয় দিন পর প্রধান আসামিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এসব তথ‌্য জানানো হয়েছে।

মেয়েটির বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সতেরো বছর বয়সী ওই কিশোরীর মা মারা গেছে ছোটবেলায়। বাবা আবার বিয়ে করেছেন। সে সংসারে ঠাঁই হয়নি তার। দাদির সঙ্গে থাকে সে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায়। দাদিকে নিয়ে অনেক কষ্টে চলে সংসার। সিরাজগঞ্জে রায়পুরে থাকা এক বান্ধবী তাকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। চাকরির খোঁজে বেরিয়ে পড়ে ওই কিশোরী। লকডাউনের কারণে যাতায়াত ভালো না থাকায় ভেঙে ভেঙে তাই যেতে হচ্ছিল। টাঙ্গাইলের কালিহাতি পর্যন্ত যেতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। একাকী কীভাবে যাবে, ভেবে না পেয়ে রেল স্টেশনে একা দাঁড়িয়ে ছিল সে। খুঁজতে থাকে সিরাজগঞ্জ যাওয়ার উপায় অথবা নিরাপদে রাত পার করার মতো কোনো আশ্রয়। এ সময় স্টেশনের এক লেগুনাচালক তাকে সিরাজগঞ্জে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। পথে চালকের সঙ্গে যোগ দেয় কয়েকজন যুবক। তারা মেয়েটিকে কালিহাতি ও শাল্লা উপজেলার মাঝামাঝি ছোট বটতলা গ্রামের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটি ধানক্ষেতে নিয়ে যায় টেনে-হিঁছড়ে। সেখানে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। ভোরের দিকে মেয়েটিকে তাড়িয়ে দেয় তারা। পথে অপর এক ব্যক্তি তাকে সাহায‌্য করতে আসে। কারো কাছ থেকে সাহায্য নিতে ভয় পাচ্ছিল সে।

ঘটনাটি ৬ মে’র। ছয় দিন পর ১২ মে ওই ব্যক্তি পুলিশের মিডিয়া অ‌্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত বাংলাদেশ পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের ইনবক্সে বিষয়টি জানান। বার্তাটি কালিহাতি থানার ওসি সওগাতুল আলমকে জানিয়ে দ্রুত ওই কিশোরী ও ধর্ষকদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কালিহাতি থানার ওসির তৎপরতায় পরিদর্শক (তদন্ত) রাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে এসআই রাজু আহমেদ এবং এএসআই তৈয়ব আলীসহ পুলিশের একটি দল মাঠে নামে। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা খুঁজে পায় তারা। কিন্তু ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশেষ কোনো ক্লু না থাকায় প্রথমে বেগ পেতে হয়েছে পুলিশকে। কিন্তু, অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তারা অল্প সময়ের মধ্যেই মেয়েটিকে শনাক্ত করে। ওই কিশোরীর দাদির ঠিকানা খুঁজে পায় পুলিশ। দাদির বাড়িতেই পাওয়া যায় তাকে। সেখান থেকে ভাড়া করা গাড়িতে তাকে কালিহাতি থানায় নেওয়া হয়। তাকে অভয় দেওয়া হয়। আশ্বাস দেওয়া হয়, অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার। মেয়েটির দেওয়া তথ‌্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। বুধবার রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ওই গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামিসহ দুই ধর্ষক মো. লালন ও মো. রাসেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযুক্ত অপর দুই যুবক মো. সুমন ও মো. রিপনকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

কিশোরিটি বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসাধীন আছে।

ঢাকা/মাকসুদ/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