ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

বড় জয়ে সমতায় সিরিজ শেষ বাংলাদেশের

আবু হোসেন পরাগ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৩৪, ১৫ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বড় জয়ে সমতায় সিরিজ শেষ বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক : মিরপুর টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ২১৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করল মাহমুদউল্লাহর দল।

বাংলাদেশের স্বস্তির জয়

বাজে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনীতে সিলেটে প্রথম টেস্টে জিম্বাবুয়ের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল বাংলাদেশ। ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হার এড়াতে মিরপুরে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে। ব্যাটসম্যান ও বোলারদের দারুণ পারফরম্যান্সে স্বস্তির জয়ে সমতায় সিরিজ শেষ করল স্বাগতিকরা।

প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর মুমিনুল হকের সেঞ্চুরি ও মুশফিকুর রহিমের ডাবল সেঞ্চুরিতে পাঁচশ ছাড়ানো সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। পরে তাইজুল ইসলামের টানা তিন ইনিংসে পাঁচ উইকেট কীর্তি প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে এনে দেয় ২১৮ রানের লিড।

জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন না করিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে ২৫ রানে ৪ উইকেট হারালেও আট বছর পর পাওয়া মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরিতে শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়েকে বড় লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। ব্রেন্ডন টেলরের জোড়া সেঞ্চুরির পরও মেহেদী হাসান মিরাজের পাঁচ উইকেট শিকারে বাংলাদেশ পেল বড় জয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫২২/৭ ডিক্লে.

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ৩০৪

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২২৪/৬ ডিক্লে.

জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৪৩) ২২৪

ফল: বাংলাদেশ ২১৮ রানে জয়ী

সিরিজ: দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতা

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম

ম্যান অব দ্য সিরিজ: তাইজুল ইসলাম।

মিরাজের পাঁচ উইকেট

কাইল জার্ভিসকে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট করে জিম্বাবুয়ের ইনিংস গুটিয়ে দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি পূর্ণ করেছেন পাঁচ উইকেট।

৪৪৩ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশনে জিম্বাবুয়ে থেমেছে ২২৪ রানে। চোট পাওয়া টেন্ডাই চাতারা প্রথম ইনিংসের পর শেষ ইনিংসেও ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি। ব্রেন্ডন টেলর অপরাজিত ছিলেন ১০৬ রানে।

শেষ ইনিংসে ৩৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। তাইজুল ইসলাম ৯৩ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। মুস্তাফিজুর রহমান নিয়েছেন একটি উইকেট।

জোড়া সেঞ্চুরিতে টেলরের রেকর্ড

প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি করেছেন ব্রেন্ডন টেলর। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ৯৯ থেকে তাইজুল ইসলামের বলে এক রান নিয়ে ১৬৪ বলে পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি।

এ নিয়ে দ্বিতীয়বার একই টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করলেন টেলর। জিম্বাবুয়ের আর কারও একের অধিক জোড়া সেঞ্চুরি নেই। সব মিলিয়ে ১৪তম ক্রিকেটার হিসেবে একের অধিক জোড়া সেঞ্চুরি করলেন টেলর। তার প্রথমটিও ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষেই।

মিরাজের তৃতীয় শিকার তিরিপানো

ডোনাল্ড তিরিপানোকে টিকতেই দেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। তাকে নিজের তৃতীয় শিকার বানিয়ে ফিরিয়েছেন সাজঘরে। অফ স্পিনারের বল তিরিপানোর গ্লাভস ছুঁয়ে যান শর্ট লেগে। ডান দিকে হাত বাড়িয়ে দারুণ এক ক্যাচ নেন লিটন দাস।

তিরিপানো ৯ বলে শূন্য রান করে ফেরার সময় জিম্বাবুয়ের স্কোর ৭ উইকেটে ২০১ রান। ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গী ব্রেন্ডন মাভুতা।

রান আউট চাকাভা

মেহেদী হাসান মিরাজের বলে রান আউট হয়ে ফিরেছেন রেগিস চাকাভা। অফ স্পিনারের বল মিড উইকেটে ঠেলে এক রানের জন্য ছুটেছিলেন ব্রেন্ডন টেলর। অন্যপাশ থেকে ছুটে যান চাকাভাও। মুমিনুল হকের থ্রোয়ে বল ধরে স্টাম্প ভেঙে দেন মুশফিকুর রহিম। তখনো বেশ দূরেই ছিলেন চাকাভা।

তার বিদায়ের সময় জিম্বাবুয়ের স্কোর ৬ উইকেটে ১৯৯ রান। ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ডোনাল্ড তিরিপানো।

প্রতিরোধ ভাঙলেন মিরাজ

প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও বেশ জমে গিয়েছিল ব্রেন্ডন টেলর ও পিটার মুরের জুটি। মুরকে ফিরিয়ে ৬৬ রানের এ জুটি ভেঙেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

অফ স্পিনারকে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন মুর। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ যায় শর্ট লেগে। বল ইমরুল কায়েসের হাতে পড়ে লাগে গায়ে, এরপর আবার হাতে জমান তিনি।

