ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

আগামীর বাংলাদেশ হবে অর্থনৈতিক মুক্তি ও সমৃদ্ধির

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৬, ২৫ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আগামীর বাংলাদেশ হবে অর্থনৈতিক মুক্তি ও সমৃদ্ধির

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে রাজকার-আলবদর-আল শামস, খুনি ও ইতিহাস বিকৃতকারীরা আর যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে। আগামীর বাংলাদেশ হবে অর্থনৈতিক মুক্তির ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে সেই ভাষণ (বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ) আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি (ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য স্বীকৃতি) পেয়েছে। আজকে বার বার আমার সেই কথাই মনে হয়, যারা এই ভাষণ একদিন নিষিদ্ধ করেছিল তাদের অবস্থাটা কী? তারা কোথায় মুখ লুকাবে? তারা এই মহাসত্যকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কোর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় শনিবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

একাত্তরের ৭ মার্চ যে উদ্যানে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, সেই ভাষণ বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় শনিবার সেই জায়গাতেই এক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একাত্তরে আমরা যারা এই ভাষণ শুনতে পেয়েছিলাম তারা সৌভাগ্যবান। পঁচাত্তরের পর থেকে যারা ইতিহাস বিকৃতি দেখেছে, সত্যি তাদের জন্য দুঃখ হয়, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয়ী জাতি; বিজয় অর্জন করেছি কিন্তু সেই ইতিহাস আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানতে পারেনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে শুধু হত্যাই করা হয়নি, যে আদর্শ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, যে আদর্শ নিয়ে লাখো শহীদ রক্ত দিয়েছে, সেই আদর্শ ভূলুণ্ঠিত করে স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকার, আলবদর, খুনিদেরকেই ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। তারাই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গিয়ে ইতিহাসকে বিকৃত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘদিন ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করতে দেওয়া হয়নি। সে ভাষণ বাজাতে গেলে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর এসেছে আঘাত। কত মানুষ জীবন দিয়েছে। অথচ এই ভাষণ এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। সত্য ইতিহাস চির ভাস্বর। ইতিহাস কেউ মুছে ফেলতে পারে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মা বাবাকে বলেছিলেন, তুমি সারাটা জীবন এদেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছ। তুমি জানো এদেশের মানুষের মুক্তি কীসে। কাজেই কারো কথা শোনার কোনো প্রয়োজন নেই। তোমার মনে যে কথা আসবে তুমি সেই কথাই বলবে।

আপনারা দেখেছেন, পৃথিবীর বেশিরভাগ ভাষণই লিখিত ভাষণ। কিন্তু এই একটি ভাষণ, জাতির পিতার হাতে কোনো কাগজ ছিল না। কোনো নোট ছিল না। ভাষণের সবটুকু তিনি তার মন থেকে বলেছিলেন এবং এই ভাষণের মধ্য দিয়ে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে। স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে জাতির পিতার নির্দেশে। অক্ষরে অক্ষরে সব পালন করেছে।

আগামী প্রজন্মকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ এক গৌরবগাঁথা। এ ভাষণ শুধু ভাষণ নয়, এই ভাষণে আমাদের শোষণ-বঞ্চনার ইতিহাস বলেছেন জাতির পিতা। এই ভাষণে তিনি নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এই ভাষণে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কী হবে সেটাও বলে গেছেন তিনি।’

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর এই স্বীকৃতি দেওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।’




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ নভেম্বর ২০১৭/নাসির/মুশফিক/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়