ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

খালেদার আপিল শুনানিতে যা বললেন আইনজীবীরা

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১২, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খালেদার আপিল শুনানিতে যা বললেন আইনজীবীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে তার জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেছেন আদালত। এছাড়া এই মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া অর্থদণ্ডের খালেদার অংশ স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি নিম্ন আদালতের নথি ১৫ দিনের মধ্যে পাঠাতে ঢাকা বিশেষ জজ আদালতের ৫ এর বিচারককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। দুপুর ১২ টায় শুনানির শুরুতেই অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমাদের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা উপস্থিত রয়েছেন। তবে আপিলের শুনানি করবেন অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী।’ এরপর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী শুনানি শুরু করেন।

তিনি বলেন, ‘ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডম্যান্ট অ্যাক্ট ১০ (১) ধারায় আপিলটি করা হয়েছে। আমি আপিল শুনানির জন্য গ্রহণের আবেদন করছি। আপিল গ্রহণ হলে জামিন আবেদন দেওয়া হবে। ৪০৯ ধারায় আপিলকারীকে সাজা দিয়েছেন আদালত।’

এ সময় হাইকোর্ট বলেন, ‘আপিলে কি কি চেয়েছেন নাকি শুধুই আপিল অ্যাডমিশন চেয়েছেন? অ্যাডমিশন পরে আর কী প্রেয়ার আছে?’

এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘একটা আপিল অ্যাডমিশনের আবেদনে নরমালি যা যা থাকে আমরা তাই চেয়েছি।’

তখন নথি দেখে আদালত বলেন, ‘ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী কনভিকশন কি স্থগিত করা যায়? ক্রিমিনাল অ্যাক্ট ল অ্যামেন্ডম্যান্ট অ্যাক্টে কনভিকশন স্থগিতের বিধান নাই। আপনারা তো কনভিকশনও স্থগিত চেয়েছেন।’

এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এটা গতানুগতিক, এটা ঠিক করে দেব। সাধারণত এটা একটা প্রথা। সেজন্য এটা আমরা চেয়েছি।’

এরপর আদালত আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। আদেশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে মামলার নথি তলব করেন এবং আদালত বলেন, ‘আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়ার অর্থদণ্ড স্থগিত রাখা হলো।’

এ পর্যায়ে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘১৫ দিন ধরে তিনি (খালেদা জিয়া) কাস্টডিতে আছেন। যেহেতু তাকে শর্ট সেনটেন্স দেওয়া হয়েছে, সেজন্য আমরা তার বেইল চাচ্ছি (জামিন, বয়স, সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় জামিন পাওয়ার হকদার তিনি)।’

তখন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘আপিল ইতিমধ্যে আদালত গ্রহণ করেছেন। আজকে সকালে আমরা জামিন আবেদন পেয়েছি। রেকর্ড আসার পরই বিষয়টি লিস্টে এনে শুনানি করা হোক।’

আদালত বলেন, ‘আপিলকারীর সাজা তো কম। আদালতের প্রথা আছে সাজা কম হলে জামিন দেওয়ার। এই মামলায় মেরিট আছে। এ কারণে এটা আমরা কার্যতালিকায় এনে শুনানি করতে চাই।’

এ সময়ে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘আমরা অ্যাডমিশনের শুনানি করতে পারি নাই।’ আদালত বলেন, ‘যখন শুনানির প্রয়োজন তখনই আপনাকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’

এরপর দুদক আইনের ৩৩ (৫) ধারা দেখিয়ে খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘এ ধরণের বিশেষ আইনের মামলার ক্ষেত্রে দুদককে যুক্তিসঙ্গত সময় দিয়ে শুনানি করতে হবে। আর আমরা আজ ৯টা ৩১ মিনিটে জামিনের আবেদনের কপি পেয়েছি।’

আদালত বলেন, ‘তারা তো অন মেরিট জামিন চাচ্ছেন না। পুরো রেকর্ডের কি দরকার আছে?’

খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘ফৌজদারী আইন ব্যবস্থায় নারী বলে আদালত জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। কিন্তু দুদক আইনে সে সুযোগ নেই। জামিনের আবেদন অনেক বড়, গ্রাউন্ডও অনেক।’

এ  বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হেসে বলেন, ‘এ কারণেই তো টকশোতে আপনি আলোচনার সুযোগ পেয়েছেন।’

খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি কার‌্যতালিকায় এনে শুনানি করা হোক।’

এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সাধারণত কম সাজা হলে আপিল করলে জামিন দিয়ে দেওয়া হয়।’

আদালত বলেন, ‘আপিল বিভাগের অনেক আদেশ আছে কম সাজা হলে জামিন দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেগুলো বিশেষ আইন প্রণয়নের আগে। যেহেতু দুদক আইনে আছে তাদের যুক্তিসঙ্গত সময় দেওয়ার তাই আমরা রোববার দুপুর ২ টায় শুনানির জন্য রাখলাম।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/মেহেদী/সাইফ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়