ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

হৃদরোগে আক্রান্ত ডিআইজি মিজান, সময় চেয়ে আবেদন

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হৃদরোগে আক্রান্ত ডিআইজি মিজান, সময় চেয়ে আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক : হৃদরোগজনিত অসুস্থতায় হাজির না হয়ে সময় চাইলেন পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান।

প্রায় একই ধরনের কারণ দেখিয়েছেন তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্নাও। উভয়ই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চাহিদাকৃত নথিপত্র সংগ্রহে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।

রোববার সকালে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী বরাবর ওই আবেদন করা হয়েছে।

যেখানে চিকিৎসাপত্রসহ ডাক্তারের সার্টিফিকেট সংযুক্ত করা হয়েছে। যা তার অফিস সহকারী মারফত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়ায় পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানকে দ্বিতীয় দফায় ও তার স্ত্রীকে প্রথম বারের মতো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে ৩০ সেপ্টেম্বর হাজির হতে বলা হয়ে।

এদিকে, দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে ডিআইজি মিজানের নামে ৪৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১ টাকার এবং তার স্ত্রীর নামে ৭২ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার অসঙ্গতিপূর্ণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মিজানুর রহমানের ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান স্বপন ও ভাগনে পুলিশের এসআই মাহামুদুল হাসানের নামেও স্থাবর ও অস্থাবর ব্যাপক সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। দুদকের ধারণা, এসব সম্পদের প্রকৃত মালিক হচ্ছেন ডিআইজি মিজান। এ কারণেই ইতোমধ্যে দুদক আইনের ২৬(১) ধারায় মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রীর নামে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করে সংস্থাটি।

দুদক জানায়, মিজানুর রহমান আয়কর নথিতে তার নামে স্থাবর ও অস্থাবর মোট ১ কোটি ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৬৩ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। তবে দুদকের অনুসন্ধানে আয়কর নথির বাইরে ৪৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ মিলেছে। অন্যদিকে, সোহেলিয়া আনার রত্না আয়কর নথিতে স্থাবর ও অস্থাবর মোট ৮৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৩৫ টাকার সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। অথচ আয়ের উৎস পাওয়া যায় মাত্র ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৮৩ টাকা। অর্থাৎ দুদকের অনুসন্ধানে আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৭২ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার সম্পদ রয়েছে বলে দুদক মনে করে। এ ছাড়া মিজানুর রহমানের ছোট ভাইয়ের নামে রাজধানীর বেইলি রোডে বেইলি রোজ নামের ২ হাজার ৪০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও ভাগনে মাহামুদুল হাসানের নামে চাকরিতে প্রবেশের আগেই ঢাকার পাইওনিয়ার রোডে ১ হাজার ৯১৯ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, ডিআইজি মিজান তাদের নামে এসব সম্পদ করেছেন।

এর আগের চলতি বছরের ৩ মে অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে প্রথম দফায় প্রায় ৭ ঘণ্টা ডিআইজি মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

গত বছরের জানুয়ারিতে পুলিশ সপ্তাহ শুরু হওয়ার আগে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে স্ত্রী-সন্তান রেখে আরেক নারীকে জোর করে বিয়ে করার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড় হয়। সে সময় ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমানকে ডিএমপি থেকে সরিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।

নামে-বেনামে ডিআইজি মিজানুর রহমানের শত কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে, এ অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে ১০ ফেব্রুয়ারি অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

**




রাইজিংবিডি/ঢাকা/ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮/ এম এ রহমান/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়