ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

স্ট্রেস যেভাবে ত্বক অধিকতর খারাপ করে

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্ট্রেস যেভাবে ত্বক অধিকতর খারাপ করে

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : যখন আপনি স্ট্রেস বা মানসিক চাপে ভুগবেন, আপনার ত্বকের অবস্থা আরো খারাপ হবে। এর মানে হলো, পূর্ব থেকে বিদ্যমান ত্বকের কোন খারাপ দশা বা ব্রণ অধিকতর খারাপ অবস্থার দিকে ধাবিত হবে।এটি আপনার ত্বকের জন্য দুঃসংবাদ।কিন্তু আপনার ত্বকের ক্ষতিসাধনের জন্য স্ট্রেস ঠিক কি করে?আমরা কিছু বিশেষজ্ঞের মতামত পেয়েছি, যা থেকে আপনি ধারণা করতে পারেন যে আপনার ত্বকের পৃষ্ঠের উপরে ও নীচে কি ঘটে।

* সোরিয়াসিস
সোরিয়াসিস ত্বকের একটি জটিল রোগ, যা স্ট্রেসের কারণে আরো খারাপ হতে পারে এবং আপনি লাল, চুলকানিমূলক ও আঁশযুক্ত ত্বকের অভিজ্ঞতা লাভ করবেন। ইন্টারনাল মেডিসিন, স্বাস্থ্য ও সুস্থতা বিশেষজ্ঞ নেসোচি ওকেকে-ইগবোকোয়ে বলেন, ‘মানসিক চাপপূর্ণ বিষয় ও জীবন-ঘটনা সেসব লোকের সোরিয়াসিস তীব্র করতে পারে যাদের ত্বকের এ দশা দীর্ঘস্থায়ী।’ এটি অন্য চর্মরোগ যেমন- রোসেশা থেকে ভিন্ন। ডা. নেসোচি বলেন, ‘সোরিয়াসিস নিয়ন্ত্রণ করতে স্ট্রেস দমনের কার্যকরী কৌশল খুঁজে বের করা গুরুত্বপূর্ণ।’ শান্ত কার্যক্রমের একটি উদাহরণ হলো মেডিটেশন, যা স্ট্রেসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। ডা. নেসোচি বলেন, ‘গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশনের সঙ্গে মানসিক চাপ হ্রাস ও সোরিয়াসিসের উপসর্গ দ্রুত উপশমের সম্পর্ক আছে।’

* অতিভোজন
এটি ত্বকের দশা নয়। যদি আপনি স্ট্রেসে ভুগেন, আপনার ডায়েটের জন্য আপনি ভুল খাবার নির্বাচন করতে পারেন এবং সারাদিন জাঙ্ক ফুড ভোজন আপনার ত্বকের অবস্থা খারাপ করতে পারে। রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান জুলি আপটন বলেন, ‘গবেষণার মাধ্যমে জানা যায়, স্ট্রেস লোকজনকে নিম্নমান ও উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়ার দিকে চালিত করে। এসব খাবারের সঙ্গে বিভিন্ন প্রাদুর্ভাব ও অন্যান্য চর্ম সমস্যার প্রত্যক্ষ সম্পর্ক আছে।’

* ব্রণ
যদি আপনি ব্রণ প্রবণ হন, স্ট্রেস এটিকে আরো খারাপ করে তুলবে এবং আপনার এসব ব্রণ খোঁচানো উচিত নয়, কারণ এতে ইনফেকশন বা ক্ষত হতে পারে। সেলিব্রেটি ডার্মাটোলজিস্ট অ্যাভা শাম্বানের মতে, ‘ব্রণের ক্ষেত্রে করটিসল অ্যান্ড্রোজেনের মতো কাজ করে এবং আপনার ব্রণের প্রাদুর্ভাব বা তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে, যেমনটা হয়ে থাকে বয়ঃসন্ধিতে থাকা বালকের।’ একে বাধা দেওয়ার জন্য তিনি নিয়মিত এক্সারসাইজ, রাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম এবং বিছানায় যাওয়ার আগে ভালো ফেসিয়াল ক্লিনসিং রুটিন মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া মেডিটেশন বা ইয়োগার মাধ্যমেও মানসিক চাপ কমান।

* একজিমা
যদি আপনার এটি থাকে, আপনি লাল র‍্যাশ ও চুলকানিযুক্ত ত্বক লক্ষ্য করে থাকতে পারেন। ডা. শাম্বান বলেন, ‘সোরিয়াসিস থেকে একজিমা বা অ্যাটপিক ডার্মাইটিস ভিন্ন এবং এটি প্রধানত স্বাভাবিক ইমিউনিটির ব্যাঘাত বা বাধাগ্রস্ততার কারণে হয়ে থাকে, এটি মানসিক চাপের দ্বারা বিরূপভাবে প্রভাবিত হয়। যখন আপনি মানসিক চাপে থাকেন, আপনার অ্যাড্রিনাল গ্ল্যান্ড করটিসল নিঃসরণ করে। এই হরমোল ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।’ ত্বকে জ্বালাতন ও প্রদাহ হবে এবং ত্বকে তরল ক্ষরণ হয় এমন ফোস্কা বা ফুসকুড়ি অথবা একজিমা প্লেক হতে পারে।

* ত্বকের বয়স্কতা
আপনি এটি দূর করতে পারবেন না, কিন্তু এটি ধীর করতে পারেন। কিউরোলজির প্রতিষ্ঠাতা ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডেভিড লর্টশার বলেন, ‘দ্রুত বলিরেখা হওয়ার জন্য স্ট্রেস মুখ্য বিষয় হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।’ তিনি যোগ করেন, ‘কিভাবে স্ট্রেস ত্বকে বয়স্কতার ছাপ ফেলে তার মেকানিজম সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া না গেলেও সাম্প্রতিক গবেষণায় সম্ভাব্য কিছু কারণ উদঘাটিত হয়েছে যা ত্বকের বয়স্কতায় প্রভাব রাখতে পারে। গবেষণায় পাওয়া যায়, স্ট্রেসের সময় নিঃসরণ হওয়া এপিনেফ্রাইন, নোরেপিনেফ্রাইন ও করটিসল ডিএনএ ড্যামেজ করে এবং ডিএনএ সংস্কারে বাধাপ্রদান করে।’

* ফেসিয়াল ড্যানড্রাফ
ডা. লার্টশার বলেন, ‘স্ট্রেস হচ্ছে সেবোরেইক ডার্মাটাইটিসের অবনতিকর বিষয়সমূহের একটি, যদিও সেবোরেইক ডার্মাটাইটিসের কারণ সম্পূর্ণরূপে স্পষ্ট নয়, এটি পিটিরসপোরামের প্রতি প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হতে পারে, পিটিরসপোরাম মেলাসিজিয়া নামেও পরিচিত- এটি এক প্রকার ফাঙ্গাস যা ত্বকের পৃষ্ঠের ওপর স্বাভাবিকভাবে থাকে। প্রায় সকল মানুষের ত্বকের ওপর পিটিরসপোরাম থাকলেও শুধুমাত্র এক-অর্ধাংশ থেকে তিন-চতুর্থাংশ লোকের মধ্যে ড্যানড্রাফ বা সেবোরেইক ডার্মাটাইটিস ডেভেলপ হয়- যেখানে কিছু মানুষের মধ্যে এটি বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ জানুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়