ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ল্যাবে তৈরি মানুষের মাংস খাবেন?

মাহমুদুল হাসান আসিফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ২২ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ল্যাবে তৈরি মানুষের মাংস খাবেন?

প্রতীকী ছবি

মাহমুদুল হাসান আসিফ : বিতর্কিত বিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্স এর মতে, স্বজাতির মাংস ভক্ষণের বিরুদ্ধে যে ট্যাবু রয়েছে তা ভাঙতে সাহায্য করতে পারে গবেষণাগারে তৈরি মানুষের মাংস। তিনি আশাবাদী যে, পৃথিবীর কোনো প্রাণী হত্যা ব্যতীত স্টেম কোষ ব্যবহার করে মানুষের মাংস তৈরি করা সম্ভব। যা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী, এমন কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি করেছে।

ব্রিটিশ এই জীববিজ্ঞানী বলেন, ‘তৈরিকৃত মানুষের মাংস খাওয়া স্বৈরশাসননীতি বনাম আত্মগরিমাপূর্ণ নৈতিকতার জন্য একটি আকর্ষণীয় পরীক্ষা ক্ষেত্র হতে পারে।’

বর্তমান সময়ে আলোচিত কৃত্রিম মাংসের উৎপাদন নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রতিবেদন নিয়ে মন্তব্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, ‘কৃত্রিম মাংসের বার্গার অর্থাৎ সিন্থেটিক বার্গার আমাদের চিন্তার চেয়েও দ্রুত বিক্রয় সম্ভব। এই বার্গার এবং অন্যান্য কৃত্রিম অর্থাৎ পরিচ্ছন্ন মাংস গবেষণাগারে তৈরি করা যায় জীবিত প্রাণীর পেশী টিস্যু থেকে স্টেম কোষ ব্যবহার করে। এই কোষটির চিনি ও খনিজের মিশ্রণে পুনঃউৎপাদনের ক্ষমতা আছে। তাই এই কোষ কংকাল পেশীর মধ্যে বায়োরিঅ্যাক্টর ট্যাংকের ভিতরে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তৈরি করা যেতে পারে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক কৃত্রিম মাংস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জাস্ট এর প্রধান নির্বাহী জোশ টেট্রিকের মতে, ২০১৮ সালের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়ার বাজারে গবেষণাগারে তৈরি সসেস, চিকেট নাগেট এবং ফো গ্রেস বাজারজাত করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞানী ডকিন্সের বক্তব্য, অন্যান্য প্রাণীর কৃত্রিম মাংসের পাশাপাশি গবেষণাগারে মানুষের মাংস উৎপাদন করা হলে তা বহু পুরোনো ট্যাবু ভাঙতে ভূমিকা রাখবে। তবে ডকিন্সের এই ধারণাটির সঙ্গে অনেকেই একমত পোষণ করেননি। অনেকে মন্তব্য করেন, ট্যাবু সাধারণত সেসব জিনিসকে বিবেচনা করা হয় যা নৈতিক এবং নৈতিকতার কারণগুলোর জন্য আমরা ভাঙতে রাজি না।

অবশ্য নৈতিকতার বিষয়টি ছাড়াও মানুষের মাংস খাওয়াতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও রয়েছে। মেডিক্যাল ডেইলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানুষের মাংস কিছু সম্ভাব্য স্বাস্থ্য জটিলতা বা রক্তবাহিত রোগের কারণ হতে পারে। যেমন, হেপাটাইসিস বা ইবোলা। আমাদের দেহ সাধারণত একধরনের ‘প্রিয়নস’ প্রোটিন ধারণ করে, যার কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে সংক্রামক রোগের সৃষ্টি করে। বিশেষ করে যদি এই প্রোটিন মস্তিষ্কের চেইন বিক্রিয়া ঘটায় তবে তা মৃত্যুতে রুপ নিতে পারে। মানুষের মাংস খাওয়া শরীরের জন্য সবসময় মন্দ হবে  না বিশেষ করে যদি তা ‘প্রিয়নস’ মুক্ত হয়। কিন্তু ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের মতো ‘প্রিয়নস’ তাপ দ্বারা ধ্বংস করা যায় না। তাই উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে।

তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ মার্চ ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়