৭৯ বলে ১৩ রান করে ফেরেন মুর। ৭২ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৫ উইকেটে ১৮৬ রান। টেলর ৭৬ ও রেগিস চাকাভা শূন্য রানে অপরাজিত আছেন।

টেলর-মুর জুটির পঞ্চাশ

পঞ্চম উইকেটে ফিফটি রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছেন ব্রেন্ডন টেলর ও পিটার মুর। ১২৫ বলে ছুঁয়েছে জুটির পঞ্চাশ। যেখানে টেলরের অবদান ৪০, মুরের ১১। ১২০ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর জুটি বাঁধেন তারা।

৭০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৪ উইকেটে ১৭৪ রান। টেলর ৬৪ ও মুর ১৩ রানে অপরাজিত আছেন।

প্রথম সেশনে ২ উইকেট

শেষ দিনের প্রথম সেশনে জিম্বাবুয়ের ২ উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমান শন উইলিয়ামসকে ও তাইজুল ইসলাম সিকান্দার রাজাকে ফিরিয়েছেন। এই সেশনে ৩১ ওভারে জিম্বাবুয়ে যোগ করেছে ৮৫ রান।

লাঞ্চ বিরতির সময় ৬১ ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৪ উইকেটে ১৬১ রান। ব্রেন্ডন টেলর ৫৪ ও পিটার মুর ১০ রানে অপরাজিত আছেন। পঞ্চম উইকেটে ৪১ রানের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন আছেন এই দুজন।

জয়ের জন্য এখনো ২৮২ রান করতে হবে জিম্বাবুয়েকে। ম্যাচ বাঁচাতে কাটিয়ে দিতে হবে দুই সেশন। বাংলাদেশের মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে জিম্বাবুয়ে কখনো ৮৫ ওভারের বেশি ব্যাটিং করতে পারেনি। ম্যাচ জিতে সিরিজ সমতায় শেষ করতে বাংলাদেশের চাই ৬ উইকেট।

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে টেলরের ফিফটি

প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ব্রেন্ডন টেলর দ্বিতীয় ইনিংসে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন। ৯৪ বলে ফিফটি করতে ৪টি চার হাঁকান ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ম্যাচ বাঁচাতে তার দিকেই তাকিয়ে আছে জিম্বাবুয়ে।

রাজাকে টিকতে দিলেন না তাইজুল

সিকান্দার রাজাকে বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে দেননি তাইজুল ইসলাম। তাকে ফিরিয়ে ২১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি ভেঙেছেন তিনি।

বাঁহাতি স্পিনারের লেগ স্টাম্পের বল প্রথমে ডিফেন্ড করতে চেয়ে পরে শট খেলেন রাজা। কিন্তু ঠিকমতো খেলতে পারেননি। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নেন তাইজুল। ইনিংসে এটি তার দ্বিতীয় ও ম্যাচে সপ্তম উইকেট।

রাজা ৩৩ বলে ১২ রান করে ফেরার সময় জিম্বাবুয়ের স্কোর ৪৮ ওভারে ৪ উইকেটে ১২০ রান। ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন পিটার মুর।

উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে মুস্তাফিজের প্রথম

শেষ দিনে জিম্বাবুয়ে শিবিরে প্রথম আঘাতটা হেনেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। শন উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে ২৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি ভেঙেছেন তিনি।

বাঁহাতি পেসারের গুড লেংথ বল ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন উইলিয়ামস। কিন্তু ব্যাট বলের লাইনে নিতে পারেননি। বল আঘাত করে অফ স্টাম্পে। ম্যাচে মুস্তাফিজের এটি প্রথম উইকেট।

উইলিয়ামস ৩৩ বলে ১৩ রান করে ফেরার সময় জিম্বাবুয়ের স্কোর ৩ উইকেটে ৯৯ রান। ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সিকান্দার রাজা। জয়ের জন্য বাংলাদেশের চাই আর ৭ উইকেট।

বাংলাদেশের চাই ৮ উইকেট

সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৪৪৩ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় চতুর্থ দিন শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৭৬ রান। জয়ের জন্য শেষ দিনে ৩৬৭ রান করতে হবে জিম্বাবুয়েকে, বাংলাদেশের চাই ৮ উইকেট।

চোট পাওয়া টেন্ডাই চাতারা প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামেননি। দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনি ব্যাটিংয়ে না নামলে বাংলাদেশের ৭ উইকেট নিলেই জয় নিশ্চিত হবে।

ব্রেন্ডন টেলর ৪ ও শন উইলিয়ামস ২ রান নিয়ে শেষ দিনে ব্যাটিংয়ে নেমেছেন। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের খেলা শুরু হয়েছে সকাল সাড়ে নয়টায়।

চতুর্থ দিন শেষে

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫২২/৭ ডিক্লে.

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ৩০৪

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২২৪/৬ ডিক্লে.

জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৪৩) ৭৬/২।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ নভেম্বর ২০১৮/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়